top of page
  • Black Facebook Icon
  • Black YouTube Icon
  • Black Instagram Icon
Search

বাইবেলের আলোকে মোহাম্মাদ কোনভাবেই নবী নন

Writer: সত্য অন্বেষীসত্য অন্বেষী

Updated: Jan 7, 2021


আহমেদ দিদাত ও ডা: জাকির নায়েক এক সময় বাইবেলে মুহাম্মদের নাম আছে বলে বিপুল প্রচারনা চালাত। সিংহ ভাগ সাধারন মুসলমানরা সেটা বিশ্বাসও করেছিল এবং এখনও করে। এই প্রচারনায় বিভ্রান্ত হয়ে অনেক খৃষ্টানও ইসলাম গ্রহন করেছিল। ঘটনা যদি সত্য হয় ,তাহলে ঠিক এই মুহুতেই সব মুসলমানের ইসলাম ত্যাগ করা উচিত। কেন ত্যাগ করা উচিত , সেটা এখন বলা হবে।

বাইবেলের দুইটা খন্ড – পুরাতন নিয়ম ও নুতন নিয়ম। পুরাতন নিয়মের মধ্যে পাঁচটা বই যেমন – Genesis, Exodus, Leviticus, Numbers, Deuteronomy- এদেরকে এক সাথে তৌরাত কিতাব বলা হয়।এই তৌরাতের Deuteronomy কিতাবে মুহাম্মদের নাম আছে বলে প্রচার করা হয়। তো সেই বাক্যগুলো প্রথমে দেখা যাক –

"আমি ওদের জন্য ওদের ভাইদের মধ্য থেকে তোমার মত এক নবীর উদ্ভব ঘটাব ও তার মুখে আমার বানী রেখে দেব আমি তাকে যা কিছু আদেশ দেব সে তা তাদের কাছে বলবে।" (দ্বিতীয় বিবরন ১৮:১৮)

"সে আমার নামে আমার সকল বানী বলবে যা সে সকলকে বলবে, যদি কেউ তার কথায় কর্ণপাত না করে আমি তাদেরকে জবাবদিহি করব।" (দ্বিতীয় বিবরন ১৮:১৯)


"কিন্তু যে বানী দিতে আমি আজ্ঞা করিনি, কেউ যদি তা দু:সাহসের সাথে আমার নামে প্রচার করে বা কেউ যদি তা অন্য দেবতাদের নামে বলে তাহলে তাকে অবশ্যই মরতে হবে।" (দ্বিতীয় বিবরন,১৮:২০)

মিশর থেকে মুসা নবি যখন ইসরাইলিদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছিল তখন ঈশ্বর তাকে উপরোক্ত কথাগুলো বলে। ইসলামি পন্ডিতরা আবিস্কার করেছে উক্ত ভবিষ্যদ্বানীর কথিত নবি হলেন মুহাম্মদ।

উক্ত ভবিষ্যদ্বানী থেকে নিচের বৈশিষ্ট্য গুলো পাওয়া যাচ্ছে —

(১) মূসার ভাইদের মধ্য হতে একজন নবির আবির্ভাব ঘটাবে (২) সে নবির মুখে ঈশ্বর তার বানী রেখে দিবে (৩) যারা সে নবির কথা না শুনবে ঈশ্বর স্বয়ং তাদের জবাবদিহিতা করবে। (৪) যদি কেউ মিথ্যাভাবে নিজের কথাকে ঈশ্বরের বানী বলে চালায় তার অপমানজনক মৃত্যূ হবে।

প্রথম: মূসার ভাই কারা ? যেহেতু মিশর দেশ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় এ ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে , তার অর্থ যারাই মূসার সাথে তখন ছিল তারাই সেই মূসার ভাই যাদেরকে বলা হয় ইসরাইলি বা ইহুদি। ইসরাইলি বা ইহুদি কারা ? বস্তুত: মূসার উম্মতদেরকে ইহুদি বলা হয় ও তারা সে সময় মুসার সাথেই ছিল যারা আবার তার গোত্র গত ভাইও বটে। এ গোত্র ভাইদের উদ্ভব কোথা থেকে?

