top of page
Search

৪০ দিনের মিসন : প্রভু যীশুর পুনরুত্থান থেকে স্বর্গারোহণের সময়ের গুরুত্বতা

Updated: Feb 29, 2020

আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন খ্রীষ্টের পুনরুত্থানেই পবিত্র বাইবেলে সব শেষ হয়ে যায় না। খ্রীষ্টের পুনরুত্থান থেকে স্বর্গারোহণের ৪০ দিন এই পৃথিবীতে খ্রীষ্টের অত্যন্ত মহিমান্বিত সময় । এই দিন গুলোতে যীশু কমপক্ষে বারো বার শিষ্যদের দেখা দিয়েছেন যা পবিত্র নতুন নিয়মের লেখকগণ লিপিবদ্ধ করেছেন ।

এই সময়ে যীশু ঈশ্বরের রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের শিক্ষা দিয়েছেন,


"আপন দুঃখভোগের পরে তিনি অনেক প্রমাণ দ্বারা তাঁহাদের নিকটে আপনাকে জীবিত দেখাইলেন, ফলতঃ চল্লিশ দিন যাবৎ তাঁহাদিগকে দর্শন দিলেন, এবং ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় নানা কথা বলিলেন।"

(#প্রেরিত ১:৩)।


খ্রীষ্ট সম্পর্কে সব ঘটনা পবিত্র বাইবেলে লিখিত হয় নাই । যতটুকু দেওয়া হয়েছে তা যেন বিশ্বাস করে অনন্তজীবন পায়। সেই কারণে প্রেরিত যোহন স্মরণ করিয়ে দেন ,


"যীশু আরও অনেক কর্ম করিয়াছিলেন; সেই সকল যদি এক এক করিয়া লেখা যায়, তবে আমার বোধ হয়, লিখিতে লিখিতে এত গ্রন্থ হইয়া উঠিত যে, জগতেও তাহা ধরিত না।"

(#যোহন ২১:২৫)


যীশুর পুনরুত্থানের পরবর্তী ঘটনাগুলোর তাৎপর্য আমাদের জানা ও ধ্যান করার বিষয় আছে ।


কেন ৪০ দিন ?


পবিত্র বাইবেলে ৪০ সংখ্যাটি ১৪৬ বার প্রকাশিত হয়েছে । এই সংখ্যার মধ্য দিয়ে অনেক মহিমা ও গুরুত্বতা প্রকাশিত হয়েছে:


যেমন:


  • নোহের সময় ৪০ দিন-রাত বৃষ্টি

  • মোশি ৪০ বছর মরুভূমিতে ও ৪০ দিন পর্বতে ছিলেন

  • যোনা ভাববাদী ৪০দিন নীনবী অধিবাসীদের মন পরিবর্তনের সময় দেন

  • যীশুর ক্ষেত্রে ৪০ দিন উপবাস ও শয়তান দ্বারা প্রলোভিত হয়েছিলেন , পুনরুত্থানের পর ৪০দিন যীশু পৃথিবীতে ছিলেন ।


৪০ দিনের মাহাত্ম্য সম্পর্কে St. Thomas Aquinas দুটি প্রাথমিক কারণের কথা বলেছেন: পুনরুত্থানের সত্যতা ও পুনরুত্থানের মহিমা প্রকাশ


  • পুনরুত্থানের সত্যতা প্রমাণ প্রকাশ করার জন্য প্রভু যীশু অনেকবার শিষ্যদের দেখা দিয়েছেন, কথা বলেছেন, শিষ্যদের সাথে খাওয়া দাওয়া করেছেন এবং তাঁকে স্পর্শ করতে দিয়েছেন ।


  • পুনরুত্থানের মহিমা প্রকাশ করতে ক্রমাগত ভাবে যীশু তাঁর শিষ্যদের সাথে থাকেনি কারণ তারা যেন চিন্তা বা মনে না করেন যীশু তাদের সাথে আগের মতো আছেন। যীশুর পুনরুত্থানের প্রথমে বেশ কয়েকবার দেখা দিয়েছেন পুনরুত্থানের প্রমাণ দেওয়ার জন্যে । যখন শিষ্যরা তা মেনে নিয়েছেন তখন যীশুর বার বার দর্শন দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না ।(সূত্র : Summa Theologiae, Part III, Q. 55, Art. 3).


