top of page
  • Black Facebook Icon
  • Black YouTube Icon
  • Black Instagram Icon
Search

ইসলাম বনাম খ্রিস্টধর্ম – কেন খ্রিস্টানদের তর্ক নয়, যিশুর সাক্ষ্য দিতে হবে


১. শুরুতেই দুই দিক দুই রাস্তা


ধরুন দুইজন লোক দুইটা আলাদা মানচিত্র নিয়ে একসাথে রওনা হয়েছে। একজনের মানচিত্রে নদী দেখা যাচ্ছে ডানে, আরেকজনেরটায় সেটা বাঁয়ে। এখন তারা তর্ক করছে কে ঠিক। কিন্তু সমস্যা মানচিত্রেই—ভিত্তিটা এক না।

খ্রিস্টান আর মুসলিমদের আলাপও অনেকটা এরকম। তাই তর্কে ফল নেই, কারণ আপনি এক গল্প বলছেন, আর তিনি বলছেন অন্য বইয়ের সম্পূর্ণ আলাদা গল্প।

 

ইসলামের মূল বিশ্বাসের শুরুটাই এমন এক জায়গা থেকে যেখানে বাইবেলকে অবিশ্বস্ত বলা হয়, যিশুকে ঈশ্বর মানা হয় না, আর মুহাম্মদকে সর্বশেষ নবী হিসেবে দেখা হয়। মুসলিমরা বিশ্বাস করে কোরআনই একমাত্র নির্ভুল গ্রন্থ যেটা “তাহরিফ”-এর (corruption) হাত থেকে বাঁচানো হয়েছে, কিন্তু বাইবেল নাকি বিকৃত হয়েছে।


এই বিশ্বাসে বড় কিছু সমস্যা রয়েছে:

  • ঈশ্বর যদি সর্বশক্তিমান হন, তাহলে তিনি কেন তাঁর পবিত্র বাণীকে বিকৃত হতে দিলেন?

  • কোরআনেও বলা আছে যে, ঈশ্বরের বাণী কেউ পরিবর্তন করতে পারে না (সুরা আনআম ৬:৩৪)। তাহলে মুসলিমদের এই “বাইবেল বদলে গেছে” তত্ত্ব নিজের সাথেই বিরোধিতা করে।

  • এরপর প্রশ্ন আসে: যদি বাইবেল বদলে গিয়ে থাকে, তবে কোরআন কেন বারবার তাওরাত, যবূর ও ইনজিলের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে বলেছে?

এই দ্বন্দ্বপূর্ণ অবস্থান বোঝায় যে ইসলাম তার ভিত্তিতেই অস্থির। 


আর খ্রিস্টধর্ম বলে, যিশুর মাধ্যমে ঈশ্বর নিজেই এসেছেন আমাদের কাছে। তাঁর মৃত্যু ও পুনরুত্থান দিয়ে সব কিছু পূর্ণ হয়েছে।

আমরা বিশ্বাস করি—

  • যিশু স্বয়ং ঈশ্বর (যোহন ১:১)

  • বাইবেল ঈশ্বরের অটুট বাণী

  • মুহাম্মদের পরে আর কোনো নবী আসেননি, কারণ যিশুই সবকিছুর শেষ (হিব্রু ১:১–৩)

তাই দুজনের আলোচনায় মাঝপথেই ভিন্নতা এসে যায়। আপনি যদি চেষ্টা করেন যিশুর ঈশ্বরত্ব বোঝাতে, আর উনি বিশ্বাস করেন যিশু শুধু মানুষ—তাহলে সেটা দুজনের দুটো আলাদা বইয়ের গল্প।

তর্ক না করে বরং বলুন, “আমি কেন যিশুকে শুধু নবী না, ঈশ্বর মনে করি।” গল্প বলুন, যুক্তি না।

 

 