তৌরাত কিতাবে বলা হয়েছে , ইব্রাহীমের দুই পুত্র ছিল- ইসহাক ও ইসমাইল। ইসহাকের এক পুত্রের নাম ছিল জ্যকব যাকে পরে নাম দেয়া হয় ইসরাইল। এই ইসরাইলের বারটা পূত্র ছিল যাদের থেকে বারটা গোত্রের পত্তন ঘটে , এদের সবাইকে বলা হয় ইসরাইলি। এরাই ছিল মুসা নবির উম্মত। এরা সবাই এক সময় মিশরে প্রবাসী ছিল আর তাদেরকেই উদ্ধার করে আনছিল মুসা , ঠিক তখন পথিমধ্যে মুসাকে তার ঈশ্বর উক্ত ভবিষ্যদ্বানী করে। খেয়াল করতে হবে, ইসহাকের আরও ছেলে ছিল কিন্তু তাদের থেকে উৎপন্ন গোত্রকে ইসরাইলি বলা হচ্ছে না। তারাই ইসরাইলি যারা শুধুই মাত্র তার এক পুত্র ইসরাইল থেকে উৎপন্ন। ইব্রাহীমের অন্য ছেলের থেকে উৎপন্ন জাতিকে তো বটেই, খোদ ইসহাকের অন্য ছেলেদের থেকেও উদ্ভুত গোত্রকে ইসরাইলি বলা হয় না।

পক্ষান্তরে দাবী করা হয় ইসমাইলের বংশধর হলো মুহাম্মদ। এই ইসমাইল দুধের শিশু থাকা অবস্থায় তার মা হাজেরা সহ তাকে কথিত মতে মক্কায় নির্বাসন দেয়া হয়। সেখানে ইসমাইল বিয়ে করে ও এক গোষ্ঠীর পত্তন ঘটায় যাদেরকে বলা হয় ইসমাইলিয়।আর ইসলামি মতে ধরা হয় সেই বংশেই মুহাম্মদের আগমন। তার অর্থ মুহাম্মদ কোনভাবেই ইসরাইলি নন। সুতরাং উক্ত কথিত ভবিষ্যদ্বানী মতে মুহাম্মদ কোন মতেই সেই নবি হতে পারেন না, কারন তিনি ইসরাইলি বংশোদ্ভূত নন। উল্লেখ্য, ভবিষ্যদ্বানীটা করা হচ্ছে কিন্তু মূসার কাছে যখন সেই ইসরাইলিরা সবাই মূসার সাথেই ছিল, ইব্রাহীমের কাছে নয়। ইব্রাহীমের কাছে করলেই একমাত্র সম্ভাবনা থাকত সেই কথিত নবি হলো মুহাম্মদ। ইব্রাহীম থেকে মূসা পর্যন্ত প্রায় ৫০০/৬০০ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। মিশর থেকে উদ্ধারকৃত ইসরাইলিরা ততদিন বহু বংশ অতিক্রম করেছে জ্যকব বা ইসরাইল নবি থেকে। উদ্ধারকৃত এ লোকদেরকেই বলা হচ্ছে মূসার ভাই। মূসার সাথে ইসমাইলিয় বংশের কেউ ছিল না। তাই এই ভবিষ্যদ্বানী কোনভাবেই ইসমাইলিয়দের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে না। ঠিক এই প্রধান কারনেই মুহাম্মদ যখন মক্কা মদিনায় ইসলাম প্রচার করছিল , তখন ইহুদিরা কোন ভাবেই মুহাম্মদকে নবী হিসাবে মানে নাই। মানার কথাও না।

সুতরাং দেখা গেল প্রথম বৈশিষ্ট্য মোতাবেক কথিত ইসমাইলিয় বংশধর মুহাম্মদ কোনমতেই তৌরাত কিতাবের বর্ণিত নবি হতে পারেন না।

দ্বিতীয়ত: বলা হচ্ছে ঈশ্বর তার বানী সেই নবির মুখে রেখে দেবে। কিন্তু মুহাম্মদের মুখে কখনই ঈশ্বরের বানী রেখে দেয় নি। বরং কোন এক ছয়শ ডানা বিশিষ্ট আজব জীব ফিরিস্তা নিয়মিত যাতায়াত করে মুহাম্মদকে আল্লাহর কথিত বানী বলে যেত। এটাকে মুখে ঈশ্বরের বানী রাখা বলে না। ঈশ্বরের বানী কোন নবির মুখে রাখা মানে – সেই নবীর মুখ দিয়ে ঈশ্বরের নিজের কথা বলা । এ বিষয়টা আমরা দেখি ঈশা বা যীশুর ক্ষেত্রেই সত্য। কারন যীশু যা বলতেন সেগুলো সবই ছিল ঈশ্বরের বানী। সব মুসলমান মাত্রই সেটা বিশ্বাসও করে। সেকারনেই তাকে বলা হয় আল্লাহর বানী। কারন দেখা যায় কখনও কোন ফিরিস্তা যীশুকে কোন বানী এনে দিত না।

