আমার কাছে মনে হয়, যিশাইয় ছিলেন, সকলের চেয়ে মহান ভাববাদী। কিন্তু কিভাবে যিশাইয় এমন ঈশ্বরের লোকে পরিণত হয়েছিলেন? যিশাইয়-এর ষষ্ঠ অধ্যায়ে, আমাদের কাছে এর উত্তর আছে।
১'যে বৎসর ঊষিয় রাজার মৃত্যু হয়, আমি প্রভুকে এক উচ্চ ও উন্নত সিংহাসনে উপবিষ্ট দেখিলাম; তাঁহার রাজবস্ত্রের অঞ্চলে মন্দির পূর্ণ হইয়াছিল। ২তাঁহার নিকটে সরাফগণ দণ্ডায়মান ছিলেন; তাঁহাদের মধ্যে প্রত্যেক জনের ছয় ছয় পক্ষ, প্রত্যেকে দুই পক্ষ দ্বারা আপন মুখ আচ্ছাদন করেন, দুই পক্ষ দ্বারা চরণ অচ্ছাদন করেন, ও দুই পক্ষ দ্বারা উড্ডীন হন। ৩আর তাঁহারা পরস্পর ডাকিয়া বলিতে লাগিলেন,
‘পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র, বাহিনীগণের সদাপ্রভু;
সমস্ত পৃথিবী তাঁহার প্রতাপে পরিপূর্ণ।’
৪তখন ঘোষণাকারীর রবে শিলামূল সকল কাঁপিতে লাগিল, ও গৃহ ধূমে পরিপূর্ণ হইতে লাগিল।
৫ তখন আমি কহিলাম, হায়, আমি নষ্ট হইলাম, কেননা আমি অশুচি-ওষ্ঠাধর মনুষ্য এবং অশুচি-ওষ্ঠাধর জাতির মধ্যে বাস করিতেছি; আর আমার চক্ষু রাজাকে, বাহিনীগণের সদাপ্রভুকে, দেখিতে পাইয়াছে।
৬পরে ঐ সরাফগণের মধ্যে একজন আমার কাছে উড়িয়া আসিলেন, তাঁহার হস্তে একখানি জ্বলন্ত অঙ্গার ছিল, তিনি যজ্ঞবেদির উপর হইতে চিমটা দ্বারা তাহা লইয়াছিলেন। ৭আর তিনি আমার মুখে তাহা স্পর্শ করাইয়া কহিলেন, দেখ, ইহা তোমার ওষ্ঠাধর স্পর্শ করিয়াছে, তোমার অপরাধ ঘুচিয়া গেল ও তোমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত হইল।
৮পরে আমি প্রভুর রব শুনিতে পাইলাম; তিনি বলিলেন, আমি কাহাকে পাঠাইব? আমাদের পক্ষে কে যাইবে? আমি কহিলাম, এই আমি, আমাকে পাঠাও। '
যিশাইয় ৬:১-৮
যুবক যিশাইয় রাজা উষীয়কে ভালবাসতেন, যিনি একজন অতি উত্তম এবং সম্মানীয় রাজা ছিলেন। কিন্তু এখন সেই উত্তম রাজা মারা গিয়েছেন। সেই উত্তম রাজা মারা যাওয়াতে এখন যিশাইয়ের কি হবে? আমার মনে হয় আমাদের অনেকের মত এই যুবক অনুভব করেছিলেন। আপনি নিরাশ হচ্ছেন যে আমাদের মন্ডলী শেষ হয়ে গেল। কিন্তু ঈশ্বর যিশাইয়ের সাথে সর্বব্যাপী ছিলেন না। ঈশ্বরের এই দর্শন তার আত্মাকে দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছিল। যিশাইয় একটি আশাহীন নিরাশায় পতিত হননি। পরিবর্তে, ঈশ্বরের দর্শন তাকে একটি পৃথক উপায়ে দৃঢ়ভাবে ধরে রেখেছিল। তিনি বলেছিলেন,
“হায়, আমি নষ্ট হইলাম, কেননা আমি অশুচি-ওষ্ঠাধর মনুষ্য, এবং অশুচি-ওষ্ঠাধর জাতির মধ্যে বাস করিতেছি; আর আমার চক্ষু রাজাকে, বাহিনীগণের সদাপ্রভুকে, দেখিতে পাইয়াছে” (যিশাইয় ৬:৫)।
এটি ছিল যুবক যিশাইয়ের জন্যে একটা আত্মিক সাফল্য! এটা একটা সাফল্য যা আপনিও অনুভব করতে পারেন। কিন্তু আপনাকে অবশ্যই বাকি যেকোন কিছুর চাইতে আরও বেশি করে ঈশ্বর কামনা করতে হবে! আপনাকে মন্ডলী ছেড়ে যেতে হবে না, কারণ আপনারা ঈশ্বরকে চান। আর যদি ঈশ্বরকে না চান এর কারণ হলো যে আপনারা এমন কিছু পেয়েছেন যা তারা ঈশ্বরের তুলনায় অধিক চেয়েছিলেন… যখন তাদের পুরানো স্বভাব মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল তারা ঈশ্বর থেকে মুখ ফিরিয়েছিলেন এবং তাদের মন্ডলী থেকে চলে গেছিলেন। ঈশ্বরবিহীন অল্পবয়সী নারী ও পুরুষের সাথে তারা সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। তারা জাগতিক বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। তারা সেই চাকরি গ্রহণ করেছিলেন যার মধ্যে ইশ্বরকে সন্তুষ্ট করবার এবং তাঁর গৌরব করবার কোন সুযোগ ছিল না। তারা জগতে ফিরে গিয়েছিলেন।
