top of page
  • Black Facebook Icon
  • Black YouTube Icon
  • Black Instagram Icon
Search

মুসলমানরা কেন যীশুর নাম পরিবর্তন করেছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়াচ্ছেন?

Updated: Nov 12, 2021



মুসলমানরা বলেন বাইবেল বিকৃত। তারা আরো বলেন যীশু নামটাও বিকৃত। কিন্তু কেন? আসুন দেখি মুহাম্মদ কি উদ্দেশ্য নিয়ে যীশু নামটা পাল্টে দিয়েছেন। যীশু নামটা এসেছে হিব্রু শব্দ 'ইয়াসুয়া' থেকে। ইয়াসুয়ার আরবি হলো 'ইয়াসু (يَسُوعَ)'। তাই আমরা দেখি আরবি বাইবেলে যীশুকে 'ইয়াসু' বলা হয়। হিব্রু ক্রিয়া, 'ইয়াসা', এর অর্থ 'পরিত্রান করা', 'রক্ষা করা' , 'উদ্ধার করা', ‘নাজাত করা’ বা ‘নাজাতদাতা’। তাই ‘যীশু’ এবং ‘মসীহ্‌’ এই দুই নাম যোগ করলে অর্থ হয় “মনোনীত নাজাতদাতা”।


যীশুর জন্মের আগে একজন ফেরেশতা বিবি মরিয়মের কাছে প্রকাশ করেছিলেন যে পাক-রূহের কুদরতীতে যে সন্তান হবে তার নাম “যীশু” রাখা হবে। এই নাম দেওয়ার কারণ নিয়ে কোন সন্দেহ নাই, কারণ ফেরেশতা এইভাবে বলেছিলেন—


'কিন্তু একথা বিবেচনার পরে, স্বপ্নে প্রভুর এক দূত তাঁর কাছে আবির্ভূত হয়ে বললেন, “দাউদ-সন্তান যোষেফ, তোমার স্ত্রীরূপে মরিয়মকে ঘরে নিতে ভয় পেয়ো না, কারণ তাঁর গর্ভধারণ পবিত্র আত্মা থেকে হয়েছে। তিনি এক পুত্রের জন্ম দেবেন ও তুমি তাঁর নাম যীশু রাখবে, কারণ তিনিই তাঁর প্রজাদের তাদের সব পাপ থেকে পরিত্রাণ দেবেন।” এই সমস্ত ঘটনা ঘটল, যেন ভাববাদীর মুখ দিয়ে প্রভু যা বলেছিলেন, তা পূর্ণ হয়: “সেই কুমারী-কন্যা গর্ভবতী হবে এবং এক পুত্র-সন্তানের জন্ম দেবে, আর তারা তাঁকে ডাকবে ইম্মানুয়েল” নামে, যার অর্থ, “ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন।” ' (মথি ১:২০-২৩)


কিন্তু কোরান এবং মোহাম্মদ 'ইয়াসু' কে ঈসা বলেছেন। এখন দেখি ঈসা নামটা কোথা থেকে এসেছে? কোরানের (আরবি) ঈসা ( عيسى) এসেছে হিব্রু শব্দ 'ঈসাও' (Esau) থেকে। মুহাম্মদ বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে 'ইয়াসু' কে ঈসা বলেছেন। তার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে, সেই কারণ হচ্ছে এই যে, যীশু পাপিদের ত্রাণকর্তা এই সুসমাচারের উপর একটি কালো আবরণ দিয়ে ঢেকে দেওয়ার বৃথা চেষ্টা মাত্র । এই সম্পর্কে যীশু শিষ্যদের শতর্ক করেছেন:


'কারণ ভণ্ড খ্রীষ্টেরা ও ভণ্ড ভাববাদীরা উপস্থিত হয়ে বহু বড় বড় চিহ্ন ও অলৌকিক কর্ম করে দেখাবে, যেন সম্ভব হলে মনোনীতদেরও প্রতারিত করতে পারে। দেখো, ঘটনা ঘটবার পূর্বেই আমি তোমাদের একথা বলে দিলাম। ' (মথি ২৪:২৪-২৫)


