top of page
Search

পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে নিন্দাকারী কেন পরিত্রাণ [ পাপের ক্ষমা ] পাবে না?


প্রিয়পাঠক, আমি পূর্বের কোন একটি পোস্টে পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে পাপের বিষয়ে কিছু লিখতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমার একজন প্রিয় ভাই, আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই আরো পরিস্কার ব্যাখ্যা সহ লেখা প্রয়োজন। তার সেই " চিন্তা ও পরামর্শ " মাথায় নিয়ে প্রার্থনা পূর্বক আজ আপনাদের সামনে দ্বিতীয়বার পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে পাপের বিষয় জানতে, আসুন আমরা পবিত্র বাইবেলে থেকে মথি ১২:৩১-৩২ পাঠ করি -


"এই কারণ আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, মনুষ্যদের সকল পাপ ও নিন্দার ক্ষমা হইবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার নিন্দার ক্ষমা হইবে না। আর যে কেহ মনুষ্যপুত্রের বিরুদ্ধে কোন কথা কহে, সে ক্ষমা পাইবে; কিন্তু যে কেহ পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা কহে, সে ক্ষমা পাইবে না, ইহকালেও নয়, পরকালেও নয় " ( মথি  ১২:৩১-৩২ )।


প্রভু যীশু পরিস্কার বলছেন, পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে নিন্দাকারী ব্যক্তি কোন ভাবেই তার পাপের ক্ষমা পাবে না। এর অর্থ এটি এমন পাপ যা ক্ষমার একেবারেই অযোগ্য পাপ। যদি কোন ব্যক্তি অনুতাপ করে এবং পাপ স্বীকার করে, এর জন্য পরিনতিও ভোগ করে তার পরেও এই পাপ ক্ষমা হবে না। এই পৃথিবীর ইহকালেও এই পাপের ক্ষমা হবে না, এমনকি পরকালেও ক্ষমা হবে না। তাহলে খ্রীষ্টান হিসাবে অবশ্যই আমাদের এই পাপের বিষয় পরিস্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন, তাই নয় কি?


এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে মানুষ কিভাবে নিন্দা করতে পারে? 


প্রভু যীশু একজন ভূতগ্রস্ত অন্ধ ও বোবা লোককে সুস্থ করিলেন। এই সুস্থতার ঘটনা প্রকাশ্য লোক সমাজের সামনে ঘটেছিল। সাধারণ জনতা যীশুর কাজে চমৎকৃত হয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, ইনি কি সেই দাউদ সন্তান ?


তখন উপস্থিত ফরীশীদের স্বীকারোক্তি ছিল এই ব্যক্তি দাউদ সন্তান নন। ফরীশীরা শুধু যীশুকে দাউদ সন্তান বলে অস্বীকার করেছেন শুধু তাহা নয়, যীশুর পবিত্র আত্মার শক্তিতে করা সুস্থতার কাজকেও বেলসবূলের অর্থাৎ শয়তানের দ্বারা কাজ বলে উপস্থিত লোকদের নিকট প্রচার করেছিলেন। এটি ঈশ্বরের রাজ্যকে শুধু প্রত্যাখ্যান ও অস্বীকার করা নয়, বরং শয়তানের কাজ বলে ঘোষণা করা। এই কর্মের দ্বারা ফরীশীরা এমন পাপ করেছেন যে, ঈশ্বরের রাজ্যর প্রবেশদ্বার তাদের জন্য চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। প্রভু যীশু তাদের অভিযোগের জবাব খুব ভালভাবেই দিয়েছিলেন, দেখুন -


"কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা মন্দ-আত্মা ছাড়াই, তবে ত ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে আসিয়া পড়িয়াছে।"  ( মথি  ১২:২৮ )


