top of page
  • Black Facebook Icon
  • Black YouTube Icon
  • Black Instagram Icon
Search

যীশু কোন ধর্ম পালন করতে বলেছেন? যীশু কোন ধর্ম পালন করতেন?



প্রিয়পাঠক, আমি জন্মগত ভাবে খ্রীষ্টান নই। আমি ধর্মান্তরিত খ্রীষ্টান। আমি অল্প কিছুদিন যাবৎ অনলাইনে খ্রীস্টান ধর্মবিশ্বাসের বিষয় একটু একটু জানছি, যা আমি আগে কখনও জানতে পারি নি। আজ সকালে দুটি প্রশ্ন আমি দেখতে পেলাম, একজন মুসলিম যুবক খুব ধর্মীয় অহংকার নিয়ে উপরোক্ত প্রশ্ন দুটি করেছেন। তাই ঈশ্বর আমার অন্তরে এই ইচ্ছা জানালেন, যেন আমি তার প্রশ্নদুটির উত্তর পবিত্র বাইবেলের আলোকে দেই। যেহেতু প্রশ্ন দুটি ধর্ম সম্পর্কে তাই বাইবেলের আলোকে ধর্মের ভূমিকা কি আসুন তা দেখি -


ধর্মের বৈশিষ্ট্য


পবিত্র বাইবেল অনুসারে মানুষের সৃষ্টি হয়েছে ঈশ্বরের নিজের প্রতিমূর্তিতে। পাপ করার পরও মানুষ সর্বোচ্চ ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি বাহক হতে সম্পূর্ণরূপে বিরত হয়নি। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে এখনও ধর্মের বীজ রয়েছে, যদিও পাপ স্বভাব সব সময়ই এর বিরুদ্ধাচরণ করে। মিশনারীরা সমস্ত জাতি ও উপজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে কিছু না কিছু ধর্মীয় মনোভাবের উপস্থিতি দেখতে পেয়েছেন। মানব জাতির জন্য এটি এক বিরাট আসির্বাদ, যদিও অনেকে অভিশাপ বলে থাকেন। এটি শুধুমাত্র মানুষের জীবনের অন্ত :স্থলকে শুধু নাড়া দেয় না, কিন্তু এটি তার চিন্তা, অনুভূতি ও ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করে।


এখন প্রশ্ন হল ধর্ম কি?


কেবলমাত্র ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল পড়ে আমরা প্রকৃত ধর্মের বৈশিষ্ট্য জানতে পারি। ধর্ম শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ থে‌কে প্রাচীন ইব্রীয় বা গ্রীক কোন শব্দ থেকে নয়। বাইবেলে চারটি স্থানে এ শব্দটি পরিলক্ষিত হয় - গালা ১:১৩-১৪; যাকোব ১:২৬-২৭।


পুরাতন নিয়মে ধর্ম অর্থ হচ্ছে "ঈশ্বরকে ভয় পাওয়া।" এই ভয় অর্থ ভয়ানক অনুভূতি নয়, কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি প্রেম ও শ্রদ্ধাশীল নীরবতা। এটি হচ্ছে ব্যবস্থায় দশ আজ্ঞাতে পুরাতন নিয়মের বিশ্বাসীদের সাড়া দান। নতুন নিয়মে ব্যবস্থাতে নয়, কিন্তু সুসমাচারে সাড়া দান এবং বিশ্বাস ও ঈশ্বর ভক্তি জীবন যাপন করা।


বাইবেলের আলোকে আমরা বুঝি যে ধর্ম হচ্ছে ঈশ্বরের সাথে মানুষের সম্পর্ক, যাতে ঈশ্বরের নিখুঁত প্রতাপ ও অসীম ক্ষমতা এবং মানুষের স্বীয় ব্যর্থতা ও আমিত্বের গুরুত্বহীনতা উপলব্ধি করা। এটিকে বলা যায় ঈশ্বরের সঙ্গে সচেতন ও স্বতঃস্ফূর্ত সম্পর্ক যেটি নিজেই তার নিকট কৃতজ্ঞতাপূর্ণ উপাসনা ও প্রেমের কাজ প্রকাশ করে।এ ধর্মীয় উপাসনা ও কাজ মানুষের বিধিবহির্ভূত ইচ্ছা নয়, কিন্তু এটি ঈশ্বর নির্ধারণ করে দিয়েছেন।


এখন আপনার প্রশ্ন, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট কোন ধর্ম পালন করতে বলেছেন?


