“বেহেশতের ও দুনিয়ার সমস্ত ক্ষমতা আমাকে দেওয়া হয়েছে।” (#মথি ২৮:১৮)
এমন প্রশ্নের উত্তরে একটি প্রশ্ন দিয়ে আপনার অভিযোগ খন্ডন করছি, আপনি জানেন কি? যীশু বা ঈসাকে?
ঈসা আল্লাহর কালাম, যিনি কালেমাতুল্লা
যে কালাম দিয়ে আল্লাহ সব সৃষ্টি করেছেন
যে কালাম দিয়ে পৃথিবী টিকে আছে
যে কালাম দিয়ে সব সৃষ্টি লালিতপালিত হচ্ছে
যিনি মানুষ হিসাবে পাপিদের বিকল্প কুরবানী
যিনি মৃতদের পুনুরুন্থান হিসাবে আল্লাহর পুত্র
যিনি মসীহ, পাপিদের নাজাত দাদা
যিনি মৃতকে জীবন দেন
যিনি কুমারী মরিয়মের গর্ভে পবিত্র আত্নার শক্তিতে - নারীর বংশ বলে প্রকাশিত
যিনি নবী হিসাবে পাপিদের জন্য এসেছেন
যিনি ঈমাম হিসাবে পাপিদের পক্ষে শরিয়তের সকল দাবি পূর্ণ করে মহা ঈমাম হিসাবে গণ্য
যিনি আল্লাহর রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করছেন -তিনিই পৃথিবীর ও বেহেশতের রাজা
যিনি শয়তান, পাপ ও মৃত্যুকে পরাজিত করেছেন
যিনি তৌরাত শরিফের পূর্ণতাদানকারী
যিনি বেহেশতে হতে এসেছেন
যিনি বেহেশতে চলে গিয়েছেন
যিনি একমাত্র বেহেশতের প্রস্তুত কারক
যিনি দ্বিতীয়ববার আসছেন
যিনি শেষ বিচারের বিচারক
যিনি দ্বৈত স্বভাবের অধিকারী
যিনি আল্লাহ মানব
যিনি মনুষ্যপুত্র
যিনি অদৃশ্য আল্লাহর হুবহু প্রকাশ
যিনি বেহেশতের একমাত্র পথ
যিনি সত্য
যিনি জীবন ও জীবন্ত
যিনি আল্লাহর রহমত
যিনি ইবাদত পাওয়ার যোগ্য
যার ইবাদত ফেরেশতারাও করেন
ঈসা মসীহ বেহেশতে রাজা। তিনি শয়তানের বন্ধিত্ব হতে পাপিদের নিজ রক্ত দ্বারা কিনেছেন। আমরা শয়তান, পাপ ও অনন্ত মৃত্যুর গোলাম ছিলাম, শয়তান আমাদের মালিক ছিলেন। কিন্তু ঈসা যিনি আল্লাহর কালাম, মাংশে মূর্তিমান হয়েছেন পাপিদের উদ্ধার করতে। তিনিই আমাদের বর্তমান মালিক ও অভিভাবক, যিনি প্রভু, সে জন্যই ঈসা বলেছেন আমিও পিতা আমরা এক।
ঈসা বলেন," যে আমাকে গ্রহন করেন, তিনি পিতাকেই গ্রহন করে।
ঈসা বলেন, " যে আমাকে অস্বীকার করেন, সে পিতাকেই অস্বীকার করে।
ঈসা বলেন, " যে আমাকে দেখেছে, সে পিতাকেও দেখেছে।
এখন প্রশ্ন হলঃ সূরা মায়েদা ১১৬ নম্বর আয়াতের কথা কি ঈসার নিজের মুখের স্বীকারোক্তি? না ভাই, এটি ঈসার কথা নয়, ঈসা এখনোই এমন কথা বলতে পারে না। কোরআনের ২৪ জন নবীর কোন কথাই তাদের নিজ মুখের নয়। আমি নিশ্চিত নবীরা শেষ বিচারে এই অভিযোগ কোরআনের লেখকের বিরুদ্ধে করবেন, যে আমাদের নামে যে কথা প্রচার করা হয়েছে তাতে আমাদের অনুমোদন নাই। যদিও অনেক কথা মিল আছে, কিন্তু অমিল বেশি।
যেহেতু কোরআন শরীফে বলা হয় যে আল্লাহ্কে ছাড়া কোন প্রভু বা অধিপতি (রব্ব) নেই, সেহেতু অনেকে ইঞ্জিল পড়ে আপত্তি করে যে ঈসাকে ‘প্রভু’ বলা যাবে না। আসলে এর পিছনে কোরআন শরীফ নিয়ে একটি ভুল ধারণা আছে, কারণ কোরআন শরীফেও ফেরাউনকে “রব্ব” বা প্রভু বলা হয়:
“এবং বহু সৈন্য-শিবিরের অধিপতি ( ‘রাব্ব’) ফির’আওনের প্রতি?” (সূরা ফাজ্র ৮৯:১০)
“প্রভু” হল শুধু সম্মান এবং সমর্পন দেখানোর একটি উপাধি, যেটা বাদশাহ্, মালিক বা আল্লাহ্র ক্ষেত্রে বলা যায়। অবশ্যই চূড়ান্ত অর্থে শুধুমাত্র আল্লাহ্ই অধিপতি বা প্রভু হতে পারে। তবুও, ‘প্রভু’ উপাধির কাছে হযরত ঈসা মসীহ্র একটি বিশেষ দাবি আছে। হযরত ঈসার জন্মে শত শত বছর আগে, তার আগমনের ভবিষ্যদ্বানী হিসেবে জবুর শরীফে বলা হয়েছে যে একজন “মসীহ্” এসে আল্লাহ্র কাছে গোটা দুনিয়ার উপর অধিকার পাবে (জবুর ২:৮)। অর্থাৎ সেই মসীহ্ হবে একজন খলিফা বা প্রতিনিধি বাদশাহ্র মতো।
আল্লাহ্ কাছে তিনি পুরোপুরিভাবে সমর্পিত এবং এইজন্য আল্লাহ্ তাকে সকল মানুষের উপর কর্তৃত্ব এবং প্রভুত্ব দিয়েছেন। মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়ে এবং শয়তানের কার্যকলাপ ধ্বংস করার পরে ঈসা মসীহ্ তার সাহাবীদের বলেছিলেন,
“বেহেশতের ও দুনিয়ার সমস্ত ক্ষমতা আমাকে দেওয়া হয়েছে।” (ইঞ্জিল, #মথি ২৮:১৮)
হযরত ঈসার উপর আল্লাহ্তা’লা এই আশ্চর্য কর্তৃত্ব দিয়েছেন। শুধুমাত্র ঈসার কাছে ‘আল্লাহ্র বাণী’ উপাধি দেওয়া হয়েছে, অর্থাৎ সকল মানব জাতির জন্য তিনিই আল্লাহ্র ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ বা জীবিত বাণী। এবং যেহেতু শুধুমাত্র ঈসা মসীহ্ পুরোপুরি নিষ্পাপ, সেহেতু শুধুমাত্র তাকেই পুরোপুরিভাবে অনুসরণ করা উচিত। এইসব কারণে, হযরত ঈসা মসীহ্কে ‘প্রভু’ বলা জায়েজ, যেমন করে ইঞ্জিলে তাকে প্রায়ই বলা হয়। মনগড়া ধারণা দিয়ে আল্লাহ্র পবিত্র কালাম বিচার করা উচিত নয় বরং আল্লাহ্র কালামের আলোকে আমাদের ভুল ধারণাগুলো দূর করা উচিত।