এখন আমরা দেখি কিছু ইসলামিক আলেম যীশুর পবিত্রতাকে গোপন করার জন্য মিথ্যাচারের সাহায্য নিচ্ছেন। আসুন দেখি এই তথাকথিত আলেমরা কি বলছেন:


যীশু মদ পান করে মাতাল হতেন? (লূক ৭ঃ ৩৪-৩৫ )


"মনুষ্যপুত্র আসিয়া ভোজন পান করেন, আর তোমরা বল, ঐ দেখ, এক জন পেটুক ও মদ্যপায়ী, করগ্রাহীদের ও পাপীদের বন্ধু। কিন্তু প্রজ্ঞা আপনার সকল সন্তান দ্বারা নির্দ্দোষ বলিয়া গণিত হইলেন।" (লুক ৭:৩৪-৩৫)


এখানে যীশু মদ পান করেন তা লেখা নেই, কিন্তু যীশু ইহুদীদের এই কথা বলেছেন, এটি ইহুদীরা মনে করে কারণ যীশু শিষ্যদের নিয়ে একত্রে ভোজ খেতেন তাই ইহুদীরা যীশু পেটুক ও নিশাখোর মনে করত। আজ যেমন আপনারা ইহুদীদের মত মিথ্যা অপপ্রচার করছেন।


"যীশু বলেন, "তোমাদের মধ্যে কে আমাকে পাপি বলিয়া প্রমাণ করিতে পারে?" (যোহন ৮:৪৬)


যীশু বেশ্যা মেয়েদের তাঁকে স্পর্শ করতে এবং চুম্বন করতে দিতেন, এটি কি পাপ নয়?


প্রিয়পাঠক, আমরা জানি যে, যীশু এসেছেন পাপিদের জন্য, সুতরাং যারা বেশ্যা ও পাপি তারাই শুধু যীশু খ্রীষ্টের কাছে আসবে, পরিত্রান পেতে এটিই তো স্বাভাবিক, তাই নয় কি?


পবিত্র বাইবেলে যীশু খ্রীষ্ট পরিস্কার বলেছেন, তিনি এসেছেন পাপিদের জন্য, পাপিদের পরিত্রাণ করতে। এই কারণে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট পাপিদের সাথে মিশেছেন, তাদের সংগে খাওয়া দাওয়া করেছেন। পাপিদের সংগে চলা ফেরা করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, পাপিদের সংগে মিশলে যে কোন ব্যক্তি পাপি হবেন এমন শিক্ষা বাইবেলে নেই। কিন্তু পাপ মন্দতা থেকে পৃথক থাকতে ঈশ্বর তাঁর লোকদের সব সময় শতর্ক করেছেন। এখন যীশু পাপিদের সাথে মিশতেন এই বিষয়ে যদি কেউ যীশু খ্রীষ্টকে পাপি বলে বিচার শুরু করেন এবং যদি সেই বিষয়ে প্রচার করেন এটি খুবই দুঃখজনক।


যীশু তাহা শুনিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, সুস্থ লোকদের চিকিৎসকে প্রয়োজন নাই, কিন্তু পীড়িতদেরই প্রয়োজন আছে; আমি ধার্ম্মিকদিগকে নয়, কিন্তু পাপীদিগকেই ডাকিতে আসিয়াছি। (মার্ক ২:১৭)


কারণ যাহা হারাইয়া গিয়াছিল, তাহার অন্বেষণ ও পরিত্রাণ করিতে মনুষ্যপুত্র আসিয়াছেন। (লুক ১৯:১০)


আজ বেশ্যারা - যীশুতে পরিত্রাণ পেয়ে স্বর্গে প্রবেশ করছে কিন্তু শরিয়তের আলেমরা তা দেখতে পাচ্ছে না।