প্রভু যীশু খ্রীষ্ট আমাদের কোন ধর্ম পালন করতে বলেন নি। তিনি আমাদের কোন ধর্মের একক বোঝা চাপিয়ে দেন নি। বরং তিনি আমাদের ব্যবস্থা ও ভাববানী গ্রন্থের ধর্মীয় বোঝা থেকে উদ্ধার করে আমাদের স্বাধীন করেছেন। অর্থাৎ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট আমাদের শয়তান, পাপের বন্ধিত্ব হতে উদ্ধার করে আমাদের উপর থেকে ধর্মের বোঝা নামিয়ে দিয়েছেন। যদি আমরা এটি দেখি প্রভু যীশু খ্রীষ্ট কেন এই পৃথিবীতে আগমন করেছেন, তা হলে আমাদের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর পরিস্কার হবেঃ


কারণ যাহা হারাইয়া গিয়াছিল, তাহার অন্বেষণ ও পরিত্রাণ করিতে মনুষ্যপুত্র আসিয়াছেন।

(মার্ক ১০:৪৫)


কারণ বাস্তবিক মনুষ্যপুত্রও পরিচর্য্যা পাইতে আসেন নাই, কিন্তু পরিচর্য্যা করিতে এবং অনেকের পরিবর্ত্তে আপন প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে আসিয়াছেন। (লুক ১৯:১০)


যীশু তাহা শুনিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, সুস্থ লোকদের চিকিৎসকে প্রয়োজন নাই, কিন্তু পীড়িতদেরই প্রয়োজন আছে; আমি ধার্ম্মিকদিগকে নয়, কিন্তু পাপীদিগকেই ডাকিতে আসিয়াছি। (যোহন ১০:১০)


যীশু খ্রীষ্ট বলেন, " আমি আসিয়াছি, যেন তাহারা জীবন পায় ও সেই জীবন পরিপূর্ণ হয়ে উপচয় হয়।" (মার্ক ২:১৭)


হে পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত লোক সকল, আমার নিকটে আইস, আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব। (মথি ১১:২৮)


প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এসেছেন পাপিদের পরিত্রাণ করতে, কোন নতুন ধর্মে আমাদের আবদ্ধ করতে নয়। কেননা কোন ধর্মই পাপিদের পরিত্রাণ দিতে পারে না, কিন্তু মিথ্যা আশা দেয়। যদি এই পৃথিবীর ধর্মগুলো পাপিদের পরিত্রাণ দিত তা হলে ঈশ্বরের পুত্রকে এই পৃথিবীতে আগমন করতে হতো না।


*** কে স্বর্গে যাবে? *** কে নরকে যাবে?


কে পরিত্রাণ পেয়েছে আর কে পরিত্রাণ পায় নি এটি ঈশ্বরের পুত্র যীশুর প্রতি বিশ্বাস তা সমাধান করে দেয়। যেমন নূহের নৌকা সেই সময়ের বন্যাতে কে রক্ষা পাবে আর কে ধ্বংস হবে তা নির্ধারণ করেছিল, কিন্তু বিশ্বাসে নূহ ও তার পরিজন রক্ষাপ্রাপ্ত হয়েছিল।


কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়। কেননা ঈশ্বর জগতের বিচার করিতে পুত্রকে জগতে প্রেরণ করেন নাই, কিন্তু জগৎ যেন তাঁহার দ্বারা পরিত্রাণ পায়। যে তাঁহাতে বিশ্বাস করে, তাহার বিচার করা যায় না; যে বিশ্বাস না করে, তাহার বিচার হইয়া গিয়াছে, যেহেতুক সে ঈশ্বরের একজাত পুত্রের নামে বিশ্বাস করে নাই। (যোহন ৩:১৬-১৮)


যে কেহ পুত্রে বিশ্বাস করে, সে অনন্ত জীবন পাইয়াছে; কিন্তু যে কেহ পুত্রকে অমান্য করে, সে জীবন দেখিতে পাইবে না, কিন্তু ঈশ্বরের ক্রোধ তাহার উপরে অবস্থিতি করে। (যোহন ৩:৩৬)


যীশু খ্রীষ্ট নিজেকেই প্রচার করেছেন। এই পৃথিবীর লোকদেরকে নিজের প্রতি বিশ্বাস করতে বলেছেন, তিনিই ধর্ম। তিনি বলেছেন এই পৃথিবীতে তিনিই একমাত্র সত্য, পথ ও জীবন তাঁকে ছাড়া ঈশ্বর পিতার নিকট যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। তিনি কখনই বলেন নি তাঁর শিক্ষা গুলো পালন করলে পরিত্রাণ পাবে, কিন্তু তিনি বলেছেন তাঁকে বিশ্বাস করলে পরিত্রাণ পাবে।


সুতরাং যীশু কোন ধর্ম পালন করতে বলেন নি, কিন্তু তাঁর প্রতি বিশ্বাসে নির্ভর করতে বলেছেন। এবং তাঁর দেওয়া শিক্ষায় লোকদের শিষ্য করতে বলেছেন।


অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর; আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সে সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও। আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্য্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি। (মথি ২৮:১৯-২০)


আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন হল, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজে কোন ধর্ম পালন করেছেন?