দুটো কারণ ছাড়াও আমরা দেখতে পাই #লূক ২৪: ৪৪-৪৮ বেশ কিছু মাহাত্ম্য প্রকাশ করেছেন ।


"... তখন তিনি তাঁহাদের বুদ্ধিদ্বার খুলিয়া দিলেন, যেন তাঁহারা শাস্ত্র বুঝিতে পারেন;আর তিনি তাঁহাদিগকে কহিলেন, এইরূপ লিখিত আছে যে, খ্রীষ্ট দুঃখভোগ করিবেন, এবং তৃতীয় দিনে মৃতগণের মধ্য হইতে উঠিবেন; ..."

পুনরুত্থানের পরে যীশু শিষ্যদের বুদ্ধির দ্বার উন্মুক্ত করেছেন

যীশুর সাথে থাকা সত্বেও শিষ্যরা যীশুর শিক্ষা বুঝতে পারে নাই । উদাহরণ স্বরূপ,

যীশু যখন প্রথম যিরূশালেম মন্দির পরিষ্কার করেন তখন যিহূদীরা চিহ্ন চায় , তখন যীশু

বলেছেন,


"যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা এই মন্দির ভাঙ্গিয়া ফেল, আমি তিন দিনের মধ্যে ইহা উঠাইব।তখন যিহূদীরা কহিল, এই মন্দির নির্মাণ করিতে ছেচল্লিশ বৎসর লাগিয়াছে; তুমি কি তিন দিনের মধ্যে ইহা উঠাইবে? কিন্তু তিনি আপন দেহরূপ মন্দিরের বিষয় বলিতেছিলেন।


অতএব যখন তিনি মৃতগণের মধ্যে হইতে উঠিলেন, তখন তাঁহার শিষ্যদের মনে পড়িল যে, তিনি এই কথা বলিয়াছিলেন; আর তাঁহারা শাস্ত্রে এবং যীশুর কথিত বাক্যে বিশ্বাস করিলেন।"

(#যোহন ২: ১৯-২২ )


প্রকৃত পক্ষে যীশু বুদ্ধি উন্মুক্ত না করলে খ্রীষ্টের মৃত্যু ও পুনরুত্থানের তাৎপর্য বুঝা সম্ভব না।


শিষ্যদের পবিত্র আত্মার জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে

"আর দেখ, আমার পিতা যাহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, তাহা আমি তোমাদের নিকটে প্রেরণ করিতেছি; কিন্তু যে পর্যন্ত ঊর্ধ্ব হইতে শক্তি পরিহিত না হও, সেই পর্যন্ত তোমরা এই নগরে অবস্থিতি কর।" (#লূক ২৪: ৪৪-৪৮)


তা ছাড়া প্রেরিত যোহন আমাদের কাছে বলেছেন যীশুর পুনরুত্থানের পর অনেক শিষ্যরা পুনরায় পূর্বের পেশায় গিয়েছিলেন ও ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু খ্রীষ্ট তাদের পুনরায় ফিরিয়ে এনে মন্ডলীর মেষদের পরিচালনার ও লালন পালনের দায়িত্ব দিয়েছেন । (#যোহন ২১ অধ্যায়)


পূর্বের পেশা ও পাপ স্বভাব অনেক সময়েই পরিচর্যাকারীদের ও বিশ্বাসীদের পিছনে ডাকে । তাই প্রভুর অনুগ্রহ প্রতিটি মুহূর্তে প্রয়োজন যেন সামনে যেতে পারি। যীশুর শিষ্যরা আর কোনদিন পিছনে ফিরে তাকাইনি। তারা মৃত্যু পর্যন্ত সুসমাচার প্রচারে বিশ্বস্ত ছিলেন। আমাদেরকেও একইভাবে চলা উচিত ।


৪০ দিনের পুনরুত্থান পরবর্তী খ্রীষ্টের মিসন অত্যন্ত মহিমান্বিত অধ্যায় যা দিয়েছে শিষ্যদের খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের প্রমানের নিশ্চয়তা ও মহিমা। তাছাড়া আমরা দেখেছি, খ্রীষ্ট শিষ্যদের বুদ্ধির দ্বার উন্মুক্ত করেছেন যেন পবিত্র শাস্র বুঝতে পারেন , পবিত্র আত্মার শক্তি তে যেন সুসমাচার প্রচারের কাজ করতে পারেন যেন পাপী মানুষ পরিত্রাণ পেয়ে খ্রীষ্টের সাথে অনন্তকাল থাকতে পারেন।

আমেন।


Reference:


https://www1.cbn.com/churchandministry/what-did-jesus-do-those-40-days

https://ebible.com/questions/7554-how-long-did-jesus-stay-on-earth-after-the-resurection-and-why

http://blog.adw.org/2017/04/didnt-christ-stay-disciples-continually-resurrection-ascension/


192 views0 comments
bottom of page