যেমন পুরাতন নিয়মে রাহব বেশ্যা রক্ষা পেয়েছিল কিন্তু অন্যরা ধ্বংস হয়েছে।


যীশুর শিক্ষা তুমি পাপকে ঘ্রিণা কর পাপিকে প্রেম কর, যেন পাপি পরিত্রাণ পায়।


যীশু মিথ্যা ওয়াদা ও মিথ্যা ভবিষৎবাণী করতেন?  (মথি ১৬/২৭-২৮, ১৯/২৮; মার্ক২/২৫-২৬,১১/২৩,১৬/১৭-১৮; লূক ১৮/২৯-৩০; যোহন ৩/১৩

মনে করিও না যে, আমি ব্যবস্থা কি ভাববাদিগ্রন্থ লোপ করিতে আসিয়াছি; আমি লোপ করিতে আসি নাই, কিন্তু পূর্ণ করিতে আসিয়াছি। কেননা আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যে পর্য্যন্ত আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত না হইবে, সে পর্য্যন্ত ব্যবস্থার এক মাত্রা কি এক বিন্দুও লুপ্ত হইবে না, সমস্তই সফল হইবে। (মথি ৫:১৭-১৮)


যীশু খ্রীষ্ট ইতিহাসের নিয়ন্ত্রণ কর্তা। দৃশ্য ও অদৃশ্য সকল সৃষ্টির প্রভু। তাঁর সকল ভবিষ্যতদ্বানী পূর্ণতা লাভ করবে। আমরা জানি যীশুর প্রথম আগমনের ৪০০ টি ভবিষ্যৎবাণী ২০০০ বছর আগে পূর্ণ হয়েছে। যে সকল ভবিষ্যৎদ্বাণী এখনো পূর্ণতা পায় নি তা পূর্ণ করতে যীশু দ্বিতীয়বার আবার আসছেন, ধর্যপূর্বক অপেক্ষা করুন।


যীশু নিরপরাধ মানুষকে অভিশাপ দিতেন? (মথি ২৩:৩৫-৩৬)


আমরা জানি পবিত্র বাইবেল বলে সকলেই পাপি -


কেননা সকলেই পাপ করিয়াছে এবং ঈশ্বরের গৌরববিহীন হইয়াছে (রোমীয়. ৩:২৩)


তাই, সমালোচকগন যাদের নিষ্পাপ বলছেন, তারা ঈশ্বরের পবিত্র মন্দিরে ইবাদত না করে ব্যবসার কেন্দ্র করেছেন এটি পাপ, যীশু ইবাদত এর স্থানকে যথাযথ রক্ষা করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এটি অভিষাপ নয়, সংশোধনের জন্য চেতনা দান।


তোমরা কি জান না যে, তোমরা ঈশ্বরের মন্দির, এবং ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের অন্তরে বাস করেন? যদি কেহ ঈশ্বরের মন্দির নষ্ট করে, তবে ঈশ্বর তাহাকে নষ্ট করিবেন, কেননা ঈশ্বরের মন্দির পবিত্র, আর সেই মন্দির তোমরাই। (১ করি ৩:১৬-১৭)


পাপিকে পাপ থেকে চেতনা দেওয়া, মন্দ কাজ থেকে ফিরিয়ে আনা, তাঁকে সংশোধন করা এটি ঈশ্বরের গৌরবের কাজ। যারা এই সব কাজকে পাপ মনে করেন, তারা শয়তানের আত্নায় পরিচালিত, তাই নয় কি?


যীশু খ্রীষ্ট পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের চোর-ডাকাত বলতেন কেন এটি তো অপরাধ, সুতরাং তিনি পাপি?