২. ঈশ্বর আর আল্লাহ—চরিত্রেই বিশাল পার্থক্য


ইসলামে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বলতে যা বোঝায়, তা হলো একপাক্ষিক আনুগত্য ও ভয়ভীতির ভিত্তিতে পরিচালিত একধরনের দাসত্ব। আল্লাহর ৯৯টি নামে "প্রেমময় পিতা" জাতীয় কিছু নেই। মুসলিমদের দোয়া, নামাজ, ওসব কিছুতেই আল্লাহর কাছে একটা দূরত্ব থেকে আবেদন করা হয়।

ইসলামের চ্যালেঞ্জ এখানে এই যে:

  • ঈশ্বরকে ভালোবাসার পাত্র হিসেবে দেখা যায় না, বরং ভয়ের উৎস হিসেবে দেখা হয়।

  • দাস আর প্রভুর সম্পর্কটা সবকিছুর মূলে—কোনো পারিবারিক, হৃদয়ের সম্পর্ক না।

  • জান্নাতের বর্ণনা শরীরকেন্দ্রিক ভোগবিলাসে পূর্ণ (সুরা ওয়াকিয়া ৫৬:১২–৩৮), যেখানে ঈশ্বরের সাথে চিরকালীন সম্পর্কের কোনো আলোচনা নেই।


কিন্তু খ্রিস্টধর্মে আমরা জানি—ঈশ্বর আমাদের ভালবেসে আগে থেকেই গ্রহণ করেছেন।আমাদের সেবা দরকার নেই, দরকার একটা সম্পর্ক।

ইসলামে স্বর্গ মানে হলো আরাম আর ভোগবিলাস—শরাব, হুর, বিলাসবহুল বাগান।কিন্তু খ্রিস্টধর্মে স্বর্গ মানে ঈশ্বরের সঙ্গে থাকা, যেখানে কোনো কান্না বা কষ্ট থাকবে না (প্রকাশিত বাক্য ২১:৩–৪)।যেখানে সবচেয়ে বড় আনন্দ হবে—যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, তাঁর সাথে চিরকাল থাকা।

তাই যখন কেউ বলেন, “তোমার ধর্মে তো স্বর্গে এত কিছু নেই”—হাসুন, আর বলুন, “আমার স্বর্গে সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো যিশু স্বয়ং।”


৩. শাস্তি, ন্যায়বিচার আর ক্ষমার ব্যাপারে পার্থক্য


ইসলামে দেখা যায়, অনেক শাস্তি বাস্তবায়ন করতে বলা হয় মানুষকে—যেমন রজম (পাথর মারা), চুরির জন্য হাত কাটা, ধর্মত্যাগের জন্য মৃত্যুদণ্ড। অনেক মুসলিম এটা দেখিয়ে বলেন যে ইসলাম "ন্যায়বিচারপূর্ণ", কারণ পাপ করলে শাস্তি নিশ্চিত।

কিন্তু চ্যালেঞ্জগুলো হলো:

  • বিচার মানুষের হাতে থাকলে সেটা ভুল ও পক্ষপাতদুষ্ট হতে বাধ্য।

  • আল্লাহ যদি সর্বশক্তিমান হন, তাহলে কেন তাঁর রাগ বা বিচার তিনি নিজে করেন না?

  • আল্লাহ কেন মানুষকে “শাস্তি দানকারী” বানালেন, প্রেম ও ক্ষমার বাহক না?


খ্রিস্টধর্ম একদম উল্টো কিছু শেখায়:

  • ঈশ্বর নিজেই পাপের শাস্তি নিজের ঘাড়ে নেন—যিশুর ক্রুশবিদ্ধতার মাধ্যমে (ইশাইয় ৫৩:৫)।

  • কোনো খ্রিস্টানকেই বলা হয়নি ঈশ্বরের বদলে কারো বিচার বা শাস্তি করতে।

  • বরং যিশু বলেন, “যে তোমার গালে চড় মারে, তার অন্য গালও এগিয়ে দাও” (লূক ৬:২৯)।

খ্রিস্টধর্মের ন্যায়বিচার ক্ষমা ও আত্মবলিদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়, শাস্তি দিয়ে নয়।