সুতরাং এ পয়েন্টেও মুহাম্মদ কথিত সেই নবি হতে পারেন না।

তৃতীয়ত: এতে ঈশ্বর বলছে- যদি কেউ তার কথায় কর্ণপাত না করে আমি তাদেরকে জবাবদিহি করব অর্থাৎ সেই নবীর কথা অমান্যকারীদের বিচার করার ক্ষমতা সেই নবির হাতে ঈশ্বর অর্পন করে নি, সে ক্ষমতা ঈশ্বর নিজের কাছেই রেখেছে।


মুহাম্মদের ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ন ভিন্ন। মক্কার জীবনে যখন দুর্বল ছিলেন তখন তিনি তাকে অবিশ্বাস করার জন্য তার আল্লাহর ওপর অবিশ্বাসীদের বিচারের দায়িত্ব ন্যস্ত করতেন আর দাবী করতেন তিনি শুধুই একজন সতর্ককারী মাত্র, বিচারক নন, যেমন –

সুরা আরাফ- ৭:১৮৮: "আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য।"(মক্কায় অবতীর্ণ)

সুরা হুদ- ১১:১২: "তুমিতো শুধু সতর্ককারী মাত্র; আর সব কিছুরই দায়িত্বভার তো আল্লাহই নিয়েছেন।(মক্কায় অবতীর্ণ)

সুরা রাদ- ১৩:৭: আপনার কাজ তো ভয় প্রদর্শন করাই এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যে পথপ্রদর্শক হয়েছে।" (মক্কায় অবতীর্ণ)

সূরা আনকাবুত- ২৯:৫০:"আমি তো একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।" ( মক্কায় অবতীর্ণ)

মক্কায় দুর্বল মুহাম্মদ শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী এবং আর অমান্যকারীদের দায়িত্ব আল্লাহর হাতে। কিন্তু মদিনায় হিজরত করার পর পরই তিনি সতর্ককারীর ভূমিকা থেকে বিচারকের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছিলেন এবং যারা তার কথা শোনে নি , তাকে বিশ্বাস করে নি , তাদের বিচারের ভার নিজের হাতেই গ্রহন করেন। সেটা করতে গিয়ে তিনি নিচের আয়াত সমূহ প্রচার করেন –

সুরা তাওবা-৯:৫: "অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।"( মাদানি সূরা)

সুরা তাওবা-৯:২৯: "তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।"(মাদানী)

সুরা নিসা-৪:৮৯: "তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না।"(মাদানী)

শুধু আল্লাহর নামে বানী প্রচার করেই ক্ষান্ত হন নি মুহাম্মদ , যারা তাকে মানে নি, তার ইসলাম গ্রহন করে নি , ইসলাম ত্যাগ করেছে , এবার তাদেরকে আক্রমন করে সরাসরি হত্যার হুকুম জারি করেন মুহাম্মদ , যেমন —

সহিহ বুখারি( ইফা) হাদিস নং-২৭৬৯ "ইয়াহ্ইয়া ইব্ন বুকাইর (র)..আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, অল্প শব্দে ব্যাপক অর্থবোধক বাক্য বলার শক্তি সহ আমি প্রেরিত হয়েছি এবং শত্রুর মনে ভীতির সঞ্চারের(সন্ত্রাস) মাধ্যমে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে।"

সহিহ মুসলিম(ইফা) হাদিস নং- ৩৩। "আবূ তাহির, হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া ও আহমাদ ইবনু ঈসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই – এ কথার সাক্ষ্য না দেওয়া পর্যন্ত লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি। সূতরাং যে কেউ আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই স্বীকার করবে, সে আমা হতে তার জান ও মালের নিরাপত্তা লাভ করবে; তবে শরীআতসম্মত কারণ ব্যতীত। আর তার হিসাব আল্লাহর কাছে।"

