top of page
Search

যীশু কে? কার উপর আপনি বিশ্বাস করবেন?

Updated: Apr 2, 2021


বর্তমানে ধর্মীয় বহুত্ববাদ যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, আমরা এখন নানা ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হল, এবং তা বার বার জিজ্ঞাসা করা হবে। এজন্য ধর্মীয় প্রশ্ন আলোচনার করার জন্য আমাদের মন খোলা রাখতে হবে। আমি বেশ কয়েকটি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি - প্রশ্নগুলো স্বর্গ সমন্ধে এই রকম হতবুদ্ধিকর - মৃত্যুর পরে কেমন হবে, এবং কাকে এবং কেমন করে একজনকে স্বর্গে নেওয়া হবে? আরও মূখ্য প্রশ্ন করে এই সব প্রশ্নের তারাতা‌ড়ি সমাধান করা হয় :


যীশু কে? 


আমি, বাইবেলের আলোকে এটি মনে করি যে, স্বর্গ সম্পর্কে মূল প্রশ্নই হল যীশুর পরিচিত।

যদি নাসরতের যীশু, একজন কাঠমিস্ত্রির ছেলে পূর্ণ ঈশ্বর হয় থাকেন তবে এই পৃথিবীর সমস্ত ধর্মীয় ধারণা, দর্শন, সমস্ত যুক্তির অভিজ্ঞতা, সাধারণ ভাবেই বাদ পড়ে যায়।


আমার কাছে খুব কৌতুহলী মনে হয় যেখানে যীশুর সততা ও নৈতিক চরিত্র সাধারণ ভাবে গৃহীত - যেখানে মোহাম্মাদ ও ইসলাম তাঁকে একজন নবী হিসাবে আখ্যায়িত করেন। অন্যকেউ সাহস পায় না নিজেকে ঈসার সংগে তুলনা করতে, - এবং এমন কি বহুত্ববাদীরাও তাঁর অলৌকিক কাজগুলো স্বীকার করে। যীশু নিজের সমন্ধে যে দাবি করে তা হয় তো খুব কম লোকই ধারণা করতে পারে।


অবশ্য যে কেউ যে কোন কিছু দাবি করতে পারে তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু আমরা যখন যীশুর দাবি সম্পর্কে কথা বলি, এটি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, এই সব দাবি তাঁর সারা জীবনকে যুক্ত করে - তাঁর চরিত্র, তাঁর মহান অলৌকিক কাজশুলো, তাঁর নৈতিক শিক্ষা, এই সব কিছু মিলেই তাঁর সম্পূর্ণ ব্যক্তিত্ব - যীশু খ্রীস্ট।


কিন্তু এখন আমি স্বচক্ষে দেখছি যে,  অনেক খ্রীস্টান যীশু খ্রীস্টের সম্পূর্ণ প্রভাব ও নিজস্ব পরিচিতিকে শক্ত করে ধরে না রেখে তাঁর নৈতিক শিক্ষাগুলো নিয়ে, তাঁর অলৌকিক কাজ ও সাধারণ বৈশিষ্ট্য নিয়ে কথা বলে।


এটি যীশুর নিজস্ব পরিচিত তিনি কে? যীশু বাইবেলে তা পরিস্কার বলেছেন, যখন আমরা তা বুঝতে পারি তখন আমরা স্বর্গ ও নরকের, বাইবেলের ক্ষমতা, পরিত্রাণ ও অন্যসব প্রশ্নের সমাধান পাই।


আজ, আসুন এই সন্ধ্যায় বাইবেল খুলে যোহন ১৪ অধ্যায় পড়ি, আমাদের কান ও চোখ দিয়ে এই পবিত্র পাতায় কি লেখা আছে তা দেখি, সত্যিকারের যীশুকে আমরা দেখার চেষ্টা করি -


"তোমাদের হৃদয় উদ্বিগ্ন না হউক; ঈশ্বরে বিশ্বাস কর, আমাতেও বিশ্বাস কর।" #যোহন ১৪:১


ক. এক রাতের বিরক্তিকর বিবৃ‌তি


এই ১৪ অধ্যায় হল যীশু খ্রীস্টের উপরের ঘরে বক্তব্যের অংশ বিশেষ, যে রাতে যীশুকে শক্রুদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর পরের দিনই যীশুকে ক্রুশে দেওয়া হয়, এর তিন দিন পরে তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠেন। সুতরাং এই রাতই ছিল যীশুর শেষ রাত তাঁর শিষ্যদের সংগে থাকার ও তাঁর মৃত্যু ও জীবিত হওয়ার আগে।


এখন এই রাতে যীশুর শিষ্যরা সমস্যার মধ্যে পড়েছিলেন এবং যীশুর দ্বারাই তারা এই সমস্যার মধ্যে পড়ে ছিলেন, তিনটি কারণে:


১. প্রথম সমস্যায় পড়েছিলেন যখন যীশু তাঁর শিষ্যদের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন - কে এই প্রভু যিনি একজন সাধারণ চাকরের কাজ করে নিজের সম্পর্কে দাবি করেন?


