top of page
  • Black Facebook Icon
  • Black YouTube Icon
  • Black Instagram Icon
Search

সকল নবীরা কি এই পৃথিবীতে কোন্‌ ধর্ম প্রচার করেছিলেন?




প্রিয়পাঠক, আমরা প্রায় শুনি নবীরা বিভিন্ন জাতি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিত্রনের বার্তা প্রচার করেছেন। কিন্তু আসলে নবীরা পরিত্রানের বার্তা মূলত মসীহের আগমন বার্তার ঘোষনা দিয়েছেন যেন মানুষ সেই ভবিষ্যৎ মসীহের উপর ঈমান আনতে প্রত্যাশি হয়। এইসব নবীদের জীবনী, বাণী, ও ইতিহাস মূলত তৌরাত শরীফ, নবীদের কিতাব ও জবুর শরীফে পাওয়া যায়, এইজন্য সেখান থেকেই আমাদের উত্তরটা আসতে হবে – নিজের অনুমান অথবা মতামত নয়। আসলে এই কিতাবগুলো পড়লে দেখা যায় “ধর্ম” (religion) কথাটি একবারই উল্লেখ নেই


আমরা আজকাল বিভিন্ন “ধর্ম” তুলনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি – খ্রীষ্টধর্ম, দ্বীনে-ইসলাম, সনাতন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম। কিন্তু এইসব নবীদের যুগে এইসব আলাদা প্রতিষ্ঠিত “ধর্ম” ছিল না। তাহলে এঁরা কী প্রচার করতেন? আমরা যেমন “ধর্ম”-এর উপরে গুরুত্ব দিই, এঁরা তেমনি মানুষের সঙ্গে আল্লাহ্‌র প্রকাশিত “চুক্তি” (בְּרִיתּ বেরীথ্‌) এর উপরে গুরুত্ব দিতেন। যেমন এইজন্য বাইবেলের প্রধান ভাগ বলা হয় “নতুন ও পুরাতন নিয়ম”- ‘নিয়ম’ এই ক্ষেত্রে বিধান বোঝানো হয় না বরং ‘চুক্তিনামা’ বোঝায়, যেমন ‘Old Testament / New Testament’ এর ক্ষেত্রে টেস্টামেন্ট বোঝায় একটি চুক্তি/ব্যবস্থা/covenant এর দলিল।


নবীদের বাণী বোঝার জন্য এই “চুক্তি” জিনিসটা গভীরভাবে বুঝতে হবে, কারণ সেই নবীদের কথার এটাই ভিত্তি, এটাই মৌলিক বিষয়। এই নবীদের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ মানব জাতির সঙ্গে একটি সম্পর্ক স্থাপন করার জন্যই এই চুক্তিগুলো প্রকাশ করেছেন। এখানে কিতাবুল মোকাদ্দসের সেই ৬টি চুক্তির একটি চার্ট আছে:

১। আদমের সাথে ঈশ্বরের চুক্তি - কর্মচুক্তি - আদিপুস্তক ২:১৬-১৭ । ২। নূহের সাথে ঈশ্বরের চুক্তি - সৃষ্টি নিরাপত্তার চুক্তি - আদিপুস্তক ৯:৮-১৭। ৩। ইব্রাহিমের সাথে ঈশ্বরের চুক্তি - আদিপুস্তক ১৫:১৮;১৭:১-১১। ৪। মুসার সাথে ঈশ্বরের চুক্তি - যাত্রাপুস্তক ৬:২-৮;১৯:৫-৬। ৫। দাউদের সাথে ঈশ্বরের চুক্তি - ২ সামুয়েল ৭:৮-১৬। _________________________________________ এই ৫টি যুক্তিকে পুরাতন চুক্তি বলা হয়