প্রভু যীশু খ্রীষ্ট পরিত্রাণকর্তা হয়ে এই পৃথিবীর পাপিদের উদ্ধার করতে তিনি ব্যবস্থাপত্রের সকল নিয়ম, শর্ত, দাবি পালন করে ব্যবস্থার দোষ হইতে আমাদের নিজ রক্ত দিয়ে ক্রয় করেছেন। তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনই ছিল তাঁর ধর্ম দর্শন।


যীশুর জন্ম, যীশুর কাজ, যীশুর শিক্ষা, যীশুর আদর্শ, যীশুর ক্রুশীয় রক্ত ও মৃত্যু, পুনুরুন্থান সকল কিছুর দ্বারা পাপিদের পরিত্রাণ নিশ্চিত করা হয়েছে। শয়তান, পাপ, ও মৃত্যু যীশুর কাছে পরাজিত, তাই তো যীশু ক্রুশের উপর বলেন পিতা " সমাপ্ত হইল "।


অতএব প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ধর্ম হল এই পৃথিবীর পাপিদের পরিত্রাণ করা এবং ঈশ্বরের সংগে পাপিদের পূর্ণমিলন করা।


ফলতঃ কেহ যদি খ্রীষ্টে থাকে, তবে নূতন সৃষ্টি হইল; পুরাতন বিষয়গুলি অতীত হইয়াছে, দেখ, সেগুলি নূতন হইয়া উঠিয়াছে। আর, সকলই ঈশ্বর হইতে হইয়াছে; তিনি খ্রীষ্ট দ্বারা আপনার সহিত আমাদের সম্মিলন করিয়াছেন, এবং সম্মিলনের পরিচর্য্যা-পদ আমাদিগকে দিয়াছেন; বস্তুতঃ ঈশ্বর খ্রীষ্টে আপনার সহিত জগতের সম্মিলন করাইয়া দিতে ছিলেন, তাহাদের অপরাধ সকল তাহাদের বলিয়া গণনা করিলেন না; এবং সেই সম্মিলনের বার্ত্তা আমাদিগকে সমর্পণ করিয়াছেন। অতএব খ্রীষ্টের পক্ষেই আমরা রাজদূতের কর্ম্ম করিতেছি; ঈশ্বর যেন আমাদের দ্বারা নিবেদন করিতেছেন, আমরা খ্রীষ্টের পক্ষে এই বিনতি করিতেছি, তোমরা ঈশ্বরের সহিত সম্মিলিত হও। যিনি পাপ জানেন নাই, তাঁহাকে তিনি আমাদের পক্ষে পাপস্বরূপ করিলেন, যেন আমরা তাঁহাতে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা-স্বরূপ হই। (২ করি ৫:১৭-২১)


অতএব প্রিয়পাঠক, এই পৃথিবীর ধর্মগুলো একেকটা বোঝা, যার ভার বহন করতে আমরা ক্লান্ত। কিন্তু এই পৃথিবীর ধর্মগুলো আমাদের ক্লান্তি হতে বিশ্রাম দিতে পারে নি। তাই ঈশ্বরের পুত্র যীশু আমাদের পক্ষে সকল যাতনা ক্রুশে বহন করে আমাদের সমুদয় ধর্মীয় বোঝা বহনের ক্লান্তি দূর করে পরিত্রাণ দিলেন। কিন্তু এখনও যারা ধর্মের নিয়মের বোঝা বয়ে বেরাচ্ছেন প্রভু যীশু তাদের ডাকছেন -


হে পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত লোক সকল, আমার নিকটে আইস, আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব। আমার যোঁয়ালি আপনাদের উপরে তুলিয়া লও, এবং আমার কাছে শিক্ষা কর, কেননা আমি মৃদুশীল ও নম্রচিত্ত; তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাইবে। কারণ আমার যোঁয়ালি সহজ ও আমার ভার লঘু। (মথি ১১:২৮-৩০)

 
 
 

Recent Posts

See All

বড়দিনের আধ্যাত্মিক বার্তা: গীতসংহিতা ২:১-১২ এর অন্তর্দৃষ্টি

গীতসংহিতা ২:১-১২ পদ “জাতিগণ কেন কলহ করে? লোকবৃন্দ কেন অনর্থক বিষয় ধ্যান করে? পৃথিবীর রাজগণ দণ্ডায়মান হয়, নায়কগণ একসঙ্গে মন্ত্রণা করে,...

Comentarios


আমাদেরকে অনুসরণ করুন

আমাদের সামাজিক মিডিয়ায় খুঁজুন
  • Facebook - White Circle
  • YouTube - White Circle
  • Instagram - White Circle
@ekmatroshotto

©2020 by The Only Truth

একমাত্রসত্য creates awareness about Christ followers (“Christians”) in Bangladesh and Bengali speaking people of the world. We also encourage and motivate Churches and Christ followers on evangelism to the other religion followers in their own communities. 

bottom of page