যীশুর আহবান ছিল, তাঁকে স্বীকার করলে ও প্রত্যাখ্যান, ঈশ্বরের রাজ্য ফরীশীদের কাছে এসেছেন। যীশু বলেছেন, কেউ তাঁর সাথে কুড়াই অথবা কেউ ছড়ায়া ফেলে। এখানে কোন সন্দেহ ছাড়াই আমরা বলতে পারি যে, ফরীশীরা ঈশ্বরের গৌরব শয়তানের বলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন এটি পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে করা একটি পাপ। এই পাপের পরিণতি সম্পর্কে যীশু সোচ্ছার, তিনি উদার্তভাবে ঘোষণা করছেন এই নিন্দার কোন ক্ষমা নেই। আমি দুটি ধাপে আপনাদের সম্মুখে বর্তমান বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী উভয়ী এই পাপ করছেন তা সংক্ষেপে তুলে ধরছি, যেন এই পাপের বিষয় আমরা শতর্ক হতে পারি।


ক . খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা কিভাবে পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে নিন্দা করছেন?


এটি দুঃখজনক হলে সত্যি যে, অনেক সময় খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা পবিত্র আত্মার কথা বলে অপকর্ম করে থাকে। নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য পবিত্র আত্মার কথা বলে ও নিন্দা করে। পবিত্র আত্মা নিয়ে হাসি ঠাট্টা ও বিদ্রুপ করে যা উচিৎ নয়। যেমনঃ কোন অপকর্ম করে বলে যে পবিত্র আত্মা আমাদের দিয়ে এই কাজ করিয়াছেন, এটিই পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে করা নিন্দা, তাই নয় কি? 


পবিত্র আত্মা সম্বন্ধে কিছু মন্তব্য করার আগে আমাদের সাবধান হওয়া উচিৎ। আজ পবিত্র আত্মার কাজ মানুষকে পাপ সম্পর্কে চেতনা দেওয়া, ঈশ্বরের ধার্মিকতা ও বিচার সম্বন্ধে শতর্ক করা। অনেক সময় আমরা যখন কোন ঈশ্বরের বাক্য থেকে প্রচার শুনি তখন পাপ সম্বন্ধে চেতনা পাই ঠিক তখনই পবিত্র আত্মা আমাদের চেতনা দান করেন। সেই সময় পবিত্র আত্মার বাধ্য হয়ে আমাদের পাপ স্বীকার করা দরকার, তা না হলে আমরা পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে পাপ করে থাকি। কেননা পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে নিন্দাকারী ব্যক্তি পরিত্রাণ পাবে না।


খ . পবিত্র আত্মা এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছেন।


প্রভু যীশু বলেছেন এই কাজ বিশ্বাসীরা পবিত্র আত্মার শক্তিতে পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত পরিচালিত করবেন। এই পৃথিবীর সকল জাতি, ভাষা, কৃষ্টির লোকদের পরিত্রাণের জন্য যীশুর কাছে আসতে হৃদয়ে চেতনা দিবেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতা ও বিচার সম্পর্কে লোকদের দোষী করবেন। এই কাজ পঞ্চাশউত্তমীর দিন হতে শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত পরিচালিত হচ্ছে। পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঈশ্বরের লোকেরা সুসমাচার প্রচার, শিক্ষা ও মন্ডলী স্থাপনের মহান কাজ করছেন।


কিন্তু অবিশ্বাসীদের হৃদয় এই যুগের দেবতা দিয়াবলের দ্বারা এতই প্রভাবিত যে তারা সুসমাচারের তত্ত্ব পর্যন্ত পৌছাতে পায় না। ফরীশীদের পবিত্র আত্মার কাজকে শয়তানের বলে ঘোষণা করেন। পৃথিবীর সকল প্রান্তে বর্তমানে এটি দৃশ্যনীয়। মুসলিমরা প্রতিনিয়ত ফরীশীদের মত করে,এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজ্যর বিরুদ্ধে, পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে নিন্দা করছেন।


খ্রীষ্টেতে প্রিয়, ভাই ও বোন, আসুন আমরা নিজেদের জীবন থেকে পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে নিন্দা করা থেকে শতর্ক থাকি।


44 views0 comments
bottom of page