top of page
Search

পবিত্র বাইবেল কি ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ বা ওহীপ্রাপ্ত কিতাব নয়?

Updated: Jan 5, 2021


(আরো দেখুন : কিভাবে কোরানের আলোকে তৌরাত, যাবুর, নবীদের কিতাব ও ইনজিল কেন অবিকৃত)


প্রিয়পাঠক, আমরা খ্রীষ্টানরা মুসলিমদের মনগড়া নানা ভ্রান্ত প্রশ্ন দ্বারা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত  হচ্ছি। যদিও এই প্রশ্ন গুলোর স্বপক্ষে তারা কোন ধর্মীয় যুক্তি, তথ্য ও প্রমাণ দিতে পারে না। যেমনঃ অনেকে `বলছেন, বর্তমান তৌরাত ও যাবুর কিতাব যা পবিত্র বাইবেলে আছে তা ঈশ্বরের দেওয়া তৌরাত ও যাবুর নয়। হ্যা আমরা যদি যুক্তির নিরিখে আপনাদের অভিযোগ গ্রহণ করি, তা হলে তো আপনাদেরকেই ঈশ্বর প্রদত্ত তৌরাত ও যাবুর এনে তার প্রমাণ করতে হবে যে, আমরা খ্রীষ্টানরা মিথ্যাবাদী তাই নয় কি?


আর যদি আপনারা সত্য তৌরাত ও যাবুর যা আপনাদের নিকট আছে, তা প্রমাণ স্বরুপপ্রকাশ করতে না পারেন, তা হলে তো আপনাদের অভিযোগ খুব সহজেই বাতিল বলে গন্য হবে, তাই নয় কি?


অতএব আমি আপনাদের উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। যদি আপনারা অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হন, তা হলে আপনাদের অভিযোগটি নিঃসন্দেহে মিথ্যা বলে বিবেচিত হবে।


আমি জন্মগতভাবে মুসলিম  ছিলাম। রক্ষণশীল ওহাবী মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম হয়েছে। আমি জন্মগতভাবে মুসলিম হিসাবে ধর্মীয় অহংকার করতাম ও মুসলিম হিসাবে গর্ববোধ করতাম। আসমানী মূল কিতাব হিসাবে কোরআনকে বিশ্বাস ও সম্মান করতাম। খ্রীষ্টানদের আমি কাফের মনে করতাম। পবিত্র বাইবেল মানুষের লেখা, বিকৃত বই ভাবতাম।


আমি যখন আমার বাবার ছেড়া বাইবেলটি পড়া শুরু করি, অবশ্যই তা বাইবেলের ভুল ও বিকৃত বলে প্রমাণ করার বৃথা চেষ্টা ছিল। এখনও অনেক মুসলিম যুবক আমার মতই করছেন, তার মধ্যে আপনারাও একজন । পবিত্র বাইবেলকে ভুল প্রমাণ করার জন্য তা পড়ছেন।


কিন্তু সত্য হলো ঈশ্বর, যিনি মানুষের পরিত্রাণের জন্য এখনো কাজ করছেন। তিনিই সত্য প্রকাশ করেন। তিনি আমাদের সত্য পথে চালান। আমাদের মিথ্যাগুলো বুঝতে সাহায্য করেন। আমার কঠিন হৃদয় কিভাবে ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা পরিবর্তন হলো এখনো এটি আমার কাছে রহস্য! তিনটি কারণ আমাকে ঈশ্বরের বাক্যর কাছে আসতে সাহায্য করেছেন, তা আমি আপনার কাছে বলতে চাই, অনুগ্রহ করে শুনুন!