তারা সেটা পাওয়ার জন্যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছিলেন যা তারা সবথেকে বেশি করে চেয়েছিলেন… আমি প্রতারণা করতে অস্বীকার করেছিলাম এবং এই শিক্ষার দ্বারা তাদের নিন্দা করেছিলাম যে আপনি একজন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হতে পারেন এবং এই বর্তমান জগতকে ভালবাসেন, আপনি এটা করতে পারেন না। হ্যাঁ, আপনি কপট হতে পারেন এবং জগতকে ভালবাসতে পারেন। আপনি একজন প্রতারক পালক হতে পারেন এবং জগতকে ভালবাসতে পারেন। আপনি একজন সস্তা আধুনিক সুসমাচার সংক্রান্ত প্রচারক হতে পারেন এবং জগতকে ভালবাসতে পারেন। কিন্তু জগতকে ভালবেসে আপনি একজন প্রকৃত বাইবেল ভিত্তিক খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হতে পারেন না|।
আমার মতে, আজকের দিনে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একক প্রয়োজনীয়তা হল সেই চিন্তাভাবনাশূন্য, স্বল্পজ্ঞানী সুসমাচার সংক্রান্ত প্রচারকদের ঈশ্বরের একটি দৃষ্টিভঙ্গী সহ উচ্চ আঘাতে ভূপাতিত করা এবং মন্দির পূর্ণ করার পরম্পরা সহ তাদের উঁচুতে তোলা।
এই রকমের একটি ইশ্বরের দর্শন ছাড়া আমরা আমাদের নিজেদের কৌশলে পড়ে থাকি, এবং জোর করে মন্ডলীর লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সস্তা ও চটকদার কর্মতৎপরতা নিয়ে আসি… সংকীর্ণ হওয়ার ভয়ে আমরা এত ভীত যে সমস্ত জাগতিকতার প্রতি আমরা আমাদের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এটা কেবলমাত্র আত্মিক দুঃখজনক ঘটনার দিকে চালিত হয়…ঈশ্বরের প্রতি এর মানসিকতায়, জগতের প্রতি এর মনোভাবে এবং পাপের প্রতি এর আচরণে সুসমাচার সংক্রান্ত প্রচার কমে যায়।
৫ নং পদটি লক্ষ্য করুন,"তখন আমি কহিলাম, হায়, আমি নষ্ট হইলাম, কেননা আমি অশুচি-ওষ্ঠাধর মনুষ্য, এবং অশুচি-ওষ্ঠাধর জাতির মধ্যে বাস করিতেছি; আর আমার চক্ষু রাজাকে, বাহিনীগণের সদাপ্রভুকে, দেখিতে পাইয়াছে” (যিশাইয় ৬:৫)।
এটা একমাত্র তখনই হয়েছিল যখন যুবক যিশাইয় ঈশ্বরের অগ্নি দ্বারা শুচি হয়েছিলেন “তোমার অপরাধ ঘুচিয়া গেল ও তোমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত হইল” (যিশাইয় ৬:৭)।
এখন ৮ নং পদটি দেখুন, “পরে আমি প্রভুর রব শুনিতে পাইলাম; তিনি বলিলেন, আমি কাহাকে পাঠাইব? আমাদের পক্ষে কে যাইবে? আমি কহিলাম, এই আমি, আমাকে পাঠাও” (যিশাইয় ৬:৮)।
আমাদের এই বিশ্বের মন্ডলীগুলো তাদেরকে হারিয়েছে যারা মিশনারী হতে ইচ্ছুক ছিলেন না। এটা আমার প্রার্থনা যে এই এখন এখানে উপস্থিত প্রত্যেক ব্যক্তি একজন মিশনারীতে পরিণত হবেন। তৃতীয় বিশ্বের মিশনারীদের সুসমাচার প্রচারে সাহায্য করতে
(১) আত্মা জয় করার দ্বারা;
(২) আমাদের বিশ্ব-ব্যাপী মিশনের জন্যে প্রার্থনা করার দ্বারা;
(৩) আমাদের ধর্ম্মোপদেশগুলিকে, এই ধর্ম্মোপদেশ সমেত, প্রেরণ করার প্রতি আমাদের ইন্টারনেট মিশনকে সাহায্য করার জন্যে আপনি এবং আমি সমগ্র বিশ্বে মিশনারী হতে পারি।
আজকে একজন মিশনারী পালক আমাদের সুযোগগুলির বিষয়ে বলেছেন, “একটা বিশ্বব্যাপী উদ্দেশ্য সহ আমাদের অবশ্যই বিশ্বব্যাপী খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হতে হবে কারণ আমাদের ঈশ্বর হলেন একজন বিশ্বব্যাপী ঈশ্বর।” আপনি কি সেই ভাইয়ের সাথে উত্তর দেবেন, “হ্যাঁ, আমি তাই করব, সবসময়”?
এই আহবান নবী যিশাইয় আজ আমাকে আপনাকে করছেন, আসুন আমরা যীশু খ্রীষ্টের রক্তের সুসমাচার নিয়ে পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ি, যীশুর জন্য যাতনা ভোগ করি। আমরা পিতা ঈশ্বরকে বলি এই আমি, আমাকে পাঠাও।
Comments