top of page
Search

রোযা


বাংলাদেশে অনেক মুসলিম পরিবারে খ্রীষ্টান বিশ্বাসী ভাই ও বোন আছে। এই রোযার সময় তারা কঠিন ধর্মীয় চাপের মধ্যে পড়ে যান। আজকের এই লেখাটি সেই সকল ভাই ও বোনদের উদ্দেশ্য করে লিখছি। যেন তারা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মহান ঈশ্বরকেও গৌরবান্বিত করতে পারেন। কেননা প্রভু বলেন,

"তিনি কহিলেন, না, কি জানি, শ্যামাঘাস সংগ্রহ করিবার সময়ে তোমরা তাহার সহিত গমও উপড়াইয়া ফেলিবে। শস্যচ্ছেদনের সময় পর্যন্ত উভয়কে একত্রে বাড়িতে দেও। পরে ছেদনের সময়ে আমি ছেদকদিগকে বলিব, তোমরা প্রথমে শ্যামাঘাস সংগ্রহ করিয়া পোড়াইবার জন্য বোঝা বোঝা বাঁধিয়া রাখ, কিন্তু গম আমার গোলায় সংগ্রহ কর - (মথি ১৩:২৯-৩০)।


পবিত্র বাইবেলের শ্যামাঘাসের এই দৃষ্টান্তটি পরিস্কার বলছেন, গম ও শ্যামাঘাস একত্রে বৃদ্ধিলাভ করবে। কিন্তু তারা এক নয় পৃথক। গম হচ্ছে খ্রীষ্ট বিশ্বাসী আর শ্যামাঘাস হচ্ছে যিনি খ্রীষ্টেতে বিশ্বাসী নয়। বাংলাদেশে শত শত মুসলিম পরিবারে দুই একজন করে খ্রীষ্টে বিশ্বাসী আছে। এই পরিস্থিতিতেই তাদের বৃদ্ধি পেতে হবে, শ্যামাঘাসের মধ্যেই তাদের থাকতে হবে। কিন্তু গম হতে হবে।


খ্রীষ্টান ধর্মের রোযা ও মুসলিম ধর্মের রোযা এক নয়। সেজন্য যিনি খ্রীষ্টান, তিনি মুসলিমদের সাথে মিল রেখে রোযা রাখতে পারেন না। কারণ, সাধারণ লোকেরা এতে জানবে সে আর খ্রীষ্টান নয় কিন্তু মুসলিম। কিন্তু ঈশ্বর প্রত্যেক খ্রীষ্ট বিশ্বাসীকে যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নিযুক্ত করেছেন। হ্যা আপনাকে অবশ্যই যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে হবে, কেন আপনি যীশুকে পাপের পরিত্রাণকর্তা হিসাবে বিশ্বাস ও স্বীকার করেন।

মুসলিমদের রোযার উদেশ্যঃ

ক.রহমত লাভের জন্য।

খ. মাগফেরাত অর্থাৎ নাজাতের জন্য।


কিন্তু আমি তো ঈশ্বরের রহমত, মাগফেরাত ও নাজাত যীশুতে বিশ্বাসে ইতিমধ্যেই পেয়েছি। এখন প্রশ্ন হলো আমি তো খ্রীষ্টান, আমি কি রোযা রাখবো না?


হ্যা, অবশ্যই আমি খ্রীষ্টান হিসাবে রোযা রাখব। যীশু আমাদের রোযা রাখতে বলেছেন। খ্রীষ্টানরা মূলত প্রধানত পাঁচটি কারণে রোযা রাখতে পারেন।


১। প্রত্যেক খ্রীষ্টান বিশ্বাসী পবিত্র আত্নার বরদান প্রাপ্ত হয়েছেন, তা যথাযথ ব্যবহার করতে রোযা রাখতে পারবেন।

২। প্রত্যেক খ্রীষ্টান ঈশ্বরের নিকট দৈনন্দিন প্রার্থনা করছেন,সেই প্রার্থনার উত্তর পেতে রোযা রাখতে পারবেন।

৩। দরিদ্র ও দূর্ভিক্ষকবলিতদের সাহায্য করতে আপনি রোযা রাখতে পারবেন।

৪। ঈশ্বরের রাজ্য ও ধার্মিকতার অন্বেষণ করতে আপনি রোযা রাখতে পারবেন।

৫। কোন খারাপ স্বভাব, পাপ আপনি বর্জন করতে পারছেন না, সেজন্য রোযা রেখে আপনি প্রার্থনা করতে পারবেন।


