top of page
Search

যিশাইয় ৫৩ঃ৭ পদের ভবিষ্যৎবানী কি পূরণ হয়েছে?



প্রিয়পাঠক, এই ভবিষ্যৎবানী যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা সম্পূর্ণ হয়েছে, এটি দেখার পূর্বে আসুন যিশাইয় ৫৩:৭ পদের ভবিষ্যৎবানীটি পাঠ করি, “তিনি উপদ্রুত হইলেন, তবু দুঃখভোগ স্বীকার করিলেন, তিনি মুখ খুলিলেন না; মেষশাবক যেমন হত হইবার জন্য নীত হয়, মেষী যেমন লোমচ্ছেদকের সম্মুখে নীরব হয়, সেইরুপ তিনি মুখ খুলিলেন না" (যিশাইয় ৫৩:৭)


পিলাতের সৈন্যরা যখন তাঁকে মারতে থাকে তখন তিনি একটা শব্দও উচ্চারণ করেন নি! তারা যখন তাঁকে ক্রুশে পেরেক দ্বারা বিদ্ধ করে তখন তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেন নি! আসুন আমরা আমাদের পাঠ্যাংশে ফিরে আসি এবং তিনটি প্রশ্নের দ্বারা তা দেখি - প্রথম, যাকে যীশু বলা হয় এই ব্যাক্তি কে ? যার বিষয়ে ভাববাদীরা উক্তি করেন এই ব্যক্তি তাহলে কে ছিলেন, “তিনি উপদ্রুত হইলেন, তবু দুঃখভোগ স্বীকার করিলেন, তিনি মুখ খুলিলেন না....?” যিশাইয় ৫৩:৭ পদ। বাইবেল আমাদের বলে যে তিনি ছিলেন প্রতাপের প্রভু, ত্রিত্ব ঈশ্বরের দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি মনুষ্যরুপ নিয়ে পুত্র ঈশ্বর হিসাবে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন! বাইবেল বলে, “ঈশ্বর হইতে জাত ঈশ্বর।”


আমরা যেন কোন মতেই চিন্তা না করি যে তিনি কেবলমাত্র সাধারণ শিক্ষক বা এক স্বাভাবিক ভাববাদি! এই ভাবে চিন্তা করার জন্য তিনি কোন জায়গাই আমাদের জন্য ছেড়ে যান নি; কেননা তিনি বলেছেন, “আমি এবং আমার পিতা আমরা এক” যোহান১০:৩০ পদ। পুণরায়, তিনি বলেছেন, “আমিই পুণরুত্থান ও জীবন, যে আমাতে বিশ্বাস করে সে মরিলেও জীবিত হইবে" - যোহন ১১:২৫যদি অন্য কোন ব্যক্তি এই সমস্ত কথাগুলো বলে তবে আমরা তাকে মন্দ আত্মাগ্রস্ত, ভ্রান্তিজনক, বুদ্ধিভ্রষ্ট, উন্মাদ বা বিশৃঙ্খল ব্যাক্তি বলবো! কিন্তু যীশু যখন এই কথা বলেন যে তিনি ও পিতা ঈশ্বর তারা উভয়ে এক, এবং তিনি যখন বলেন, “আমিই পুণরুত্থান ও জীবন”, আর এই প্রকার বিভিন্ন কথাতে আমরা থমকে যাই, এবং এমনকি এই সমস্ত কিছুর থেকে খারাপ যেটা এই সমস্ত কিছুর মধ্যেও আমরা বিস্মিত হয়ে পড়ি এই সমস্ত কিছুর উপরে তিনি যদি যথার্থ না হয়! এক মন্দ আত্মাগ্রস্ত হিসাবে তাঁকে আপনি থুতু দিতে পারেন; অথবা তাঁর চরণে পড়ে আপনি তাঁকে ঈশ্বর ও প্রভু বলে ডাকতে পারেন...।


