ইসলাম থেকে খ্রিস্টধর্ম নয়, বরং একজন জীবন্ত ঈশ্বরের আহ্বানে সাড়া
- সত্য অন্বেষী
- 17 minutes ago
- 2 min read

মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় আমরা কীভাবে যিশুকে তুলে ধরতে পারি
আমরা যারা যিশুকে অনুসরণ করি, তারা অনেক সময় মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় বা আলোচনায় ধর্ম নিয়ে কথা বলি। অনেকে প্রশ্ন করে, যুক্তি দেয়, এমনকি খ্রিস্টান ধর্মের ভুল খুঁজে বের করার চেষ্টাও করে। এই জায়গাগুলোতে আমরা একটু সামলে কথা না বললে কথোপকথনটা খুব সহজেই "কোন ধর্ম বেশি ঠিক?"—এই বিতর্কে ঢুকে যায়।
কিন্তু খ্রিস্টান হওয়া মানে তো আর এক ধর্ম ছেড়ে আরেকটা ধর্মে যাওয়া না। এটা ধর্ম পাল্টানোর বিষয় না, এটা হলো একটা জীবন্ত সম্পর্কের গল্প—ঈশ্বরের সঙ্গে, যিনি আমাদের ভালোবাসেন, খুঁজে বের করেন, এবং নতুন জীবন দেন।
খ্রিস্টান হওয়া মানে শুধু নিয়ম-কানুন বদলানো না
অনেক মুসলিম ভাই-বোন মনে করেন খ্রিস্টান হওয়া মানে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি বা লাইফস্টাইল গ্রহণ করা—চার্চে যাওয়া, ইংরেজি বাইবেল পড়া, বড়দিন পালন করা। তাদের দৃষ্টিতে, খ্রিস্টান হওয়া মানে একটা ধর্ম থেকে আরেকটাতে চলে যাওয়া।
কিন্তু সত্যি কথা হলো, যিশুর সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হয় যখন তিনি নিজে আমাদের জীবনে আসেন। আমরা তাঁকে খুঁজে পাইনি, তিনিই আমাদের খুঁজে পেয়েছেন। আমাদের পাপ, দুঃখ, ভাঙা মন—এই সবকিছুর মাঝেও তিনি এসে বলেন, “আমি তোমার জন্য এসেছি।”
“দেখ, আমি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে কড়া নাড়ছি। যদি কেউ আমার কণ্ঠস্বর শুনে দরজা খুলে দেয়, তবে আমি তার কাছে যাব এবং তার সঙ্গে ভোজন করব, আর সেও আমার সঙ্গে।” — প্রকাশিত বাক্য ৩:২০
এটা কোনো নিয়ম-নীতি মেনে চলার ব্যাপার না। এটা একটা ভালোবাসার ডাকে সাড়া দেওয়ার ব্যাপার। এটা হলো এমন একটা নতুন জীবন শুরু করা, যেখানে ঈশ্বর নিজেই আমাদের পরিবারে টেনে নেন।
“তোমরা বিশ্বাসের মাধ্যমে অনুগ্রহে উদ্ধার পেয়েছ… এটা ঈশ্বরের দান।” — ইফিসীয় ২:৮–৯
তুলনা করতে গেলে আসল কথাটা হারিয়ে যায়
অনেকে আলোচনা শুরু করলেই বলে—“কোনটা বেশি ভালো? ইসলাম না খ্রিস্টান ধর্ম?” তারা বাইবেল ও কোরআন, যিশু ও মুহাম্মদ নিয়ে তুলনা করতে চায়। কিন্তু এই তুলনাগুলো আসলে আমাদের যেটা বোঝানো দরকার, সেটা ভুল জায়গায় নিয়ে যায়।
ইসলাম অনেকটা নিয়ম মেনে ঈশ্বরকে খুশি করার চেষ্টা। কিন্তু যিশুর ডাকে আসে অনুগ্রহ, ক্ষমা আর সম্পর্ক—যেখানে ঈশ্বর নিজেই আমাদের খুঁজে বের করেন।
“আমি পথ, সত্য আর জীবন। আমার মাধ্যমে না গেলে কেউ পিতার কাছে যেতে পারে না।” — যোহন ১৪:৬
তাই এটা কোনো যুক্তি জেতার লড়াই না। এটা হলো নিজের জীবনের গল্প বলার সুযোগ।
“আমি যিশুকে পেয়েছি, কারণ তিনি আমাকে খুঁজেছেন। আমি এমন ভালোবাসা পেয়েছি যা কোনো ধর্ম আমাকে দেয়নি।”
তাহলে আমরা কীভাবে কথা বলব?
বন্ধুত্বপূর্ণ থাকুন। তর্ক না করে গল্পের মতো করে বলুন।
ধর্ম নিয়ে কথা না বলে যিশু নিয়ে বলুন। মুসলিম বন্ধুরা যিশুকে নবী হিসেবে জানে—তাদের দেখান তিনি এর চেয়েও অনেক বেশি।
“আমার ভেড়ারা আমার কণ্ঠস্বর শোনে… আমি তাদের চিরন্তন জীবন দিই।” — যোহন ১০:২৭–২৮
নিজের গল্প শেয়ার করুন। আপনি যিশুর সঙ্গে কীভাবে চলতে শুরু করলেন, সেটা বলুন। জীবনের বদলের কথা বলুন।
পবিত্র আত্মার উপর ভরসা রাখুন। আমাদের যুক্তি নয়, ঈশ্বরের আত্মাই মানুষের মনে কাজ করেন।
“আমি খ্রিস্টের সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছি… এখন খ্রিস্ট আমার মধ্যে বাস করছেন।” — গালাতীয় ২:২০
শেষ কথা
আপনি যখন কোনো মুসলিম বন্ধুর সঙ্গে যিশুর কথা বলবেন, মনে রাখবেন—আপনি তাকে কোনো ধর্ম বদলাতে বলছেন না। আপনি তাকে তাঁর সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে ডাকছেন। এটা কোনো নিয়মের জালে জড়ানো জীবন নয়, এটা এক ভালোবাসায় বাঁধা সম্পর্ক।
এবং আপনি যখন এই সত্যটা ভালোবাসা আর নম্রতার সঙ্গে ভাগ করে নেন, তখন যিশুর আলোই উজ্বল হয়ে ওঠে।
Comentarios