top of page
Search

ঈশ্বর কি বলেছেন একটি ধর্ম আরেকটি ধর্মের পরিবর্তে আসবে?




প্রিয়পাঠক, মনের উদারতা নিয়ে আসুন একটু চিন্তা করি। ঈশ্বর কি চান যে আমরা প্রথম ইহুদি ধর্মালম্বী হই, তারপর পরিবর্তিত হয়ে খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত হই, তারপর আবার মুসলিম হই?


ঈশ্বর কখনোই এই ধরনের শিক্ষা দেয় না, কারণ ঈশ্বর জীবন্ত, তার কোন মৃত্যু ও ধ্বংস নেই। পুরাতন ও নতুন নিয়মের ঈশ্বরের পরিকল্পনা একই সূত্রে গাথা। মানব জাতির উদ্ধারের বিষয়ে ঈশ্বরের পরিকল্পনা এক ও অদ্বিতীয় কোন পরিবর্তন নেই। ঈশ্বর তাঁর গৌরবের কাজে অটল। তিনি কোন ধর্ম সৃষ্টিতে কখনই আগ্রহী নন। যুগপর্যায়ের যুগে যুগে ঈশ্বরের উদ্ধারের পরিকল্পনা কি? আসুন তা পবিত্র বাইবেল হতে দেখি -


"ফলতঃ তিনি আমাদিগকে আপন ইচ্ছার নিগূঢ়তত্ত্ব জ্ঞাত করিয়াছেন,তাঁহার সেই হিতসঙ্কল্প অনুসারে যাহা তিনি কালের পূর্ণতার বিধান লক্ষ্য করিয়া তাঁহাতে পূর্বে সঙ্কল্প করিয়াছিলেন। তাহা এই, স্বর্গস্থ ও পৃথিবীস্থ সমস্তই খ্রীষ্টেই সংগ্রহ করা যাইবে।" (#ইফি ১:৯-১০)



আব্রাহাম থেকে শুরু করে, ঈশ্বর তাঁর নিজেকে প্রকাশের ক্ষেত্রে খুবই স্পষ্ট ছিলেন যাতে করে আমরা তাঁর সাথ সম্পর্ক স্থাপন করতে পারি। এমন একটি সম্পর্ক, যাতে কোন ধর্ম না, কিন্তু আমাদেরকে সৃষ্টি করার প্রধান উদ্দেশ্য যাতে বাস্তবায়িত হয়।


আসুন, সৃষ্টির শুরুতে, আদম ও হবার দিকে ফিরে দেখি। ঈশ্বরের সাথে তাদের সরাসরি সম্পর্ক ছিল, এবং তাদের প্রয়োজনীয় সকল কিছুই দেওয়া হত। কিন্তু তারপর শয়তান আদম ও হবাকে সাপের আকারে দেখা দিল, এবং তাদেরকে প্রলোভিত করল। দুর্ভাগ্যবশত তারা শয়তানকেই বিশ্বাস করল এবং ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করল। এর ফলে, আদম ও হবা ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক থেকে দূরে সরে গেল।


কিন্তু আপনি কি জানেন ঈশ্বর সেই মুহূর্তে শয়তানকে কি বলেছিল? ঈশ্বর বলেছিলেন যে স্ত্রীলোকের মধ্য দিয়ে আসা সন্তান শয়তানের শত্রু হবে। ঈশ্বর বলেছেন শয়তান সেই সন্তানের পায়ের গোড়ালীতে ছোবল মারবে এবং আংশিক বিজয়ী হবে। কিন্তু সেই সন্তান তাঁর মাথা পিষে দিয়ে চূড়ান্ত আঘাত করবে, সাপের ধ্বংস করবে ও বিজয় নিশ্চিত করবে।


এর মূল বিষয়টি নিম্নরূপঃ


‘‘তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর সেই সাপকে বললেন, “তোমার এই কাজের জন্য ভূমির সমস্ত গৃহপালিত আর বন্য প্রাণীদের মধ্যে তুমি সবচেয়ে বেশী অভিশপ্ত। তুমি সারা জীবন পেটের উপর ভর করে চলবে এবং ধুলা খাবে। আমি তোমার ও স্ত্রীলোকের মধ্যে এবং তোমার বংশ ও স্ত্রীলোকের মধ্য দিয়ে আসা বংশের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি করব। সেই বংশের একজন তোমার মাথা পিষে দেবে আর তুমি তার পায়ের গোড়ালীতে ছোবল মারবে।” (আদি পুস্তক ৩:১৪-১৫)


সৃষ্টির পুরো ইতিহাসজুড়ে এটি প্রমাণিত হয় যে, এই পৃথিবীতে যীশুই নারীর বংশ, দ্বিতীয় কেউ নারীর বংশ নেই। শুধুমাত্র নারী থেকে যীশু এসেছেন? যীশু, মরিয়মের গর্ভে ঈশ্বররের পুত্র তাই নয় কি?