যিরমিয় ৩১:৩১-৩৩সদাপ্রভু বলেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে আমি ইস্রায়েল-কুলের ও যিহূদা-কুলের সহিত এক নূতন নিয়ম স্থির করিব।মিসর দেশ হইতে তাহাদের পিতৃপুরুষদিগকে বাহির করিয়া আনিবার জন্য তাহাদের হস্তগ্রহণ করিবার দিনে আমি তাহাদের সহিত যে নিয়ম স্থির করিয়াছিলাম, সেই নিয়মানুসারে নয়; আমি তাহাদের স্বামী হইলেও তাহারা আমার সেই নিয়ম লঙ্ঘন করিল, ইহা সদাপ্রভু কহেন।কিন্তু সেই সকল দিনের পর আমি ইস্রায়েল-কুলের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, ইহা সদাপ্রভু কহেন, আমি তাহাদের অন্তরে আমার ব্যবস্থা দিব, ও তাহাদের হৃদয়ে তাহা লিখিব; এবং আমি তাহাদের ঈশ্বর হইব, ও তাহারা আমার প্রজা হইবে


এক একটি নতুন চুক্তি আগেকার চুক্তিগুলো বাতিল করেনি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে প্রত্যেকটি চুক্তি শেষ চুক্তি (ঈসা মসীহের) এর মধ্যে অনেকটা পূর্ণতা পায়। এইসব চুক্তির মধ্য দিয়ে আল্লাহ্‌ মানুষকে নাজাত করার জন্য, অর্থাৎ তার রহমতের ব্যবস্থা দেখানোর জন্য তার মহা-পরিকল্পনা তিনি ক্রমাগতভাবে প্রকাশ করেছেন।


যেমন ইবরাহিম (আঃ) এর চুক্তি আদিপুস্তক ১২:১-৩ একটু দেখি। আল্লাহ্‌ নিঃশর্তভাবে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে তিনি ইবরাহিমকে আশীর্বাদ করবেন এবং তার বংশের একজনের মধ্য দিয়ে সমস্ত মানব জাতি আশীর্বাদ পাবে। পয়দায়েশ কিতাবের ইতিহাসে স্পষ্ট করে লেখা আছে যে সেই চুক্তির বংশের লাইন ইসমাইলের দিকে যায়নি বরং ইসহাক, ইয়াকুব, ইউসুফ, ও এহুদার দিকে গেল, এবং শেষ সেই চুক্তি ঈসা মসীহে পূর্ণতা লাভ করল। তার মাধ্যমে সমস্ত জাতি আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়েছে।


অনেকে কিতাব না জানার কারণে একটি ভুল ধারণা রাখে যে এইসব চুক্তির যুগে আলাদা আলাদা নাজাতের নিয়ম ছিল। কিন্তু বাইবেলে সাক্ষ্য হচ্ছে যে আল্লাহ্‌র সর্বযুগে সকল মানুষের জন্য একটাই নাজাতের রাস্তা আছে। যেমন ইব্রাহিম কীভাবে নাজাত পেয়েছেন? তার নেক-আমলের জন্য কি? না, বরং আদিপুস্তক ১৫:৬-এ আছে যে ইব্রাহিম “মাবুদের কথার উপর ঈমান আনলেন আর মাবুদ সেইজন্য তাঁকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করলেন।” কোন্‌ কথার উপর ঈমান আনলেন? আল্লাহ্‌র বলা সেই মসীহের প্রতিজ্ঞার উপর ঈমান, যে আল্লাহ্‌ তার জন্য একটি রহমতের ব্যবস্থা করবেন।


আবার মূসার চুক্তির উদাহরণ দেখি। আমরা মনে করতে পারি যে, তাঁর শরিয়তের মধ্যে অনেকগুলো নিয়ম-কানুন আছে বলে অবশ্যই কাজ দ্বারাই তখনকার মানুষ নাজাত পেত। কিন্তু মূসার শরিয়ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে তার নিয়মগুলো পালনের পুরষ্কার জান্নাত নয় বরং কেনান দেশে সফলতা। মূসার চুক্তির পরেও ইব্রাহিমের চুক্তি চালু ছিল, অর্থাৎ তখনও ইব্রাহিমের মত ঈমানের মাধ্যমে লোকে নাজাত পেত ।