আপনার সিদ্ধান্ত আপনাকে অবশ্যই নিতে হবে, কেননা যীশু বলেছেন, “আমিই পথ, সত্য ও জীবনঃ আমাছাড়া কোন ব্যক্তিই পিতার নিকটে আসিতে পারে না” যোহান ১৪:৬ পদ। ইহা আপনি যীশুতেই পাবেন! যীশুখ্রীষ্টকে আপনি বুদ্ধধর্ম বা হিন্দু ধর্ম বা ইসলাম ধর্মের সংগে সমান করতে পারেন না, “কেননা যীশু আমাদের কাছে সেই প্রকার কোন বিকল্প আমাদের কাছে রেখে যান নই। এই প্রকার কোন অভিপ্রায়ও তিনি করে যান নি।” খ্রীষ্ট অন্য কোন বিকল্পই আমাদের কাছে ছেড়ে যান নি। তিনি বলেছেন, “আমাকে ছাড়া কোন মানুষই পিতার কাছে আসতে পারে না।”


তাঁকে আপনি থুতু দিতে বা তাঁকে আপনি মৃত্যুদণ্ড দিতে পারেন, অথবা আপনি তাঁর চরণে পড়ে তাঁকে আপনি ঈশ্বর ও প্রভু বলে ডাকতে পারেন.... এর জন্য আপনাকে অতি অবশ্যই একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইহা কেবলমাত্র এক বা অন্যটি হতে পারে। এই বিষয়ে কোন ব্যক্তিই নিরপেক্ষ নয়! তারা হয়তো তা করার ভান করতে পারে কিন্তু তারা সত্য সত্যই নিরপেক্ষ নয়। এই প্রকার কোন অভিব্যক্তিই তিনি আমাদের কাছে রেখে যান নি।


দ্বিতীয়, যাঁরা তাঁর প্রতি অত্যাচার এবং মৃত্যুদণ্ড দেন তাদের কাছে যীশু কেন পরাজিত হলেন? “তিনি উপদ্রুত হলেন, তবু দুঃখভোগ স্বীকার করিলেন, তিনি মুখ খুলিলেন না - যিশাইয় ৫৩:৭। তথাপি তিনি যখন প্রচন্ড চাবুক দ্বারা প্রহৃত হয়ে ক্রুশারোপিত হন তখন যীশু কিছুই বলেন নি! যীশু নিজেকে বাঁচাবার চেষ্টা করেন নি কেননা এই পৃথিবীতে আগমন করার তাঁর চিরকালীন উদ্দেশ্য হল যেন ক্রুশের উপরে দুঃখভোগ ও মৃত্যু বরণ করেন। ক্রুশে মৃত্যুবরণ করার এক বছর আগে যীশু এই বিষয়টি পরিষ্কার করে দেন। “সেই সময় অবধি যীশু আপন শিষ্য দিগকে স্পষ্টই বলিতে লাগিলেন যে, তাঁহাকে জেরুজালেমে যাইতে হইবে এবং প্রাচীনবর্গের প্রধান যাজকদের ও অধ্যাপকদের হইতে অনেক দুঃখভোগ করিতে হইবে ও হত হইতে হইবে আর তৃতীয় দিবসে উঠিতে হইবে - মথি ১৬:২১ পদ। কিন্তু আমাদের ইহা বুঝতে হবে, কেননা বাইবেল বলে, “পাপীদের উদ্ধার করার জন্যই খ্রীষ্ট যীশু এই জগতে আসিয়াছেন” - ১ তিমথী ১:১৫ পদ। ক্রুশের উপরে আমাদের পাপের জন্য তাঁর মৃত্যুর দ্বারা এবং তাঁর পুণরুত্থানের দ্বারা আমরা জীবন লাভ করেছি। তিনি যখন বেত্রাঘাতে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ক্রুশারোপিত হন, তখন যীশু কোন কথা না বলার দ্বারা নিজেকে পরাজিত করেন। কেননা রোমিয় সম্রাট পিলাতকে তিনি যে ভাবে বলেছেন, “আমি এই জন্যই জন্মগ্রহণ করিয়াছি ও এইজন্য জগতে আসিয়াছি - যোহান ১৮:৩৭ পদ।


