top of page
  • Black Facebook Icon
  • Black YouTube Icon
  • Black Instagram Icon
Search

খ্রীষ্টিয়ান এবং ইহুদীদের মধ্যে পার্থক্য কি?




প্রিয়পাঠক, পৃথিবীতে বড় বড় কয়েকটি ধর্মের মধ্যে খ্রীষ্টিয়ান এবং ইহুদী ধর্মের মধ্যে একটা মিল রয়েছে।

  • খ্রীষ্টিয়ান এবং ইহুদী ধর্মে লোকেরা এক ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন যিনি সর্বশক্তিমান, যিনি সর্বজ্ঞ, যিনি সর্বত্র বিরাজমান, যিনি অনন্ত ও যিনি অসীম।

  • এই উভয় ধর্মের লোকেরা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন যিনি পবিত্র, যিনি ধার্মিক এবং যিনি ন্যায়পরায়ন আর একইভাবে তিনি প্রেমময় ঈশ্বর, ক্ষমাশীল ঈশ্বর এবং করুনাময় ঈশ্বর।

  • খ্রীষ্টিয়ানরা এবং ইহুদীরা হিব্রু শাস্ত্র অর্থাৎ পুরাতন নিয়মকে ঈশ্বর থেকে প্রাপ্ত বাক্যরূপে দাবি করে, এই উভয় ধর্মই এটাকে ঈশ্বরের দেওয়া শাস্ত্রীয় অংশরূপে বিশ্বাস করেন।

  • এই দুই ধর্ম একই পুরাতন নিয়ম (হিব্রু শাস্ত্র) ব্যবহার করে আর এর অনেক শিক্ষাই একই রকম যা উভয়ই মানেন। এছাড়াও খ্রীষ্টিয়ানরা নতুন নিয়মকে ঈশ্বরের বাক্যরূপেও বিশ্বাসে গ্রহণ করে।

  • ইহুদী এবং খ্রীষ্টিয়ানরা স্বর্গের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে, ধার্মিকদের জন্য অনন্ত আবাস স্থানকে বিশ্বাস করে, নরক বিশ্বাস করে, খারাপ/দুষ্টদের জন্য অনন্ত আবাস স্থানকে বিশ্বাস করে (তবে কিছু কিছু খ্রীষ্টিয় ও ইহুদী দল আছে যারা আবার অনন্ত নরককে বিশ্বাস করে না।)


ইহুদীদের ধর্মকে বলা হয় ইহুদীধর্মমত (Judaism), খ্রীষ্টিয়ানদের ধর্মকে বলা হয় খ্রীষ্টবিশ্বাসী (Christianity)। এছাড়াও ইহুদী-খ্রীষ্টিয়ান বা মসীয়ভিত্তিক ইহুদী (Judeo-Christian of Messianic Jews) বলে একটি দল আছে যারা আবার দাবি করেন যে খ্রীষ্টিয়ান এবং ইহুদীরা নীতিগতভাবে এক। ইহুদী এবং খ্রীষ্টিয়ানরা শিক্ষা দেয় যে ইস্রায়েল জাতি এবং ইহুদী লোকদের জন্য ঈশ্বরের এক বিশেষ পরিকল্পনা আছে।


ইহুদী এবং খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে সম্পূর্ণ এবং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো যীশু খ্রীষ্টকে নিয়ে আর এটাই প্রথমত ধর্মীয়ভাবে উভয়ের মধ্যে বড় পার্থক্য। ইহুদীরা যীশুকে খ্রীষ্টকে মসীহরূপে স্বীকৃতি দেয় না। তাই যখন ইহুদী কোনো ব্যক্তি খ্রীষ্টিয়ান হন তখন তিনি আর কখনই ইহুদী বলে বিবেচিত হবেন না (তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী)। ইহুদীরা ইহুদীধর্মের রীতিনীতি ব্যবহার করবে এটাই বাস্তব কথা। যদি অন্য কোনো কৃষ্টি বা সংষ্কৃতির কোনো ব্যক্তি বা অন্য কোনো ধর্মের কোনো ব্যক্তি ইহুদিধর্ম গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি ইহুদি বলে বিবেচিত হবেন। যদি কোনো খ্রীষ্টিয়ান ইহুদীধর্ম গ্রহণ করেন, তাহলে এর অর্থ হবে তিনি যীশুকে পরিত্যাগ করলেন, যীশুকে অস্বীকার করলেন ও যীশুর দাবি ত্যাগ করলেন কেননা এটাই সাধারণ জ্ঞানে বোঝা যায়।