রেফারেন্সঃ ১৮:৯-১৪, যোয়েল ২:১২, মথি ১৭:২১, যিরমিয় ২৩:৯-১৩, ১ সামুয়েল ১:৬-৭, ২ বংশা ২০:৩, ইষ্রা ৮:২১-২৩, নহিমিয় ১:৪, ইষ্টের ৪:৭, গীত ৬৯:১০-১১, যিশাইয় ৫৮:৫-৮, যিরমিয় ৩৬:৯, যোয়েল ১:১৪, যোনাঃ ৩:৫, দানিয়েল ৯:৩, মথি ৪:২, মথি ১৭:১৭-১৮, মার্ক ৯:২৯, লুক ২:৩৭, প্রেরিত ১৩:২-৩, প্রেরিত ১৩:৩, প্রেরিত ১৪:২৩, ১ করি ৭:৫, ২ করি ৬:৫, ২ করি ১১:২৭, ১ পিতর ১:২১।


মূলত এই পাঁচটি কারণ ব্যতিত অন্যকোন কারণে খ্রীষ্টানরা রোযা রাখতে পারে না। মনে রাখবেন রোযা কখনই পরিত্রাণের উপায় নয়। আপনি পরিত্রাণ পেয়েছেন যীশুর মৃত্যু ও পুনুরুন্থানের প্রতি বিশ্বাসে এটি ঈশ্বরের বিনামূল্যে উপহার। পরিত্রাণে আমাদের কর্মফল কোন ভুমিকা রাখে না।


কখন রোযা রাখবেনঃ

১। রোযা রাখুন, যখন ভিষণভাবে পরীক্ষিত হন বা প্রলোভনের সময় - মথি ৪:২।

২। রোযা রাখুন, যখন জ্ঞানের খুব প্রয়োজন হয় - দানিয়েল ৯:৩।

৩। রোযা রাখুন, যখন ঈশ্বরের সাহায্য ও সুরক্ষা প্রয়োজন - ইষ্রা ৮:২১-২৩।

৪। রোযা রাখুন, যখন শয়তানের বিরুদ্ধে জয় পেতে - মথি ১৭:২১ মার্ক ৯:২৯।

৫। রোযা রাখুন, যখন অসম্ভব, অসাধ্য ও দুরুহ অবস্থায় জয়ী হতে - নহিমিয় ১:৪ ।

৬। রোযা রাখুন, ঈশ্বরের নিকট বিশেষ কিছু আসির্বাদ পেতে -১ শমুয়েল ১:৬-৭।

৭। রোযা রাখুন, নতুন পরিচয্যাকারী নিযুক্ত করতে, প্রভুর বাক্য প্রচার করতে - প্রেরিত ১৩:২-৩, ১৪:২৩।

৮। রোযা রাখুন, যখন ঈশ্বরের রাজ্যর জন্য জড়িত হন - ২ করি ৬:৫, ১১:২৭।

৯। রোযা রাখুন, বিশেষ অনুতাপ, পাপ স্বীকার এবং বিশ্বাসে বৃদ্ধির জন্য - যোয়েল ১:১৪,২:১২, ২ :১৫, নহিমিয় ৯:১-২।

১০। রোযা রাখুন, শোক করতে, ঈশ্বর ভক্তদের পরাজয়ের সময়ে - ২ সামুয়েল ১:১২।


রোযা রাখার সময় কতক্ষণঃ রোযা রাখার জন্য বাইবেল সুনির্দিষ্ট কোন সময়সীমা ঠিক করে দেয়নি। দানিয়েল ২১ দিন রোযা রেখেছিলেন। ইষ্টের ও মর্দখয় ৩ দিন ৩ রাত উপবাস করেছিলেন। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট প্রান্তরে ৪০ দিন রোযা রেখেছিলেন। কিন্তু বাইবেলে একেবারে সেভাবে দেখা যায় না লোকেরা কতক্ষণ রোযা রেখেছিল। উদাহরণস্বরুপ, আমাদের এটি বলা হয় নি যিরুশালেম যাত্রা করার পূর্বে ইষ্রা কত সময় রোযা রেখেছিলেন - ইষ্রা ৮:২১-২৩। রোযা অবশ্যই পবিত্র আত্নার পরিচালনায় একজনের ব্যক্তিগত ইচ্ছার প্রকাশ। ঈশ্বরের নির্দেশনায় কারো প্রয়োজন ও সময় অনুযায়ী উপবাস হতে পারে, একবেলা খাবার ও বহুবার খাবার থেকে বিরত থাকা।


"আর বাক্যে কি কার্যে যাহা কিছু কর, সকলই প্রভু যীশুর নামে কর, তাঁহার দ্বারা পিতা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিতে করিতে ইহা কর - কল ৩:১৭।

26 views0 comments
bottom of page