এখন আপনার মূল প্রশ্নে ফিরে যায়। প্রাচীন নবীগণ কোন্‌ ধর্ম প্রচার করেছিলেন? এরা আল্লাহ্‌র সেই চুক্তিগুলো প্রচার করেছিলেন এবং মানুষকে নাজাত দেয়ার জন্য আল্লাহ্‌র মহাপরিকল্পনার কথা প্রচার করছিলেন।


নতুন চুক্তিঃ লুক ২২:২০ আর সেইরূপে তিনি ভোজন শেষ হইলে পানপাত্রটী লইয়া কহিলেন, এই পানপাত্র আমার রক্তে নূতন নিয়ম, যে রক্ত তোমাদের নিমিত্ত পাতিত হয়।


ইব্রীয় ৯:১৫ আর এই কারণ তিনি এক নূতন নিয়মের মধ্যস্থ; যেন, প্রথম নিয়ম সম্বন্ধীয় অপরাধ সকলের মোচনার্থ মৃত্যু ঘটিয়াছে বলিয়া, যাহারা আহূত হইয়াছে, তাহারা অনন্তকালীয় দায়াধিকার বিষয়ক প্রতিজ্ঞার ফল প্রাপ্ত হয়।


পুরাতন ও নতুন চুক্তির মুক্তিজনক একতা উদ্দেশ্য ও বিষয় বস্তু এক। তবে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে চুক্তি করাতে এর ভিন্ন ভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিটি চুক্তির উদ্দেশ্য এক। প্রতিটি চুক্তির বিষয় বস্তু এক আর তা হচ্ছে মুক্তি। ঈশ্বর চুক্তি করেছেন মানুষকে মুক্তি দিতে। তাই চুক্তিগুলোর মধ্যে একতা ও ধারাবাহিকতা আছে। বাইবেলের ইতিহাস ধরে চুক্তিগুলোর উপাদান, অংশ ও বিষয়বস্তু পরিস্কার থেকে পরিস্কারতর হয়ে যীশু খ্রীষ্টেতে পূর্ণতা পেয়েছে।


নতুন চুক্তিতে ঈশ্বরের পরিত্রাণের পরিপূর্ণতা পেয়েছে কেননা যীশু খ্রীষ্ট চুক্তির শর্ত পূর্ণরুপে তবে ব্যর্থ মানুষের পক্ষে পালন করেছেন বলে তিনি চুক্তির পরিপূর্ণতা। তিনি একদিকে পাপ না করে চুক্তির শর্ত ভংগ করেন নি, অন্যদিকে তিনি মানুষের ব্যর্থতার পরিণতি বা শাস্তি হিসাবে মৃত্যু বরণ করেছেন।

বিঃদ্রঃ পুরাতন চুক্তির পূর্ণতা যীশুর রক্তে নতুন চুক্তিতে পাওয়া যায়। যার অর্থ শরিয়ত হইতে রহমতে প্রবেশ করা।

 
 
 

Recent Posts

See All

বড়দিনের আধ্যাত্মিক বার্তা: গীতসংহিতা ২:১-১২ এর অন্তর্দৃষ্টি

গীতসংহিতা ২:১-১২ পদ “জাতিগণ কেন কলহ করে? লোকবৃন্দ কেন অনর্থক বিষয় ধ্যান করে? পৃথিবীর রাজগণ দণ্ডায়মান হয়, নায়কগণ একসঙ্গে মন্ত্রণা করে,...

Comments


আমাদেরকে অনুসরণ করুন

আমাদের সামাজিক মিডিয়ায় খুঁজুন
  • Facebook - White Circle
  • YouTube - White Circle
  • Instagram - White Circle
@ekmatroshotto

©2020 by The Only Truth

একমাত্রসত্য creates awareness about Christ followers (“Christians”) in Bangladesh and Bengali speaking people of the world. We also encourage and motivate Churches and Christ followers on evangelism to the other religion followers in their own communities. 

bottom of page