সহিহ বুখারি(ইফা) হাদিস নং- ২৮০৮। "আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইকরামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, আলী (রাঃ) এক সম্প্রদায়কে আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। এ সংবাদ আবদুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ)-এর নিকট পৌছলে তিনি বলেন, ‘যদি আমি হতাম, তবে আমি তাদেরকে জ্বালিয়ে ফেলতাম না। কেননা, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা আল্লাহ নির্ধারিত শাস্তি দ্বারা কাউকে শাস্তি দিবে না। বরং আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। যেমন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি তার দ্বীন পরিবর্তন করে, তাকে হত্যা করে ফেল।’"

সুতরাং তৃতীয় বৈশিষ্ট্য অনুযায়ীও দেখা যায় , মুহাম্মদ বিচারের ভার নিজ হাতে নেয়ার কারনে এই তৃতীয় শর্তও লংঘন করেছে। তাই কোনমতেই মুহাম্মদ সেই কথিত নবি হতে পারেন না। অসম্ভব।

চতুর্থত: এবার উক্ত ভবিষ্যদ্বানীতে আরও বলা হচ্ছে –

"কিন্তু যে বানী দিতে আমি আজ্ঞা করিনি, কেউ যদি তা দু:সাহসের সাথে আমার নামে প্রচার করে বা কেউ যদি তা অন্য দেবতাদের নামে বলে তাহলে তাকে অবশ্যই মরতে হবে।" (দ্বিতীয় বিবরন,১৮:২০)

দেখা যাচ্ছে কেউ যদি ভূয়া ভাবে তৌরাতের ঈশ্বরের নামে নিজের ব্যক্তিগত বানী প্রচার করে বা অন্য দেবতার নামে বলে তাকে অবশ্যই মরতে হবে। প্রশ্ন হলো -মানুষ তো মরনশীল। কেউ চিরদিন বাঁচে না। তাহলে এ মৃত্যুর হুমকিটা অবশ্যই অপমানজনক বা করুন যন্ত্রনাময় মৃত্যুই হবে। তাছাড়া স্বাভাবিক মৃত্যুর কথা নিশ্চয়ই এখানে বলা হচ্ছে না।


অদ্ভুদ ব্যপার হলো আমাদের সবার প্রিয় নবির মৃত্যূ কিন্তু সত্যিই খুব অপমানকর ও যন্ত্রনাময় ছিল। যা দেখা যাচ্ছে নিচের হাদিসে –

সহিহ বুখারি(ইফা), হাদিস নং-৫৩৬২। "কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, খায়বার যখন বিজয় হয়, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাদীয়া স্বরুপ একটি (ভুনা) বকরী প্রেরিত হয়। এর মধ্যে ছিল বিষ। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বলেন আমি যদি তোমাদের কাছে আর একটি বিষয়ে প্রশ্ন করি, তবে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমার কাছে সত্য কথা বলবে? তারা বললো হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশ্রিত করেছ? তারা বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্ভুদ্ধ করেছে? তারা বললো। আমরা চেয়েছি, যদি আপনি (নবুওয়াতের দাবীতে) মিথ্যাবাদী হন, তবে আমরা আপনার থেকে মুক্তি পেয়ে যাব। আর যদি আপনি (সত্য) নাবী হন, তবে এ বিষ আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।"

সহিহ বুখারি(ইফা) হাদিস নং-২৪৪১। "আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, জনৈক ইয়াহুদী মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এলো। সেখান থেকে কিছু অংশ তিনি খেলেন এবং (বিষক্রিয়া টের পেয়ে) মহিলাকে হাযির করা হল। তখন বলা হল, আপনি কি একে হত্যার আদেশ দিবেন না? তিনি বললেন, না। আনাস (রাঃ) বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর (মুখ গহবরের) তালুতে আমি বরাবরই বিশ ক্রিয়ার আলামত দেখতে পেতাম।"

সহিহ বুখারি( ইফা ) ২২৪৭ নাবী (সাঃ) এর রোগ ও তাঁর ওফাত। মহান আল্লাহর বাণীঃ আপনিতো মরণশীল এবং তারাও মরণশীল। এরপর কিয়ামত দিবসে তোমরা পরস্পর তোমাদের প্রতিপালকের সম্মুখে বাক-বিতন্ডা করবে (৩৯ঃ ৩০,৩১) ইউনুস (রহঃ) যুহরী ও উরওয়া (রহঃ) সুত্রে বলেন, আয়শা (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) যে রোগে ইন্তিকাল করেন সে সময় তিনি বলতেন, হে আয়শা! আমি খায়বারে (বিষযুক্ত) যে খাদ্য ভক্ষন করেছিলাম, আমি সর্বদা তার যন্ত্রনা অনুভব করছি। আর এখন সেই সময় আগত, যখন সে বিষক্রিয়ার আমার প্রাণবায়ু বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে"