তৃতীয়, যীশুর নীরব দুঃখভোগের বিষয়ে পাঠ্যাংশ আমাদের কি বলে ? আসুন একসঙ্গে অনুগ্রহ করে উঠে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে যিশাইয় ৫৩:৭ পদটি পড়ি। “তিনি উপদ্রুত হইলেন, তবু দুঃখভোগ স্বীকার করিলেন, তিনি মুখ খুলিলেন না; মেষশাবক যেমন হত হইবার জন্য নীত হয়, মেষী যেমন লোমচ্ছেদকের সম্মুখে নীরব হয়, সেইরুপ তিনি মুখ খুলিলেন না”তিনি উপদ্রুত হলেন ও দুঃখভোগ স্বীকার করলেন, তিনি উপদ্রুত হওয়ার জন্য নিজেকে অনুমোদন জানালেন। উপদ্রুত হওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি স্বেচ্ছায় দুঃখভোগ বরণ করে নিলেন। নিজেকে বাঁচাবার বা প্রতিবাদ করার জন্য নিজের মুখ থেকে কোন বাক্য ব্যবহার করলেন না। এই পূর্ণতার বিষয়টি চিন্তা না করে একজন কোন ভাবেই ভবিষ্য বাণীর কথাকে পড়তে পারেন না, কেননা পিলাতের বিচার সিংহাসনের সম্মুখে এই প্রকৃত দাস একটা শব্দও মুখ থেকে বার করলেন না। তিনি যখন তিরষ্কৃত হন তখন পুণরায় উলটে তিরষ্কার করলেন না। তিনি যখন দুঃখভোগ করেন তখন তিনি ভয় পেলেন না। “তখন পীলাট তাহাকে কহিলেন, তুমি কি শুণিতেছ না উহারা তোমার বিপক্ষে কত বিষয়ে সাক্ষ্য দিতেছে? তিনি তাহাকে এক কথারও উত্তর দিলেন না; ইহাতে দেশাধ্যক্ষ অতিশয় আশ্চর্যের জ্ঞান করিলেন” মথি ২৭:১৩-১৪ পদ ।

“পরে প্রধান যাজকেরা তাঁহার উপরে অনেক দোষারোপ করিতে লাগিল। পীলাট তাঁহাকে আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি কি কিছুই উত্তর দিবে না? দেখ ইহারা তোমার উপরে কত দোষারোপ করিতেছে। কিন্তু যীশু আর কিছু উত্তর করিলেন না; তাহাতে পিলাটের আশ্চর্য্য বোধ হইল” মার্ক ১৫:৩-৫ পদ । “তিনি উপদ্রুত হইলেন তবু দুঃখভোগ স্বীকার করিলেন, তিনি মুখ খুলিলেন না, মেষশাবক যেমন হত হইবার জন্য নীত হয়, মেষী যেমন লোমচ্ছেদকের সম্মুখে নীরবহয়, সেইরুপ তিনি মুখ খুলিলেন না” যিশাইয় ৫৩:৭ পদ।


যিশাইয় ৫৩:৭ পদ খ্রীষ্টকে এক মেষের সঙ্গে তুলনা করে। পুরাতন নিয়মে মানুষেরা পশু নিয়ে, ঈশ্বরের কাছে আসত বলিদান দেওয়ার জন্য। বলিদানের জন্য একটি মেষ প্রস্তুত করা হতো বলিদানের জন্য সেখানে তারা পশুর লোমগুলোকে ছেদন বা কাটতো। সেই সময়ে মেষি শান্ত ও নীরব হয়ে দঁড়িয়ে থাকতো। ঠিক যেমন বলিদানের সময় মেষী নীরব থাকে, ঠিক “সেই ভাবেই তিনিও তাঁর মুখকে খুললেন না” যিশাইয় ৫৩:৭ পদ । ব্যাপ্তিস্মদাতা যোহানও তাঁকে মেষের সংগে তুলনা করে বলেন, “ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষ শাবক যিনি জগতের পাপ ভার বহন করিয়া লইয়া যান” - যোহান ১:২৯ পদ।

20 views0 comments
bottom of page