খ্রীষ্টিয়ানরা শিক্ষা দেয় যে যীশু খ্রীষ্ট নিজেই এসে পুরাতন নিয়মের ভাববানী করা মসীহ পরিত্রাণকর্তার আগমনকে তিনিই পূর্ণ করেছেন (যিশাইয় ৭:১৪; ৯:৬-৭ পদ; মিখা ৫:২ পদ)। ইহুদীরা যীশুকে একজন সৎ গুরুরূপে স্বীকার করেন এছাড়া ঈশ্বরের একজন নবিরূপে জানেন। ইহুদীরা যীশুকে খ্রীষ্ট বা মসীহরূপে বিশ্বাস করেন না। তবুও এর চেয়েও খ্রীষ্টিয়ানরা যীশু সম্পর্কে আরো অধিক শিক্ষা দেয় যে দৈহিকভাবে যীশু-ই ছিলেন ঈশ্বর,


“প্রথমেই বাক্য ছিলেন, বাক্য ঈশ্বরের সংগে ছিলেন এবং বাক্য বা কালাম নিজেই ঈশ্বর ছিলেন, . . . সেই বাক্যই মানুষ হয়ে জন্মাগ্রহণ করলেন এবং আমাদের মধ্যে বাস করলেন” (যোহন ১:১,১৪ পদ)


“কিন্তু পুত্রের বিষয়ে ঈশ্বর বলছেন, ‘হে ঈশ্বর তোমার সিংহাসন চিরস্থায়ী; তোমার শাসন ন্যায়ের শাসন” (ইব্রীয় ১:৮ পদ)


“ঈশ্বর রক্ত-মাংসে (দেহে মানুষ হয়ে) প্রকাশিত হলেন” (১তীমথিয় ৩:১৬ পদ কেজেভি বাইবেল)


খ্রীষ্টিয়ানরা শিক্ষা দেয় যে যীশু খ্রীষ্ট এই ব্যক্তিতে ঈশ্বর মানুষ (মানবধর্মী) হলেন তাই যীশু খ্রীষ্ট তাঁর নিজের জীবন প্রদান করে আমাদের পাপের জন্য মূল্য দিতে নিজেকে সপে দিতে পেরেছিলেন, তার সেই যোগ্যতা ছিল,


“কিন্তু ঈশ্বর যে আমাদের ভালোবাসেন তার প্রমাণ এই যে, আমরা পাপী থাকতেই খ্রীষ্ট আমাদের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন” (রোমীয় ৫:৮ পদ)।


“যীশু খ্রীষ্টের মধ্যে কোনো পাপ ছিল না; কিন্তু ঈশ্বর আমাদের পাপ তাঁর উপর তুলে দিয়ে তাঁকেই পাপের জায়গায় দাঁড় করালেন, যেন খ্রীষ্টের সংগে যুক্ত থাকবার দরুন ঈশ্বরের পবিত্রতা আমাদের পবিত্রতা হয়” (২করিন্থীয় ৫:২১ পদ)।


ইহুদীরা এ বিষয় একেবারেই প্রত্যাখ্যান করেছে যে খ্রীষ্ট-ই ঈশ্বর ছিলেন কিংবা পাপী মানুষের পাপের জন্য এভাবে তাঁর নিজের বলির প্রয়োজন ছিল।


খ্রীষ্টিয়ান এবং ইহুদীদের মধ্যে সবচেয়ে এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো যীশু খ্রীষ্টকে নিয়েই। যীশু খ্রীষ্টের ব্যক্তিত্ব এবং তাঁর কর্ম-ই হলো প্রধান ও মূখ্য সমস্যা যা খ্রীষ্টিয়ান এবং ইহুদীরা নিজেরা কখনই একমত হতে পারেনি। মথি ১৫:২৪ পদের উত্তরে যীশু বললেন, “আমাকে কেবল ইস্রায়েল-বংশের হারানো মেষদের কাছেই পাঠানো হয়েছে।” যীশু খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে থাকাকালিন তখনকার কিছু ধর্মীয় মহাপুরোহিতরা যীশুকে জিজ্ঞাসা করল “তুমি কি পরমধন্য ঈশ্বরের সেই পুত্র মসীহ্ বা খ্রীষ্ট? যীশু বললেন, ‘আমিই সেই।‘


আপনারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের ডান দিকে মনুষ্যপুত্রকে বসে থাকতে দেখবেন এবং আকাশে মেঘের সংগে আসতে দেখবেন” মার্ক ১৪:৬১-৬২ পদ। কিন্তু ঐ মহাপুরোহিতরা যীশুর কোনো কথাই তারা বিশ্বাস করলো না এমনকি তারা তাঁকে খ্রীষ্ট অর্থাৎ মসিহরূপে গ্রহণও করলো না।


একজন খ্রীষ্ট/মসীহ আগমন সম্পর্কে এই হিব্রু ভাববানী যীশু খ্রীষ্ট নিজেই তা পূর্ণ করেছেন। গীতসংহিতা ২২:১৪-১৮ পদের বর্ণনা আর যীশু ক্রুশকাষ্ঠে মৃত্যুর ঘটনা নিঃসন্দেহে একই ঘটনা।


“আমাকে জলের মত করে ঢেলে ফেলা হয়েছে, আমার সমস্ত হাড়ের জোড়া খুলে গেছে, আমার অন্তর মোমের মত হয়ে আমার ভিতরে গলে গলে পড়ছে। মাটির পাত্রের শুকনা টুকরার মত আমার শক্তি শুকিয়ে এসেছে, আর আমার জিভ তালুতে লেগে যাচ্ছে; তুমি আমাকে কবরে শুইয়ে রেখেছ। আমার চারপাশে একদল দুষ্ট লোক কুকুরের মত করে আমাকে ঘিরে ধরেছে; তারা আমার হাত ও পা বিঁধেছে। আমার হাড়গুলো আমি গুণতে পারি; সেই লোকেরা আমাকে হাঁ করে দেখছে আর আমার দিকে তাকিয়ে আছে। নিজেদের মধ্যে তারা আমার কাপড়-চোপড় ভাগ করছে আর আমার জামার বা কোর্তার জন্য গুলিবাঁট করছে।”


খ্রীষ্ট সম্পর্কে পুরাতন নিয়মের এই সুস্পষ্ট ভাববানী যীশু খ্রীষ্ট ছাড়া অন্য আর কেউ হতে পারেন না যিনি ক্রুশকাষ্ঠে মৃত্যুবরণ করেন, লূক ২৩ অধ্যায় এবং যোহন ১৯ অধ্যায়ের প্রতিটি ঘটনা পূর্ণ করেছেন।


যিশাইয় ৫৩:৩-৬ পদে আছে “লোকে তাঁকে ঘৃণা করেছে ও অগ্রাহ্য করেছে; তিনি যন্ত্রণা ভোগ করেছেন এবং রোগের সংগে তাঁর পরিচয় ছিল। লোকে যাকে দেখলে মুখ ফিরায় তিনি তার মতো হয়েছেন; লোকে তাঁকে ঘৃণা করেছে এবং আমরা তাঁকে সম্মান করিনি। সত্যি, তিনিই আমাদের সব রোগ তুলে নিয়েছেন আর আমাদের যন্ত্রণা বহন করেছেন; কিন্তু আমরা ভেবেছি ঈশ্বর তাঁকে আঘাত করেছেন, তাঁকে মেরেছেন ও কষ্ট দিয়েছেন। আমাদের পাপের জন্যই তাঁকে বিদ্ধ করা হয়েছে; আমাদের অন্যায়ের জন্য তাঁকে চুরমার করা হয়েছে। যে শাস্তির ফলে আমাদের শান্তি এসেছে সেই শাস্তি তাঁকেই দেওয়া হয়েছে; তিনি যে আঘাত পেয়েছেন তার দ্বারাই আমরা সুস্থ হয়েছি। আমরা সবাই মেষের মতো করে বিপথে গিয়েছি; আমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের পথের দিকে ফিরেছি। সদাপ্রভু আমাদের সকলের অন্যায় তাঁর উপর চাপিয়েছেন। এই লেখাগুলো একেবারে যীশু সম্পর্কে হুবহু বর্ণনা ছাড়া অন্য আর কিছুই হতে পারে না।