حَدَّثَنِي حِبَّانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا اشْتَكَى نَفَثَ عَلَى نَفْسِهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ وَمَسَحَ عَنْهُ بِيَدِهِ فَلَمَّا اشْتَكَى وَجَعَهُ الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ طَفِقْتُ أَنْفِثُ عَلَى نَفْسِهِ بِالْمُعَوِّذَاتِ، الَّتِي كَانَ يَنْفِثُ، وَأَمْسَحُ بِيَدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنْهُ‏.‏

হাদিস নং- ৪০৯৫। "হিব্বান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, তিনি বলেন, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হয়ে পড়তেন তখন তিনি আশ্রয় প্রার্থনার দুই সূরা (ফালাক ও নাস) পাঠ করে নিজ দেহে ফুঁক দিতেন এবং স্বীয় হাত দ্বারা শরীর মুসেহ্ করতেন। এরপর যখন তিনি মৃত্যু-রোগে আক্রান্ত হলেন, তখন আমি আশ্রয় প্রার্থনার সূরাদ্বয় দ্বারা তাঁর শরীরে দম করতাম, যা দিয়ে তিনি দম করতেন। আমি তাঁর হাত দ্বারা তাঁর শরীর মাসেহ্ করিয়ে দিতাম।"

মিসকাতুল মাসাবিহ, পর্ব-১, ১২৪-[৪৬] "উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি যে বিষ মিশানো ছাগলের গোশ্‌ত (গোশত/গোস্ত/গোসত) খেয়েছিলেন, তার বিষক্রিয়ার কারণে প্রতি বছরই আপনি এত কষ্ট অনুভব করছেন। তিনি বললেন, প্রতি বছরই আমার যে যন্ত্রণা বা অসুখ হয়, এটা আমার (নির্ধারিত) তাক্বদীরে লিপিবদ্ধ হয়েছিল, অথচ তখন আদম (আঃ) ভূগর্ভেই ছিলেন।"

সহিহ মুসলিম(ইফা) হাদিস নং-৫৫১৭। "ইয়াহইয়া ইবনু হাবীব হারিসী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ইয়াহুদী মহিলারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বিষ মেশানো বকরীর গোশত নিয়ে এল। তিনি তা থেকে (কিছু) খেলেন। পরে তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসা হল। তিনি তাকে এ বিষয় জিজ্ঞেস করলে সে বলল, আমি আপনাকে মেরে ফেলার ইচ্ছা করেছিলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ এ ব্যাপারে তোমাকে কিংবা তিনি বললেনঃ আমার উপরে ক্ষমতা দিবেন এমন নয়। তারা (সাহাবীগণ) বললেন, আমরা কি তাকে কতল করে ফেলব? তিনি বললেন, না। রাবী বলেন, এরপর থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আলজিভ ও তালুতে (তার ক্রিয়া) আমি প্রত্যক্ষ করতাম।"

উক্ত হাদিসে দেখা যাচ্ছে , বিষ মাখা গোস্ত খাওয়ার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন , যা আর কোন দিন সারে নি। দিন দিন সেটা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এক পর্যায়ে সেটাই তার মৃত্যুর কারন হয়েছে। তার অবস্থা কতটা সঙ্গীন হয়েছিল তার বর্ননা আছে নিচের হাদিসে-

সহিহ বুখারি( ইফা) হাদিস নং- ৬৩২। ইব্রাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন একেবারে কাতর হয়ে গেলেন এবং তাঁর রোগ বেড়ে গেল, তখন তিনি আমার ঘরে সেবা-শুশ্রূষার জন্য তাঁর অন্যান্য স্ত্রীগণের কাছে সম্মতি চাইলেন। তাঁরা সম্মতি দিলেন। সে সময় দু’জন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে (সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য) তিনি বের হলেন, তাঁর দু’পা মাটিতে হেঁচড়িয়ে যাচ্ছিলো। তিনি ছিলেন আব্বাসা (রাঃ) ও অপর এক সাহাবীর মাঝখানে। (বর্ননাকারী) উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর বর্ণিত এ ঘটনা ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নিকট ব্যক্ত করি। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জানো, তিনি কে ছিলেন, যার নাম আয়িশা (রাঃ) বলেন নি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)।