১। পবিত্র বাইবেল আমাদের ঈশ্বরের সম্পর্কে যা বলছেন সেগুলো সত্য ঘটনা।


আপনি যদি সত্য জানতে ও বুঝতে চান। তাহলে আপনি আপন হৃদয় প্রস্ত করুন। ঈশ্বর কি বলছেন তা শুনুন। আপনার হৃদয়ের চিন্তা দিয়ে ঈশ্বরের বাক্যকে দেখার চেষ্টা করবেন না। এতে আপনি ঈশ্বরের সাথে পূর্ণমিলিত হওয়ার সু্যোগ হারাবেন। যখন আপনি বাইবেলের নিকট আসেন তখন কি দেখতে পান? ঈশ্বর অতীতে যা করেছেন সেগুলোই কি বাইবেল বলছে না। হ্যা বাইবেল সেই সত্যগুলোই বলছেন। যেমনঃ পৃথিবী সৃষ্টি, আদম ও হবার কথা, নূহের বন্যার, কারণ, ঘটনা এই সব বিষয় আমাদের বলছেন। ঈশ্বর অাব্রাহাম সম্পর্কে আমাদের বলছেন, তিনি কে ? কি করেছেন?  এই সবই আমাদের বলছেন। নবীদের সকল ঘটনা, পরিস্থিতি, শিক্ষা সব আমাদের কাছে আদর্শ। বাইবেল যা বলছেন তা সত্য, যেগুলো ইতিমধ্যে ঘটেছে। এখানে আপনি যদি সেই সত্য ঘটনাবলী অবিশ্বাস করে, কোন নবীর বয়স কত, কোন নবীর কতজন স্ত্রী, আকাশে রংধনু আছে না নেই এই বিষয়গুলো নিয়ে বাইবেলের ভুল ধরে সুসমাচারকে অস্বীকার করতে পারেন এতে আপনার কি লাভ হবে? 


"পশ্চাৎ আসিতে ইচ্ছা করে, তবে সে আপনাকে অস্বীকার করুক, প্রতিদিন আপন ক্রুশ তুলিয়া লউক, এবং আমার পশ্চাদ্‌গামী হউক। কেননা যে কেহ আপন প্রাণ রক্ষা করিতে ইচ্ছা করে, সে তাহা হারাইবে; কিন্তু যে কেহ আমার নিমিত্ত আপন প্রাণ হারায়, সে-ই তাহা রক্ষা করিবে।কারণ মনুষ্য যদি সমুদয় জগৎ লাভ করিয়া আপনাকে নষ্ট করে, কিম্বা হারায়, তবে তাহার কি লাভ হইল?" (লুক ৯:২৩-২৫)


আপনি হয় তো ভাবছেন যে, আপনি বাইবেলকে অবিশ্বাস করার দ্বারা সত্যকে লালন করছেন, তাই নয় কি? কিন্তু সত্য হল আপনি মিথ্যার মধ্যে বাস করছেন, এখনও আপনি সত্যের তত্বজ্ঞান পর্যন্ত পৌছাতে পারেন নি। তাই আমি বলছি মনকে প্রস্তুত করুন, বাইবেলের ঘটনাগুলো ঈশ্বরের তা পড়ুন, ঈশ্বর আপনার সাথে কথা বলতে চান।


২। বাইবেলের লেখক ৪০ জন কেউ কাউকে দেখেন নি, কথাও বলেন নি তবুও একসূত্রে গাঁথা


ঈশ্বর তার গৌরব ও মহিমা প্রকাশ করতে ৪০ জন রক্ত মাংসের মানুষকে ব্যবহার করেছেন। পবিত্র আত্নায় তাদের অনুপ্রাণিত করেছেন যেন নিজ ভাষা ও কৃষ্টিতে, ঈশ্বরের সেই ঘটনাবলীর বিষয় লিখতে পারেন। কারণ ঈশ্বর মোশীকে দশআজ্ঞা ছাড়া আর কিছুই নিজ হাত দিয়ে লিখে দেন নি। যদি ঈশ্বর বাইবেলের লেখক না হতেন তা হলে এই ঈশ্বরের ঘটনাগুলোকে এত প্রাণময় করা হতো না। কোন মানুষের পক্ষে এই বিশাল ইতিহাস ও ঘটনা লেখা অসম্ভব। ঈশ্বর একের পর এক নবীকে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন করতে প্রেরণ করেছেন, কিন্তু তারা ঈশ্বরের বাক্য বলেছেন। বাইবেল আমাদের বলে যে, শাস্ত্রের প্রত্যেকটি কথা ঈশ্বরের, কোন মানুষের নিজের কথা নয় -