২. দ্বিতীয় সমস্যা ছিল যখন যীশু ঘোষণা করেন যে, তাদের মধ্যে একজন বিশ্বাসঘাতক রয়েছে। এতদিন শিষ্যদের মধ্যে ভ্রাত্রিত্ববোধ সম্পর্ক ছিল আজ তা ভেংগে গেল। প্রশ্ন প্রভুর সংগে কে বিশ্বাসঘাতকতা করবে? পরে আমরা জানতে পারি সে ছিল এহুদা।


৩. তৃতীয় সমস্যা ছিল, যখন যীশু শিষ্যদের  বললেন যে,  তিনি তাদের ছেরে চলে যাবেন, এখন যীশু যেখানে যাচ্ছেন,  শিষ্যরা তাঁকে অনুসরণ করতে পারবে না। প্রশ্ন যীশু কোথায় যাচ্ছেন? তিনি কি আমাদের ত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন?


এরকম তিনটি সমস্যা দেখা দেবার পরে যীশু তাদের সান্তনা দিলেন ১ পদে -

" তোমাদের মন যেন আর অস্থির না হয়। ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস কর ...........।"


এটি একটি ভাল কথা, একটি শক্তিশালী কথা যা তাদের সমস্যায় তাদের শান্তনা দান করে। আপনারা হয় তো চিন্তা করতে পারেন এরকম কথা কোন পালকের মুখে শোনা গেল কিন্তু প্রকৃত পক্ষে যীশু সে রকম কথা বলেন নি; যীশু বলেন নি যে,  তোমাদের মন যেন আর অস্থির না হয়। ঈশ্বরের উপরে বিশ্বাস কর তিনি কি শুধু এই কথা বলেছেন?  না, তিনি শুধু এই কথা বলেন নি। তিনি বেশ সমস্যা যুক্ত কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন "তোমাদের মন যেন আর অস্থির না হয়। ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস কর, আমার উপরেও বিশ্বাস কর।"


আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন?  আমাদের বেশিরভাগ লোকই সাধারণ ভাবে এই শেষ অংশটি নিয়েই দৌড়ায় এবং এর উপড় উছোট খায়। প্রকৃত পক্ষে যীশু যতকথা বলেছেন তার মধ্যে এই অংশটুকু সমস্যাকুল। এটি একটি সব চেয়ে বড় হুকুম।


খ . কার উপর বিশ্বাস করবো? 


" ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস কর, আমার উপরেও বিশ্বাস কর "। যীশু এই কথা বলার মধ্য দিয়ে তাঁর শিষ্যদের কি নিশ্চিত করে বলতে চেয়েছেন? এই বিবৃতি দ্বারা যীশু সাধারণভাবে কি বুঝাতে চেয়েছেন?  আমার উপরেও বিশ্বাস কর। 


আপনি কি খ্রীস্টান হিসাবে অনুভব করতে পারছেন যীশুর এই কথার ওজন কত ও তিনি নিজের সম্পর্কে কি দাবি করছেন?


" ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস কর " প্রথম এই অংশটি সত্যিকারের ঈশ্বরের উপাসনার জন্য অগ্রগণ্য প্রতিউত্তর। প্রথম হুকুম ও সর্ব শ্রেষ্ঠ হুকুমের প্রতি বাধ্যতা প্রকাশ করতে এই কথা মানুষের জন্য প্রযোজ্য যেখা‌নে বলা হয়েছে - প্রভু ছাড়া অন্য কোন ঈশ্বর নেই এবং সব কিছুর চেয়ে তাঁকে প্রেম করবে।


আমি একে উপাসনা বলি - কারণ বাইবেলে সব জায়গায় এই সাবধান বাণী করা হয়েছে কোন মানুষের উপর বা কোন রাজার উপর বিশ্বাস না করার জন্য -

 

