top of page
Search

যীশু কে? "আমিই তিনি"


এই পৃথিবীর খ্রিস্টানরা এই দাবি নিয়ে আসেনি যে, যীশুই পথ। তারা মাত্র এটি ঘোষণা করছে যে, যা যীশু খ্রিস্ট ঘোষণা করেছেন, আমরা সেটিই প্রচার করছি। যদি আজ আপনার এই খ্রিস্টান বিশ্বাসের এই এক্সক্লুসিভ দাবি নিয়ে আপনার সমস্যা দেখা দেয় তবে আমি বলছি যীশুর শিষ্যদের সংগে যে আপনার সমস্যা আছে তা নয় কিন্তু আপনার সমস্যা স্বয়ং প্রভু যীশুর সংগে আছে।


কিন্তু এই ধরনের সমস্যা জনিত ইস্যুতে প্রভু যীশু নিরব নয়। কেননা তিনি খুব পরিস্কারভাবেই আমাদের বলেছেন তিনি কে? এই বিষয়টি ভালভাবে বুঝতে হলে, যীশুর মধ্যে যে ঈশ্বরত্ব আছে এই দাবিটির মূলে যে সত্য "আমিই " আছে সেই বিষয়টি বুঝতে হবে, ৬ পদ। দ্বিতীয়ত, শুধুমাত্র তখনই আমরা তাঁর দাবির সত্যিকারের তাৎপর্য সমর্থন করতে পারবো, তাঁর ত্রিমাত্রিক এই দাবি, কেন তিনিই পথ, সত্য ও জীবন।


প্রিয় পাঠক তাই আসুন, আরও ভাল করে আমরা যীশুর "আমিই" বক্তব্যোর দিকে দৃষ্টিপাত করি। যীশুর আমিই বক্তব্যে "আমিই" র সংগে বিদেয় পদ রয়েছে।


যোহন সুসমাচারে চোখে পড়ার মত বিষয়টি হল যীশুর "আমিই" বক্তব্য।  গ্রীক ভাষায় "আমিই" অর্থ "ইগো ইমি"। সেখানে দুই রকম আমি বক্তব্য রয়েছে একটি বিদেয় পদ সহকারে অন্যটি বিদেয় পদ ছাড়া।


আপনারা জানেন যে, বিদেয় পদ হল একটি বাক্য বা বাক্যগুচ্ছ যা বাক্যের বিষয় বস্তুর বিষয়ে নিশ্ছিত করে।


ক. "আমিই" উক্তি যেখানে বিদেয় ছিল


উদাহরণ স্বরুপঃ " বালকটি একটি সুখি বালক।" সুখি বালক বাক্যটি বালকটির বিষয়ে কিছু বিধেয় বা নিশ্চিত করে - এই ক্ষেত্রে সে সুখি।


যোহন সুসমাচারে, আমরা দেখতে পাই যীশুর সাতটি দাবি "আমিই" উক্তি বিদেয় সহকারে।


প্রিয় পাঠক আসুন সংক্ষেপে তা দেখি - যীশু দাবি করেছেন:


১. স্বর্গ থেকে যে রুটি নেমে এসেছে আমিই সেই রুটি - #যোহন ৬:৩৫,৪১ পদ। ২. আমিই পৃথিবীর আলো - #যোহন ৮:১৩ পদ। ৩. মেষগুলোর জন্য আমিই দরজা - #যোহন ১০:৭,৯ পদ। ৪. আমিই উত্তম মেষপালক - #যোহন ১০:১১,১৪ পদ। ৫. আমিই পুনুরুন্থান ও জীবন - #যোহন ১১:২৫ পদ। ৬. আমিই পথ সত্য ও জীবন - #যোহন ১৪:৬ পদ। ৭. আমিই আংগুর গাছ - #যোহন ১৫:১,৫ পদ।

রুটি-  আলো - দরজা - পালক -  পুনুরুন্থান-  পথ -  সত্য - জীবন -  এবং আংগুর গাছ -


এই সব প্রতিচ্ছবি সবই পুরাতন নিয়ম এর ভবিষ্যৎদ্বাণী ও প্রতিক থেকে নেওয়া হয়েছে। এই সব পরিত্রাণের প্রতিজ্ঞার প্রতীক যা ঈশ্বর একদিন পাঠাবেন, যিনি মসীহ আসবেন তাঁর মধ্যে দিয়ে সব পূর্ণতা পাবেন।


যেহেতু, প্রভু যীশু এই সাতটি উক্তির মধ্যে দিয়ে আমাদের বলেন,"আমিই" তখন তিনি এটি ঘোষণা করছেন যে, তিনিই সেই ভবিষ্যৎদ্বাণীর প্রতীক যা ভবিষ্যৎদ্বাণী করা হয়েছিল আর তা পূর্ণতা লাভ করেছে, তার পরিসমাপ্তি হয়েছে ও তা প্রভু যীশুর মধ্যে দিয়ে ধারণ করেছে।


আর একটি সত্য বিষয় তা হলো এই পৃথিবীর সকল ধর্মীয় চিন্তা ও দার্শনিক থেকে যীশু নিজেকে পৃথক করে। কেননা যীশু ছাড়া আর কেই নিজেকে এই দাবির সাথে তুলনা করে, তুলনা করে কোন কথাও বলে নি।


মোহাম্মদ নয়, বৌদ্ধ নয়, কনফিসিয়াস নয়, পিলাত নয়, কোন মানবতাবাদী নয়, কোন বিজ্ঞানী নয়, কোন দার্শনিক নয়, কোন নবী নয়, কেউ তাদের নিজেদের জন্য এই রকম দাবি করতে পারে নি। কিন্তু প্রভু যীশু এই দাবি করেছেন।