প্রথমে ইহা জ্ঞাত হও যে, শাস্ত্রীয় কোন ভাববাণী বক্তার নিজ ব্যাখ্যার বিষয় নয়; কারণ ভাববাণী কখনও মনুষ্যের ইচ্ছাক্রমে উপনীত হয় নাই, কিন্তু মনুষ্যেরা পবিত্র আত্মা দ্বারা চালিত হইয়া ঈশ্বর হইতে যাহা পাইয়াছেন, তাহাই বলিয়াছেন। (২ পিতর ১:২০-২১)


পবিত্র বাইবেলের ৪০ জন লেখক কেউ নিজের বিষয়ে প্রচার করেন নি। তারা ঈশ্বরের বিষয় প্রকাশ করেছেন। ঈশ্বরের কাজ, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও ইচ্ছাকে তুলে ধরেছেন।


৩। পবিত্র বাইবেল পাপকে প্রকাশ করেছেন কিন্তু গোপন করেন নি।


আমি অবাক হই যখন পাপ সম্পর্কে বাইবেল বলে যে পাপ কি? পাপ হচ্ছে ঈশ্বরের হুকুমের অবাধ্যতা, লঙ্ঘন। পাপের সাথে বাইবেলের ঈশ্বরের কোন সম্পর্ক নেই। ঈশ্বর অনেক পাপকে তাঁর বাক্যের দ্বারা তুলে ধরেছেন, গোপন করেন নি। কারণ যে আমরা পাপের প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারি। পাপ থেকে পরিত্রাণ পাই। মন পরিবর্তনের বিশ্বাস নিয়ে খ্রীষ্টের প্রতি ফিরে আসি এটিই ঈশ্বরের আহবান। কিভাবে দাউদ তার পাপের কথা বর্ণনা করলেন? ঈশ্বরের আত্নাদ্বারা চালিত হয়েই তা করেছেন। কোন মানুষকে যদি তার আত্নজীবনী লিখতে বলা হয়, তিনি তার জীবনের সকল পাপগুলো প্রকাশ করবেন না কিন্তু অবশ্যই তিনি শুধু ভালগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবেন। কারণ তার হৃদয় পবিত্র আত্নার দ্বারা আলোকিত নয়। পৃথিবীতে আর এমন কোন বই নেই যে, পাপ সম্পর্কে লোকদেরকে এত সচেতন করে। ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল আপনার জীবনের পাপগুলো দেখিয়ে দেয়। যেন আপনি পরিত্রাণের জন্য ঈশ্বরের প্রতি ফিরে আসেন। কেননা পরিত্রাণ ঈশ্বর হইতে। আপনি কি নিজ পাপ নিয়ে ক্লান্ত? আপনার জীবন কি সমস্যায় ভরা? আপনি কি ঈশ্বরের জন্য গড়ে উঠতে চান? তা হলে পবিত্র বাইবেল পড়ুন!


"ঈশ্বর-নিশ্বসিত প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি আবার শিক্ষার, অনুযোগের, সংশোধনের, ধার্মিকতা সম্বন্ধীয় শাসনের নিমিত্ত উপকারী, যেন ঈশ্বরের লোক পরিপক্ক, সমস্ত সৎকর্মের জন্য সুসজ্জিভূত হয়।" (২ তীম ৩:১৬-১৭)


প্রিয়, মুসলিম ভাই ও বোন, আমি আপনাদের বলছি বাইবেল বিকৃত, ভুল এগুলো বলে ঈশ্বরের আসির্বাদকে কেন প্রতিরোধ করছেন? একবার নিজের জীবনের বিষয় চিন্তা করুন! আপনি কি সত্যিই ঈশ্বরের সহিত পূর্ণমিলিত হয়েছেন? আপনি কি স্বর্গে যাওয়ার নিশ্চয়তা পেয়েছেন?


আরো দেখুন : কিভাবে কোরানের আলোকে তৌরাত, যাবুর, নবীদের কিতাব ও ইনজিল কেন অবিকৃত

83 views0 comments
bottom of page