"তোমরা নির্ভর করিও না রাজন্যগণে, বা মনুষ্য-সন্তানে, যাহার নিকটে ত্রাণ নাই।" #গীতসংহিতা ১৪৬:৩


বাইবেলের মধ্যে ঈশ্বরের উপর নির্ভর করা হল সব চেয়ে বড় ইবাদত। আমাদের বলা হয়েছে মাত্র ঈশ্বরের উপর নির্ভর করতে। তবুও যীশু বলেছেন, "আমার উপরেও বিশ্বাস কর "


মুসা কখনও তা বলেন নি, মোহাম্মাদ যিনি শেষ নবী হিসাবে নিজেকে ঘোষণা করেছেন, তিনিও নিজের সম্পর্কে তা কখনও বলেন নি।


কিন্তু যীশু তা বলেছেন। তিনি বলেছেন তিনি ঈশ্বর। হ্যা তিনি একাই তা বলেছেন। অন্য কেউ তা কখনও দাবি করতে পারেন নি। যীশু আমাদের "আমার উপরও বিশ্বাস কর" বলার মধ্য দিয়ে তিনি দাবি করেছেন তাঁর ঈশ্বরত্বের সম্পূর্ণ অধিকার, ক্ষমতা। তিনি ঈশ্বরের সংগে নিজেকে সমান করেছেন। তাঁর কথা হয় তো বড়  কুফরী নয় তো বা স্বয়ং ঈশ্বরের কথা।


গ. যীশু ও ঈশ্বর তাঁর পিতা:


কিন্তু যীশু এর চেয়েও বেশি বুঝাতে চেয়েছেন, তাই নয় কি? এই একটি বিবৃ‌তির মধ্য দিয়ে যীশু ঈশ্বরের প্রকৃতির বিষয়ে কিছু প্রকাশ করেছেন। এই জন্য তিনি ঈশ্বরকে "আমার পিতা" ডেকেছেন।

যীশু যেমন বলেছেন যদি তিনি ও তাঁর পিতা এক হন যাকে তিনি তাঁর "পিতা" বলেছেন তাঁরা দুজন নন। এক ঈশ্বর কিন্তু দুজন ভিন্ন ব্যক্তিত্ব।


এখানে যে কথা বলা হয়েছে তা বিরল স্বীকারোক্তি নয়। তাঁর এই পৃথিবীর সমস্ত জীবন ধরেই, ঈশ্বরের প্রতি আপনার মনোভাব ও তাঁর প্রতি আপনার মনোভাবকে তিনি সামান্তুাল করেছেন।


১। যীশুকে জানাই হল ঈশ্বর কে জানা - #যোহন ৮:১৯।

২। যীশুকে দেখাই হল ঈশ্বরকে দেখা - #যোহন ১৪:৯।

৩। যীশুকে ঘ্রিণা করাই হল ঈশ্বরকে ঘ্রিণা করা - #যোহন ১৫: ২৩।

৪। যীশুকে সম্মান করাই হল ঈশ্বরকে সম্মান করা - #যোহন ৫:২৩।


এই পদগুলোতেও যীশু একই কথা বলেছেন।


কার উপর আপনি বিশ্বাস করবেন? 


পৃথিবীর সমস্ত দর্শন ও ধর্মের মূল হচ্ছে বিশ্বাস। আপনার প্রতিটি কাজ ও চিন্তা আপনার বিশ্বাসের বিষয়।


তাই যীশুর নিজের কথা এখানে আজ আপনাকে চ্যালেঞ্জ দেয় যীশুর বিষয় চিন্তা করতে: কার উপর আমি বিশ্বাস করছি?  আমার বিশ্বাসের বিষয়বস্তু কি?


কোন কোন সময় আমাদের চিন্তাকে বাধাগ্রস্ত করে এই কথা ভেবে যে, আমাদের অনন্ত জীবন বিষয়ে আমরা কি বলি,বা স্বীকার করি তার উপর নির্ভর করে না কিন্তু কার উপর আমরা সত্যিকার ভাবে বিশ্বাস করি তার উপরই আমাদের অনন্ত জীবন নির্ভর করে। স্বর্গ ও নরক এই একটি বিষয় নিয়েই পৃথক করা হয়; তারাই স্বর্গে থাকবে যারা খ্রীস্টের ঈশ্বরত্বের উপর বিশ্বাস করবে। যারা নিজেদের উপর বিশ্বাস করবে তারা নরকে যাবে।

197 views0 comments
bottom of page