বাইবেলের বেশ কয়েকটি পদ আছে যা পড়লে খুব সহজে বোঝা যায় যে যীশু খ্রীষ্ট আগেকার নবীদের খুব সম্মান করতেন - আসুন বাইবেল খুলি ও পদ গুলি পড়ি -


মনে করিও না যে, আমি ব্যবস্থা কি ভাববাদিগ্রন্থ লোপ করিতে আসিয়াছি; আমি লোপ করিতে আসি নাই, কিন্তু পূর্ণ করিতে আসিয়াছি। (যেমন মথি ৫:১৭)


তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, দায়ূদ ও তাঁহার সঙ্গীরা ক্ষুধিত হইলে তিনি যাহা করিয়াছিলেন, তাহা কি তোমরা পাঠ কর নাই? (মথি ১২:৩)


সেই স্থানে রোদন ও দন্তঘর্ষণ হইবে; তখন তোমরা দেখিবে, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোব এবং ভাববাদী সকলেই ঈশ্বরের রাজ্যে রহিয়াছেন, আর তোমাদিগকে বাহিরে ফেলিয়া দেওয়া হইতেছে। (লূক ১৩:২৮)


তাহারা উত্তর করিয়া তাঁহাকে বলিল, আমাদের পিতা অব্রাহাম। যীশু তাহাদিগকে বলিলেন, তোমরা যদি অব্রাহামের সন্তান হইতে, তবে অব্রাহামের কর্ম্ম করিতে। কিন্তু ঈশ্বরের কাছে সত্য শুনিয়া তোমাদিগকে জানাইয়াছি যে আমি, আমাকেই বধ করিতে চেষ্টা করিতেছ; অব্রাহাম এরূপ করেন নাই। (যোহন ৮:৩৯ - ৪০)


অতএব বাইবেল হতে এটি পরিস্কার বোঝা যায় যে যীশু খ্রীষ্ট এখানে প্রকৃত নবীদের “চোর ও ডাকাত” বলেন নি, বরং ভণ্ড নবী ও ভণ্ড ‘মসীহ’দের “চোর ও ডাকাত” বলেছিলেন (যারা নবীদের যুগের পরে এসে নিজেকে নবী বা মসীহ্ বলে মানুষকে ঠকিয়েছে)। তেমন ভাবেও নবী ইহিষ্কেল তাদের সমালোচনা করেছিলেন, যারা নিজেকে ইহুদীদের নেতা বা নবী বলে কিন্তু শুধু নিজেকে সেবা করে। যীশু খ্রীষ্ট তাদের ‘চোর’ বলেছিলেন কারণ তারা অনেক সময় কৌশলে মানুষকে আকৃষ্ট করতেন এবং ‘ডাকাত’ বলতেন কারণ ভণ্ড নেতারা হিংস্রতার  ব্যবহার ও শিক্ষা দেন


অতএব যীশু সমালোচনার উর্দ্ধে, তিনি সিদ্ধ ও পবিত্র, শরিয়তের পূর্ণতাদানকারী, সুতরাং শরিয়তের সাধ্য নেই যীশুকে পাপি বলার আর আপনি তো দূরের কথা, যীশু আপনার পাপের ত্রাণকর্তা, যীশুতে বিশ্বাস করে নিজ পাপের ক্ষমা গ্রহন করুন, ইহাই স্বর্গের সুসংবাদ।


যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বর মানব। তিনি যখন দ্বিতীয় বার আসবেন, তখন সকলের সামনে সেই সব ভন্ড নবী ও ভন্ড শিক্ষকদের বিচার করবেন, এই বিচার আমরা দেখতে পাব!


যীশু খ্রীষ্ট কেন অহেতুক কিছু অবুঝ প্রাণীকে হত্যা করল?


"কেননা তিনি তাহাকে বলিয়াছিলেন, হে অশুচি আত্মা, এই ব্যক্তি হইতে বাহির হও। তিনি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার নাম কি? সে উত্তর করিল, আমার নাম বাহিনী, কারণ আমরা অনেকগুলি আছি। পরে সে বিস্তর বিনতি করিল, যেন তিনি তাহাদিগকে সেই অঞ্চল হইতে পাঠাইয়া না দেন। সেই স্থানে পর্ব্বতের পার্শ্বে এক বৃহৎ শূকরপাল চরিতেছিল। আর তাহারা বিনতি করিয়া কহিল, ঐ শূকরগুলির মধ্যে প্রবেশ করিতে আমাদিগকে পাঠাইয়া দিউন। তিনি তাহাদিগকে অনুমতি দিলেন। তখন সেই অশুচি আত্মারা বাহির হইয়া শূকরদের মধ্যে প্রবেশ করিল; তাহাতে সেই শূকরপাল, কমবেশ দুই হাজার শূকর, মহাবেগে দৌড়িয়া ঢালু পাড় দিয়া সমুদ্রে গিয়া পড়িল, এবং সমুদ্রে ডুবিয়া মরিল।" (মার্ক ৫: ৯-১৩)