৪. ইসলামে আনুগত্য মানেই দাসত্ব, খ্রিস্টধর্মে তা ভালোবাসার উত্তর


ইসলামে সব কিছু একটা নিয়মের গন্ডিতে—কোনো কাজ কতবার করতে হবে, কোন দোয়া কীভাবে পড়তে হবে, কোন খাবার খাওয়া যাবে না, কিভাবে কাপড় পরা লাগবে—সবকিছু নির্দিষ্ট।

এই নিয়মকেন্দ্রিক চিন্তার চ্যালেঞ্জ হলো:

  • মানুষ নিজের পাপ নিয়ে সারাক্ষণ অনিশ্চিত থাকে—যান্নাতে যাবে কিনা জানা যায় না।

  • ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্যতা কেবল কর্মফল ও আনুগত্য দিয়ে নির্ধারিত।

  • ভালোবাসা সেখানে মূল নয়—ভয় আর বাধ্যবাধকতা প্রধান চালিকাশক্তি।


খ্রিস্টধর্মের বিপরীতে:

  • ঈশ্বর বলেন, “আমি দয়া চাই, বলি নয়” (হোসেয় ৬:৬)।

  • যিশু বলেন, “তোমরা আমার বন্ধু”—না যে আমরা এক সেবক মাত্র (যোহন ১৫:১৫)।

  • খ্রিস্টানদের আনুগত্য আসে সেই প্রেম থেকে যা যিশু আমাদের প্রতি দেখিয়েছেন।

সোজা কথা, আমরা নিয়ম মানি, কারণ আমরা ঈশ্বরকে ভালোবাসি—না যে তাঁর ভয় করি।


৫. তাই তর্ক করে লাভ নেই—সাক্ষ্য দিন, প্রেমে ডাকুন


তর্কে কেউ জেতে না। এমনকি জিতলেও, মন পরিবর্তন হয় না।

আপনি বাইবেলের অনেক আয়াত শেয়ার করতে পারেন, কিন্তু যদি আপনার মুসলিম বন্ধুটি সব কিছু কোরআনের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখে, তাহলে সেই আয়াতগুলো তার কাছে খুব একটা মানে রাখবে না।


তাই করুন যা যিশু করতেন—সাক্ষ্য দিন।

  • বলুন কীভাবে আপনি শান্তি পেয়েছেন।

  • কীভাবে যিশুর প্রেম আপনার মধ্যে আলো জ্বালিয়েছে।

  • কীভাবে ঈশ্বর আপনাকে আপনার পাপ সত্ত্বেও গ্রহণ করেছেন।

তর্ক মন বদলায় না। কিন্তু প্রেম, করুণা, আর আন্তরিকতা—এই জিনিসগুলো মানুষকে ভাবতে বাধ্য করে।

 

শেষ কথা: তুলনা নয়, সম্পর্ক

আপনি কোনো ধর্মকে জেতাতে আসেননি।

আপনি এসেছেন একজনকে চিনিয়ে দিতে—যিনি ঈশ্বর, প্রেমময় পিতা, পরিত্রাতা এবং বন্ধু।

তর্ক নয়, প্রেম। ধর্ম নয়, সম্পর্ক। যিশুই যথেষ্ট।

 
 
 

Recent Posts

See All
আল্লাহ আর ইয়াহওয়ে কি এক?

আমরা প্রায়ই শুনি, “সব ধর্মের ঈশ্বর এক” বা “আল্লাহ আর খ্রিস্টানদের ঈশ্বর একই।” কিন্তু একটু গভীরভাবে ভাবলে দেখা যায়, ইসলামের আল্লাহ এবং...

 
 
 

Comments


আমাদেরকে অনুসরণ করুন

আমাদের সামাজিক মিডিয়ায় খুঁজুন
  • Facebook - White Circle
  • YouTube - White Circle
  • Instagram - White Circle
@ekmatroshotto

©2020 by The Only Truth

একমাত্রসত্য creates awareness about Christ followers (“Christians”) in Bangladesh and Bengali speaking people of the world. We also encourage and motivate Churches and Christ followers on evangelism to the other religion followers in their own communities. 

bottom of page