প্রেরিত পৌল, একজন ইহুদী এবং ইহুদী রীতিনীতি ও নিয়মকানুনে অনুগত ছিলেন আর সেসব পালনে একেবারে শক্তভাবে লেগে থাকতেন। তিনি শত্রুভাবে হঠাৎ ও অপ্রত্যাশিতভাবে খ্রীষ্টের দর্শন পেয়েছিলেন (প্রেরিত ৯:১-৯ পদ) এবং এরপর তিনি খ্রীষ্টের জন্য মস্তবড় সাক্ষ্য বহন করে তার বাকি জীবনটা কাটিয়েছেন এবং নতুন নিয়মের প্রায় অর্ধেক লেখক তিনি হয়েছেন। প্রেরিত পৌল অন্যান্য সমস্ত কিছুর থেকে খ্রীষ্টত্ব এবং ইহুদীর মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে পেরেছিলেন। পৌলের বার্তা কী ছিল? “যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে এই যে সুখবর তাতে আমার কোনো লজ্জা নেই, কারণ এই সুখবরই হলো ঈশ্বরের শক্তি যার দ্বারা তিনি সব বিশ্বাসীদের পাপ থেকে উদ্ধার করেন - প্রথমে ইহুদীদের, তারপর অ-ইহুদীদের” রোমীয় ১:১৬ পদ)।


আমরা যারা যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করি, আমাদের খ্রীষ্টত্বের মূল বুঝতে পারাটা প্রয়োজন। কিছু কিছু খ্রীষ্টিয়ানেরা এ বিষয়ে সচেতন না যে খ্রীষ্টত্বর মূল ছিল ইহুদীদের সংগে। সর্ব প্রথমে ইহুদী ধর্মের সংগে এর অংশ ছিল। কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছা হলো না যে ক্রুশের কর্ম শুধু ইহুদীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকুক, পরিশেষে খ্রীষ্টত্ব হলো এর নিজেম্ব ধর্ম, আর তা সমস্ত মানুষের জন্য। পুরাতন নিয়মের নবিরা বলেছেন এরকম-ই হবে, আর ঈশ্বরের লোকাদের ভিন্ন নামে ডাকা হবে, তাদের আলাদা পরিচয় থাকবে।


যীশু খ্রীষ্টের কারণেই ইহুদীদের মধ্যে এতো পার্থক্য এবং তা এখনো চলে আসছে। যে সব ইহুদীরা যীশুকে প্রত্যাখ্যান করেছে তারা পরিত্রাণের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। বাইবেল স্পষ্টভাবে বলে যে একজনের পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য তাকে অবশ্যই যীশু খ্রীষ্ট বা মসীহর উপর বিশ্বাস করতে হবে। যীশু বিশেষ কয়েকজন ইহুদী নেতাদের বলেছেন, “তাই আমি আপনাদের বলেছি, আপনারা আপনাদের পাপের মধ্যে মরবেন। যদি আপনারা বিশ্বাস না করেন যে, আমিই সেই, তবে আপনাদের পাপের মধ্যেই আপনারা মরবেন” যোহন ৮:২৪ পদ ।


খ্রীষ্ট পৃথিবীর সমস্ত পাপীদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছেন। যদি কোনো ব্যক্তি যীশুর এই মহা বলি প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে তার পরিত্রাণের আর কোনো অর্থই থাকল না। এমনকি পুরাতন নিয়মের ভাববাদীরা তাই শিক্ষা দিয়েছেন।

1,534 views0 comments

Comentários


আমাদেরকে অনুসরণ করুন

আমাদের সামাজিক মিডিয়ায় খুঁজুন
  • Facebook - White Circle
  • YouTube - White Circle
  • Instagram - White Circle
@ekmatroshotto

©2020 by The Only Truth

একমাত্রসত্য creates awareness about Christ followers (“Christians”) in Bangladesh and Bengali speaking people of the world. We also encourage and motivate Churches and Christ followers on evangelism to the other religion followers in their own communities. 

bottom of page