প্রভু যীশু এই পৃথিবীতে এসেছেন শয়তানের সমস্ত বাহিনীকে ধ্বংস করতে। শয়তানের বাহিনী একটি লোকের মধ্যে বাস করছিল, তারা স্বেচ্ছায় ঐ শুকুরের পালের মধ্যে প্রবেশের অনুমতি চেয়েছিল এখানে যীশুর কোন দোষ নেই, কেননা যীশু এসেছেন পাপিদের পরিত্রাণ করতে। একজন পাপি মানুষকে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। আর ঐ শুকুরের মালিক যীশুর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেন নি, সুতরাং যীশু দোষী নন।


আমরা দেশীয় রাষ্ট্রের আইন দ্বারাও যীশুকে অভিযুক্ত করতে পারি না। কেননা শুকুরেরা স্বেচ্ছায় পানিতে গিয়ে পড়েছেন। শয়তানের উপস্থিতি মানুষরা চোখে দেখতে পারে না। শয়তান মন্দ আত্না, মন্দ শক্তি, ঈশ্বরের প্রতিপক্ষ। সমস্ত সৃষ্টির সেরা, মানুষ। ঈশ্বর নূহ ও তার পরিবারের ৮ জনকে রক্ষা করার দ্বারা, সমস্ত জগৎ ধ্বংস করেছিলেন। এই বিষয়ে কে ঈশ্বরকে দোষী করবেন? ঈশ্বর লুত ও অব্রাহামকে রক্ষার জন্য, সোদম ও ঘোমরা পুরো শহর অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস করেছিলেন, এই বিষয়ে কে ঈশ্বরকে দোষী করবেন?


আর যীশু এই পৃথিবীর সকল সৃষ্টির বিচারক। যীশুর প্রথম আগমন পরিত্রাণের জন্য আর দ্বিতীয় আগমন জীবিত ও মৃতদের বিচার করার জন্য। সুতরাং ঈশ্বর মানব যীশুকে দোষী করা যায় না।


যীশু বলেন, "তোমাদের মধ্যে কে আমাকে পাপী বলিয়া প্রমাণ করিতে পারে?" (যোহন ৮:৪৬)


যীশু আমাদের পাপে দোষীকৃত যেন আমরা ঈশ্বরের ন্যায়বিচারের দ্বারা পরিত্রাণপ্রাপ্ত হই।


কারণ খ্রীষ্টও একবার পাপসমূহের জন্য দুঃখভোগ করিয়াছিলেন- সেই ধার্মিক ব্যক্তি অধার্মিকদের নিমিত্ত- যেন আমাদিগকে ঈশ্বরের নিকট লইয়া যান। তিনি মাংসে হত, কিন্তু আত্মায় জীবিত হইলেন। (১পিতর ৩:১৫) 


যীশু খ্রীষ্ট তাঁর মাকে সাক্ষাৎ কালে অস্বীকার করতেন, এটি কি পাপ নয়?


প্রিয়পাঠক, যীশু খ্রীষ্ট তার মাকে অস্বীকার করেছেন এমন কোন শিক্ষা পবিত্র বাইবেলে নেই। যে সকল মুসলিম ভাইয়েরা যীশুকে পাপি প্রমাণ করতে নানাভাবে মন্দ চেষ্টা করছেন, তারা নিজেরাই পাপে পতিত হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে। কেননা ঈশ্বর পুত্র যীশু খ্রীষ্ট, পাপহীন সিদ্ধ মানুষ।