শয়তান সেই নারীর বংশের একজনকে তাঁর গোড়ালীতে আঘাত করবে। কিন্তু সেই বংশধর শয়তানের মাথা পিষে দেবে। শয়তান সেই স্ত্রীলোকের বংশধরের গোড়ালীতে আঘাত করে সীমিত সময়ের জন্য জয়লাভ করলেও শেষ পরিণতি তার ধ্বংস অনিবার্য।


এর অর্থ কি? এর শুধুমাত্র একটি ব্যাখ্যাই আছে।


যখন যীশুর হাতে ও পায়ে পেরেকে গাঁথা ছিল তখন শয়তান তাঁকে আঘাত করেছিল।কিন্তু যীশু শয়তানকে চরম আঘাত করলেন। ক্রুশে যীশু শয়তানকে হারিয়ে দিলেন। তিনি সমস্ত মানবজাতির জন্য ক্রুশে প্রাণ দিলেন, তিনি সকলকে ক্ষমা করতে চান, এবং ঈশ্বরের সাথে পূর্ণমিলিত করতে চান।


সুসমাচারের দ্বারা ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য একটি নতুন পথ খুলে দিয়েছেন।


যিশাইয় ভাববাদী এই বংশধরের বিষয়ে লিখেছেন:


‘‘তাঁর এমন সৌন্দর্য বা জাঁকজমক নেই যে, তাঁর দিকে আমরা ফিরে তাকাই; তাঁর চেহারাও এমন নয় যে, আমাদের আকর্ষণ করতে পারে। লোকে তাঁকে ঘৃণা করেছে ও অগ্রাহ্য করেছে; তিনি যন্ত্রণা ভোগ করেছেন এবং রোগের সংগে তাঁর পরিচয় ছিল। লোকে যাকে দেখলে মুখ ফিরায় তিনি তার মত হয়েছেন; লোকে তাঁকে ঘৃণা করেছে এবং আমরা তাঁকে সম্মান করি নি। সত্যি, তিনিই আমাদের সব রোগ তুলে নিয়েছেন আর আমাদের যন্ত্রণা বহন করেছেন; কিন্তু আমরা ভেবেছি ঈশ্বর তাঁকে আঘাত করেছেন, তাঁকে মেরেছেন ও কষ্ট দিয়েছেন। আমাদের পাপের জন্যই তাঁকে বিদ্ধ করা হয়েছে; আমাদের অন্যায়ের জন্য তাঁকে চুরমার করা হয়েছে। যে শাস্তির ফলে আমাদের শাস্তি এসেছে সেই শাস্তি তাঁকেই দেওয়া হয়েছে; তিনি যে আঘাত পেয়েছেন তার দ্বারাই আমরা সুস্থ হয়েছি। আমরা সবাই ভেড়ার মত করে বিপথে গিয়েছি; আমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের পথের দিকে ফিরেছি। সদাপ্রভু আমাদের সকলের অন্যায় তাঁর উপর চাপিয়েছেন।’’ (যিশাইয় ৫৩:২-৬)

যিশাইয় ভাববাদী কার সম্বন্ধে কথা বলছেন? এটা বেশ স্পষ্ট। তিনি যীশুর সম্বন্ধে কথা বলছেন। আর এটা কখন লেখা হয়েছিল? এটা লেখা হয়েছিল যীশুর জন্মের প্রায় ৭০০ বছর আগে।


যীশু যখন "পিতা আমা অপেক্ষা মহান"- (যোহন ১৪:২৮ ) বলেন, তখন তার অর্থ কি? এর অর্থ বুঝতে হলে যীশুর দুটো স্বভাব সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস মতে যীশুর দুটো স্বভাব - তাঁর ঈশ্বরের স্বভাব ও মানব স্বভাব। এ দুটো স্বভাবের কারণেই তিনি ঈশ্বর ও তিনি মানব। এদুটো স্বভাবের কারণে তিনি ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরী করতে পেরেছেন। তিনি সব সময় এ দুটো স্বভাব ও ব্যক্তিতে বিদ্যমান।


মানুষের স্বভাব না থাকলে তিনি স্বর্গ থেকে মানুষের মাঝে মানুষ হিসাবে অবতরণ করে বসবাস করতে পারেন না। তাঁর মানুষ হওয়া দরকার ছিল, কেননা তিনি মানুষের পরিত্রাণ করতে এসেছেন। আবার তাঁকে ঈশ্বর থাকতে হয়েছে। কেননা কোন পাপ না করতে, পাপিদের পাপ ক্ষমা করতে, আর পাপের কর্তা শয়তানকে পরাজিত করতে ঈশ্বর থাকা দরকার।


খ্রিস্টান ধর্মের বিশ্বাস মতে ঈশ্বর মানুষ হিসাবে মূর্তিমান হয়েছেন যেন মানুষকে উদ্ধার করতে পারেন। যখন তিনি মানুষ হিসাবে কথা বলেছেন, তখন তিনি মানবীয় স্বভাবে থেকে কথা বলেছেন বলেই ঈশ্বরের প্রতি বাধ্যতা ও বশ্যতা দেখিয়েছেন। এদুনিয়াতে তিনি তাঁর মানবীয় রুপ দেখিয়েছেন, আবার ঈশ্বরের রুপ দেখিয়েছেন। কেননা তিনি যে সব কাজ করেছেন, তা কেবল ঈশ্বরই করতে পারেন।


সৃষ্টির শুরু থেকেই, হাজার হাজার বছরের ধরে, ঈশ্বর সব সময়ই যীশুর আসার সম্বন্ধে এবং তাঁর মৃত্যুবরণ সম্পর্কে বলেছেন , যেমনটা আমরা যিশাইয় ভাববাদীর লেখা থেকে পড়লাম। আপনার কী মনে হয়, ঈশ্বর যদি একদম শেষ পরিস্থিতিতে তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতেন তাহলে কেমন হতো? হাজার হাজার বছর ধরে প্রতিজ্ঞাত যীশুর আসার পর ঈশ্বর যদি তাঁর ভাবনা পরিবর্তন করতেন আর যীশু আমাদের জন্য না মারা যেতেন তাহলে কেমন হতো? ঈশ্বর তাঁর ভাবনা পরিবর্তন করেন না।


অতএব ইসলামের মানবীয় ভ্রান্ত যুক্তি শোনা থেকে বিরত থাকুন শতর্ক থাকুন।

98 views0 comments
bottom of page