খ. "আমিই" উক্তি যেখানে বিদেয় ছিল না


যদিও আমি এই কথা বলছি তবুও এর অর্থ এই নয় যে, সব বলেছি। কিন্তু আরও "আমিই" আছে যেখানে কোন বিদেয় নেই। ঐ সব স্থানে যীশু সম্পূর্ণরূপে ঘোষণা করেছেন:  আমিই বা আমিই তিনি।


যীশু খ্রীস্ট কতৃক ব্যবহারিত "আমিই" যার মধ্যে সবই বিদেয় পদ রয়েছে তার বিষয় নিয়ে এই মাত্র আমরা আলোচনা করেছি। যীশু যে সব "আমিই" ব্যবহার করেছেন অথচ বিদেয় পদ ব্যবহার করেন নি কিন্তু সেখানে এমন শক্তিশালী ও নিশ্চিতভাবে ও এক্সক্লুসিভ ভাবে "আমিই" দাবি করেছেন:

"আমি ছাড়া পিতার কাছ থেকে কেউ নেমে আসে নি"


আমি এখানে আপনাদের জন্য আরো দুটি উক্তি প্রকাশ করছি এবং দ্বিতীয়টি আরো সম্পূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করবো।


"এই জন্য তোমাদিগকে বলিলাম যে, তোমরা তোমাদের পাপসমূহে মরিবে; কেননা যদি বিশ্বাস না কর যে, আমিই তিনি, তবে তোমাদের পাপসমূহে মরিবে।" #যোহন ৮:২৪

আবারও, এখানে যীশু ইহুদীদের সংগে তর্ক করছিলেন যারা তাঁর বিরুদ্ধে ছিল। যীশু তাদের বলেন -


"তোমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম আমার দিন দেখিবার আশায় উল্লাসিত হইয়াছিলেন, এবং তিনি তাহা দেখিলেন ও আনন্দ করিলেন। তখন যিহূদীরা তাঁহাকে কহিল, তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বৎসর হয় নাই, তুমি কি অব্রাহামকে দেখিয়াছ? যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, অব্রাহামের জন্মের পূর্ব্বাবধি আমি আছি।" #যোহন ৮:৫৬-৫৮ 

এই কথা শুনে সেই ইহুদী নেতারা যীশুকে মারার জন্য পাথর কুড়িয়ে নিলেন। কিন্তু যীশু নিজেকে গোপন করে ধর্মধাম থেকে বের হয়ে গেলেন।


আজ আমি বলছি, এখানে অনেকে যীশু কে তা বুঝতে পারছেন না কিন্তু সেই সময়ের ইহুদী নেতারা খুব ভাল করেই যীশু বুঝতে পেরেছিলেন?


সেই সময়ে ইহুদীরা যীশুর শিষ্যদের থেকেও বুদ্ধিমান ছিল কেননা তারা ঠিকই বুঝতে পেরেছিল যে, যীশু ঠিক কি দাবি করেছিলেন যখন তিনি বলেছিলেন, "ইব্রাহিমের জন্মের আগে থেকেই আমি আছি।" তারা জানত যে, যীশু নিজেকে ঈশ্বরের সমান হিসাবে দাবি করেছিলেন। এই জন্য তারা তখন পাথর কুড়িয়ে নিয়েছিল তাঁর ঈশ্বর নিন্দার জবাব দেওয়ার জন্য।


এখন বর্তমান যীশুর "আমিই" ব্যবহারের সম্পূর্ণ কার্যকারীতা বের করে না হলেও হয়তো সবাই সম্পূর্ণভাবে যীশুকে বুঝতে পারবে না যদি না তারা বাইবেল সম্পর্কে ভাল জ্ঞান রাখেন।

পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর সদাপ্রভু "আমিই" উক্তি ব্যবহার করেছেন - স্বর্গ ও পৃথিবীর নির্মাণকর্তা, ত্রাণকর্তা, সমস্ত পৃথিবীর বিচারক, একইভাবে কথা বলেছেন।


হিব্রু শব্দ "আনি হু" গ্রীক ভাষায় অনুদিত পুরাতন নিয়ম অনুবাদ করেছে "ইগো ইমি" এই রকম তিনটি পদ দেখুন -

"ঈশ্বর মোশিকে কহিলেন, “আমিই যে আছি সেই আছি”; আরও কহিলেন, ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে এইরূপ বলিও, “আছি” তোমাদের নিকটে আমাকে প্রেরণ করিয়াছেন।" #যাত্রাপুস্তক ৩:১৪
"এখন দেখ, আমি, আমিই তিনি; আমি ব্যতীত কোন ঈশ্বর নাই; আমি বধ করি, আমিই সজীব করি; আমি আঘাত করিয়াছি, আমিই সুস্থ করি; আমার হস্ত হইতে উদ্ধারকারী কেহই নাই।" #দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৩৯
"সদাপ্রভু কহেন, তোমরাই আমার সাক্ষী, এবং আমার মনোনীত দাস; যেন তোমরা জানিতে ও আমাতে বিশ্বাস করিতে পার, এবং বুঝিতে পার যে, আমিই তিনি;    আমার পূর্ব্বে কোন ঈশ্বর নির্ম্মিত হয় নাই, এবং আমার পরেও হইবে না। আমি,আমিই সদাপ্রভু; আমি ভিন্ন আর ত্রাণকর্ত্তা নাই। অতএব - আমাদের প্রভু যীশু খ্রিস্টই হচ্ছেন প্রভু ও ত্রাণকর্তা।যার শুনবার কান আছে সে শুনুক, যার বুঝবার জ্ঞান আছে সে বুঝুক, যার বিশ্বাসের হৃদয় আছে সে যীশুতে বিশ্বাস করুক।" #যিশাইয় ৪৩:১০-১১

74 views0 comments
bottom of page