ঈশ্বর মোশীকর্তৃক দশ আজ্ঞা দিয়েছেন, সেখানে পঞ্চম আজ্ঞায় তিনি বলেছেন, "তুমি তোমার আপন পিতা ও মাতাকে সমাদর করিও" এটি ব্যবস্থার আজ্ঞা তাই সকল ঈশ্বর ভক্তপ্রাণকে এই আদেশ মান্য করা কর্তব্য। যীশু খ্রীষ্ট পবিত্র বাইবেলে পরিস্কার বলেছেন, "তিনি  ব্যবস্থা ও নবীদের কিতাব বাতিল করতে আসেন নি কিন্তু তা পূর্ণ করতে এসেছেন।" এর অর্থ হচ্ছে যে, যীশু পঞ্চম আজ্ঞা পিতাকে ও মাতাকে সম্মান করেই পঞ্চম আজ্ঞার পূর্ণতা দিয়েছেন।


যদি, যীশু খ্রীষ্ট পিতা ও মাতাকে অসম্মান ও অস্বীকার করতেন তাহলে খ্রীষ্ট কখনই, মৃত্যুর হুলকে পরাজিত করতে পারতেন না। তিনি মৃতদের হইতে পুনুরুন্থিত হতে পারতেন না। কিন্তু খ্রীষ্টের ক্রুশীয় মৃত্যু ও পুনুরুন্থান দ্বারা তিনি স্বপরাক্রমে ব্যবস্থার পূর্ণতাদানকারী হিসাবে ঈশ্বরের ডান পার্শ্বে অবস্থান করছেন। 


অতএব, আমরা পবিত্র বাইবেল থেকে যোহন ২:১-১২ পদে যীশু তাঁর মায়ের আদেশে কান্না নগরের বিয়ের ভোজ এর সম্মান রক্ষা করেছেন। তিনি সময় না হওয়া শর্তেও মায়ের আদেশ পালন করে, মাকে উপযুক্ত সম্মান দিয়েছেন। যীশু খ্রীষ্ট তাঁর মাকে অসম্মান ও অস্বীকার করেছেন এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।


যেখানে কোরান নিজেই যীশু খ্রীষ্টকে পবিত্র পুত্র বলে সার্টিফিকেট দিচ্ছেন, সেখানে আপনার মিথ্যা অভিযোগ খুব সহজেই খারিজ হয়ে যায়, তাই নয় কি?


যীশু ছিলেন পৃথিবীর অশান্তি, বাইবেল তা পরিস্কার বলছেন এখন আপনি কি বলবেন?


প্রিয়পাঠক, যীশু এই পৃথিবীতে শান্তি দিতে শুধু আসেন নি। কেননা যীশু খ্রীষ্টকে গ্রহনের জন্য  অনেককে অশান্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। যীশু পরিস্কার ভাবে বলেছেন, এই বিষয়ে যেন জেনেশুনে লোকেরা তাঁকে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন আমি যখন মুসলিম ধর্মীয় বিশ্বাস পরিত্যাগ করে যীশুকে আমার পাপময় জীবনের মুক্তিদাদা ও জীবনের প্রভু হিসাবে গ্রহণ করেছিলাম, তখন আমার উপর নিদারুণ যন্ত্র‌ণা, কষ্ট, ক্লেষ, অশান্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। সত্যিই সেই পরিস্থিতি ছিল অশান্তিতে ঘেরা। আমার নিকট দুটি সিদ্ধান্ত ছিল, একটি পিতা মাতা, আন্তীয় স্বজন, আমার ধর্ম ইসলাম দ্বিতীয়টি ছিল, ঈশ্বরের পুত্র আমার ত্রানকর্তা যীশু। আমি সেই সময়ে ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্টকেই বাঁচাই করেছিলাম। সত্য হচ্ছে এই সেই অশান্তি অল্প সময়ের জন্য ছিল এখন প্রভুতে আমি সত্যিই খুব স্বর্গীয় শান্তিতে আছি, এই শান্তি জগতের নয় ঈশ্বরের সাথে পূর্ণমিলনের শান্তি। আসুন আমরা যীশু খ্রীষ্টের এই কথার তাৎপর্য অনুসন্ধান করি।