এতটাই সঙ্গিন হয়ে গেছিল তার অবস্থা যে , তিনি দুইজনের কাধে ভর দিয়েও হাটতে পারছিলেন না , তার দুই পা ছেচড়িয়ে চলছিল। আর মৃত্যুকালে কি ভয়ানক যন্ত্রনা ও কষ্ঠ মুহাম্মদ ভোগ করছিলেন তা বর্ননাতীত , সেটা দেখা যাচ্ছে নিচের হাদিসে —

সহিহ বুখারি(ইফা) হাদিস নং- ৪০৯৯। "আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এমন অবস্থায় ওফাত হয় যে, আমার বুক ও থুতনির মধ্যস্থলে তিনি হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলে। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু-যন্ত্রনার পর আমি আর কারো জন্য মৃত্যু-যন্ত্রনাকে কঠোর বলে মনে করি না।"

খায়বার যুদ্ধের পর তিনি এক ইহুদী রমনীর বাড়ীতে খেতে গেলে তাকে বিষ মেশানো মাংশ দেয়া হয়। তিনি তা সামান্য খেয়েছিলেন তাই তার সাথে সাথে মৃত্যূ হয় নি , কিন্তু তার এক সাথী একটু বেশী খাওয়ার কারনে সাথে সাথেই মারা যায়। উক্ত বিষ ক্রিয়ায় প্রায় দুই বছর ভোগার পর আমাদের প্রিয় নবি খুব যন্ত্রনা পেতে পেতেই চুড়ান্ত অপমানজনকভাবেই মারা যান আর সেটা বোঝা যাচ্ছে উক্ত হাদিসদ্বয়ে। আর খেয়াল করুন – ইহুদি নারী যে চ্যালেঞ্জ করেছিল যে , বিষ খেয়ে মুহাম্মদ যদি মারা না যায় , তাহলে বুঝতে হবে সে খাটি নবী। কিন্তু উক্ত চ্যালেঞ্জেও মুহাম্মদ হেরে গেছেন। বিষ মাখা গোস্ত খেয়ে সাথে সাথে মারা গেলে , সেটা অপমানজনক মৃত্যু হতো না। কিন্তু মুহাম্মদ দীর্ঘদিন রোগে ভুগে , কঠিন যন্ত্রনা পেয়ে , এমন ভাবে মারা গেছিলেন যে , তার বিবি আয়শা পর্যন্ত সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে মুহাম্মদের মৃত্যু যন্ত্রনার চাইতে কঠিন যন্ত্রনা আর কেউ মনে হয় ভোগ করেন নি।

এছাড়া মুহাম্মদ যে শয়তানের বানী প্রচার করেছিলেন , সেটাও বহুল প্রচারিত একটা ঘটনা। সুরা নাজম- ৫৩ এর ১৯ ও ২০ নং আয়াত সেই শয়তানের বানী। যা এখনও কোরানে রয়ে গেছে। এ নিয়ে পরে একটা নিবন্ধ লেখা হবে।

তার অর্থ দেখা যাচ্ছে , চতুর্থ শর্ত অনুযায়ী , যদি কেউ স্বঘোষিত নবী হয় , তাহলে তার কঠিন ও অপমানকর মৃত্যুর যে ভবিষ্যদ্বানী তৌরাত কিতাবে বলা হয়েছে , হুবহু সেটাই ঘটেছিল মুহাম্মদের ক্ষেত্রে।

 
 
 

Recent Posts

See All

বড়দিনের আধ্যাত্মিক বার্তা: গীতসংহিতা ২:১-১২ এর অন্তর্দৃষ্টি

গীতসংহিতা ২:১-১২ পদ “জাতিগণ কেন কলহ করে? লোকবৃন্দ কেন অনর্থক বিষয় ধ্যান করে? পৃথিবীর রাজগণ দণ্ডায়মান হয়, নায়কগণ একসঙ্গে মন্ত্রণা করে,...

Comments


আমাদেরকে অনুসরণ করুন

আমাদের সামাজিক মিডিয়ায় খুঁজুন
  • Facebook - White Circle
  • YouTube - White Circle
  • Instagram - White Circle
@ekmatroshotto

©2020 by The Only Truth

একমাত্রসত্য creates awareness about Christ followers (“Christians”) in Bangladesh and Bengali speaking people of the world. We also encourage and motivate Churches and Christ followers on evangelism to the other religion followers in their own communities. 

bottom of page