"মনে করিও না যে, আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে আসিয়াছি; শান্তি দিতে আসি নাই, কিন্তু খড়গ দিতে আসিয়াছি। কেননা আমি পিতার সহিত পুত্রের, মাতার সহিত কন্যার, এবং শাশুড়ীর সহিত বধূর বিচ্ছেদ জন্মাইতে আসিয়াছি;" (মথি ১০:৩৪-৩৫)


ভাই, আপনি যীশুর এই কথার ভিন্ন অর্থ করতে জোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু পারছেন না, তাই আপনাকে বলছি একটি উপায় আছে, তা হল যদি আপনি মুসলিম হন, তাহলে তর্কের খাতিরে কিছুদিন নিজেকে খ্রিষ্টান বলে পরিচয় দেওয়া শুরু করুন, এবং যীশুকে ক্রুশে হত প্রভু বলুন - তা হলে যীশুর কথার পরিস্কার তাৎপর্য কি তা  আপনি বুঝতে পারবেন।


পরিবারের শুধু একজন সদস্য ঈশ্বরের মনোনিত পথে [ যীশুতে - খ্রিষ্টান হয়ে ] গেলে অবশ্যই অনেক দূঃখজনক অমিল সৃষ্ট হয় এবং অনান্য সদস্য সেই ব্যক্তির উপর অনেক চাপ এবং জুলুম ও নির্যাতন করে।


খরুগ বা “তলোয়ার” দিয়ে যীশু খ্রিষ্ট রূপকভাবে এই অমিল বোঝাচ্ছেন। লূক ১২:৫১ থেকে বোঝা যায় যে এই কথার অর্থ শুধু অমিল। একই ভাবে হিব্রু ৪:১২ পদে খরুগ বা  ‘তলোয়ার’ শব্দ রূপকভাবে শুধু ‘অমিল’ বোঝাচ্ছে। যীশু খ্রিষ্ট যে তলোয়ারের হিংস্রতা উৎসাহিত করছেন তার কোন প্রশ্নই আসে না—যীশু  কোনদিন তলোয়ার ব্যবহার করেন নি এবং তার শিষ্যদের হিংস্রতা থেকে দূরে থাকার হুকুম দিয়েছিলেন:


“ছোরা যারা ধরে তারা ছোরার আঘাতেই মরে।“ মথি ২৬:৫২


এমনকি, খ্রিষ্টান চার্চ ও মিশন প্রথম দুই শতাব্দী ধরে তারা সব রকম হিংস্রতার এতো বিপক্ষে ছিলেন যে রোমীয় সমাজ তাদেরকে এইজন্য তুচ্ছ করতেন। তারা অত্যাচারিত হলেও অনেক বৃদ্ধিলাভ করলেন এবং কখনও প্রতিশোধ নেননি বা কোন রাজনৈতিক আন্দোলন করেন নি। যীশু  নিজেই বললেন -


“আমার রাজ্য এই দুনিয়ার নয়। যদি আমার রাজ্য এই দুনিয়ার হত তবে আমি যাতে ইহুদী নেতাদের হাতে না পড়ি সেইজন্য আমার লোকেরা যুদ্ধ করত; কিন্তু আমার রাজ্য তো এখানকার নয়।” (যোহন ১৮:৩৬)


“তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছে, ‘চোখের বদলে চোখ এবং দাঁতের বদলে দাঁত।’ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের সংগে যে কেউ খারাপ ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে কিছুই কোরো না; বরং যে কেউ তোমার ডান গালে চড় মারে তাকে অন্য গালেও চড় মারতে দিয়ো।” (মথি ৫:৩৯-৪০)


#মূলকথাঃ যদি কোন পরিবারের একজন সদস্য খ্রিষ্টান হয়, সেখানে এক নিষ্ঠুর নির্যাতন শুরু হয়। একজনের  খ্রিষ্টান হওয়ার কারণে পুরো পরিবার সমাজ চ্যুত হয়, এই যাতনার মধ্যে দিয়েই একজন নতুন খ্রিষ্টানকে বিশ্বাসে বেড়ে উঠতে হয়। যীশু পরিস্কার বলেছেন আমার জন্য তোমাদের, নির্যাতিত হতে হবে, দুঃখ ও কষ্ট ভোগ করতে হবে, সুতরাং পৃথিবীতে যীশুর শিষ্যদের শান্তি নেই বললেই চলে। এমন পরিস্তিতিকে গ্রহন করেই যীশুর শিষ্য হতে হবে।


যীশু আপনাকে, পাপের ক্ষমা দেন, ঈশ্বরের সাথে পূর্ণমিলন করেন, ঈশ্বরের জন্য নির্যাতন ভোগ করতে বলেন, অন্যর জন্য কাজ করতে বলেন নিজের জন্য নয়। সুতরাং যারা জাগতিক সুখ ও শান্তি অন্বেষণ করেন তারা যীশুর শিষ্য হতে পারবেন না।


"কেহই দুই কর্ত্তার দাসত্ব করিতে পারে না; কেননা সে হয় ত এক জনকে দ্বেষ করিবে, আর এক জনকে প্রেম করিবে, নয় ত এক জনের প্রতি অনুরক্ত হইবে, আর এক জনকে তুচ্ছ করিবে; তোমরা ঈশ্বর এবং ধন উভয়ের দাসত্ব করিতে পার না।" (মথি ৬:২৪)


"হে ব্যভিচারিণীগণ, তোমরা কি জান না যে, জগতের মিত্রতা ঈশ্বরের সহিত শত্রুতা? সুতরাং যে কেহ জগতের মিত্র হইতে বাসনা করে, সে আপনাকে ঈশ্বরের শত্রু করিয়া তুলে।" (যাকোব ৪:৪)


এতএব উপরোক্ত আলোচনা হইতে এটি পরিস্কার যীশু শিষ্য হওয়ার আগ মহুর্তে এটি শতর্ক করেছেন যে, আপনাকে অশান্তি ও যাতনা ভোগ করতে হবে।যীশুর জন্য অশান্তি ভোগ করবেন না কি পরিবারের সংগে জাগতিক সুখ ভোগ করবেন?


ভাই, জীবন আপনার সিদ্ধান্তও আপনার - অপপ্রচার নয় বরং যীশুতে সত্য অনুসন্ধান করুন।



প্রিয়পাঠক, আপনারা জানেন মুসলিম ভাইয়েরা খ্রীষ্ট ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর ১৩৮০ বছর যাবৎ আক্রমণ করে চলেছেন। সমগ্র পবিত্র বাইবেলের শিক্ষার উপরে তাদের আক্রমণ অব্যাহত আছে। কারণ, যীশু খ্রীষ্টের পরিত্রাণের সুসমাচার যেন এই পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত পৌছাতে না পারে! কিন্তু আমরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ ও গৌরব করি, কেননা ঈশ্বরের অনুগ্রহ অপ্রতিরোধ্য, শয়তান এই সুসমাচার প্রতিরোধ করতে সব সময় ব্যর্থ।



 
 
 

Recent Posts

See All
বড়দিনের আধ্যাত্মিক বার্তা: গীতসংহিতা ২:১-১২ এর অন্তর্দৃষ্টি

গীতসংহিতা ২:১-১২ পদ “জাতিগণ কেন কলহ করে? লোকবৃন্দ কেন অনর্থক বিষয় ধ্যান করে? পৃথিবীর রাজগণ দণ্ডায়মান হয়, নায়কগণ একসঙ্গে মন্ত্রণা করে,...

 
 
 

Comentários


আমাদেরকে অনুসরণ করুন

আমাদের সামাজিক মিডিয়ায় খুঁজুন
  • Facebook - White Circle
  • YouTube - White Circle
  • Instagram - White Circle
@ekmatroshotto

©2020 by The Only Truth

একমাত্রসত্য creates awareness about Christ followers (“Christians”) in Bangladesh and Bengali speaking people of the world. We also encourage and motivate Churches and Christ followers on evangelism to the other religion followers in their own communities. 

bottom of page