“মেঘের মধ্যে” করে আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য “আকাশে” আসবেন (#১থিষলনীকীয় ৪:১৭ পদ)।
প্রিয়পাঠক ভাই ও বোনেরা র্যাপচার শব্দটি বাইবেলের মধ্যে ঘটা বা বিদ্যমান থাকা কোন শব্দ নয়। এটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ থেকে যার অর্থ “বহন করে নিয়ে যাওয়া”, পরিবহন করা বা সুযোগ পেয়ে গ্রহণ করা। “বহন করে নিয়ে যাওয়া” বা “আকাশে মিলিত হওয়া” (র্যাপচার)- এই ধারণাটি পবিত্র বাইবেলে স্পষ্টভাবে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
মন্ডলীকে তুলে নেওয়া এমন একটি বিষয় যেখানে ঈশ্বর মহাকষ্টের সময়ে এই পৃথিবীতে তাঁর ন্যায়বিচার পরিপূর্ণ করতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমস্ত বিশ্বাসীদের তাঁর কাছে তুলে নেবেন বা নিজের কাছে গ্রহণ করবেন।
'দুজন মানুষ মাঠে কর্মরত থাকবে; একজনকে গ্রহণ করা হবে, অন্যজন পরিত্যক্ত হবে। দুজন মহিলা একটি জাঁতা পেষণ করবে; একজনকে গ্রহণ করা হবে, অন্যজন পরিত্যক্ত হবে। “সেই কারণে সতর্ক থেকো, কারণ তোমরা জানো না, কোন দিন তোমাদের প্রভু এসে পড়বেন। কিন্তু এ বিষয় বুঝে নাও; গৃহের কর্তা যদি জানতে পারত, রাতের কোন প্রহরে চোর আসছে, তাহলে সে সজাগ থাকত এবং তার গৃহে সিঁধ কাটতে দিত না। তাই তোমরাও প্রস্তুত থেকো, কারণ যখন তোমরা প্রত্যাশা করবে না, সেই মুহূর্তেই মনুষ্যপুত্র আসবেন। ' (#মথি২৪:৪0-৪৪)
র্যাপচার বা আকাশে তুলে নেওয়াকে প্রাথমিকভাবে #১থিষলনীকীয় ৪:১৩-১৮ এবং #১করিন্থীয় ১৫:৫০-৫৪ পদের মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে। যারা খ্রীষ্টে বিশ্বাসী এবং তাঁর জন্য মৃত্যুবরণ করেছেন ঈশ্বর তাদের প্রত্যেককে পুনরুত্থিত করবেন, তাদের মহিমাপূর্ণ দেহ দান করবেন এবং যে সব বিশ্বাসীরা জীবিত আছেন তাদের সঙ্গে মৃত বিশ্বাসীদের তাঁর কাছে তুলে নেবেন। তিনি এ সময় জীবিত বিশ্বাসীদেরও মহিমাপূর্ণ দেহ বা জীবন দান করবেন।
“জোর গলার আদেশের সঙ্গে এবং প্রধান দূতের ডাক ও ঈশ্বরের তূরীর ডাকের সঙ্গে প্রভু যীশু নিজেই স্বর্গ থেকে নেমে আসবেন। খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত থেকে যারা মারা গেছেন এ সময় তারাই প্রথমে জীবিত হয়ে উঠবেন। তারপরে আমরা যারা জীবিত ও অবশিষ্ট থাকব, আমাদেরও আকাশে প্রভুর সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য আগে যারা জীবিত হয়ে উঠেছে তাদের সঙ্গে মেঘের মধ্যে তুলে নেওয়া হবে। আর এভাবেই আমরা চিরকাল প্রভুর সঙ্গে থাকব” (#১থিষলনীকীয় ৪:১৬-১৭ পদ)।
এই র্যাপচার বা আকাশে তুলে নেওয়ার মধ্যে থাকবে অনন্তকালের জন্য আমাদের দেহকে ঠিক রাখতে এই দেহের তাৎক্ষণিক পরিবর্তন বা রূপান্তর।
“আমরা জানি, খ্রীষ্ট যখন প্রকাশিত হবেন, তখন আমরা তাঁরই মত হব, কারণ তিনি আসলে যা, সেই চেহারাতেই আমরা তাঁকে দেখতে পাব” (#১যোহন ৩:২ পদ)।
আকাশে তুলে নেওয়া (র্যাপচার) খ্রীষ্টের দ্বিতীয় আগমন থেকে ভিন্ন বা এদের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। র্যাপচারে প্রভু যীশু
র্যাপচার হলো “মেঘের মধ্যে” করে আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য “আকাশে” আসবেন (#১থিষলনীকীয় ৪:১৭ পদ)।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় আগমনে প্রভু যীশু পৃথিবীতে নেমে আসবেন এবং জৈতুন পাহাড়ের উপর দাঁড়াবেন। ফলস্বরূপ, ঈশ্বরের শত্রুদের পরাজিত করতে বৃহৎ ভূমিকম্প হবে (#সখরিয় ১৪:৩-৪ পদ)।
আকাশে তুলে নেওয়া (র্যাপচার) মতবাদটি পুরাতন নিয়মে শিক্ষা দেওয়া হয়নি। এজন্য পৌল এটিকে ‘রহস্য’ (গুপ্ত সত্য) বলে আখ্যায়িত করেছেন যা এখন প্রকাশিত হয়েছেঃ
“আমি তোমাদের একটা গুপ্ত সত্যের কথা বলছি, শোন। আমরা সবাই যে মারা যাব তা নয়, কিন্তু বদলে যাব। এক মুহূর্তের মধ্যে চোখের পলকে, শেষ সময়ে তূরীর আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে আমরা সবাই বদলে যাব। সেই তূরী যখন বাজবে তখন মৃতেরা এমন অবস্থায় জীবিত হয়ে উঠবে যে, তারা আর কখনও নষ্ট হবে না; আর আমরাও বদলে যাব” (#১করিন্থীয় ১৫:৫১-৫২ পদ)।
র্যাপচার বা আকাশে তুলে নেওয়া হলো একটি মহিমাপূর্ণ বিষয় যার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই ইচ্ছা বা আকাঙ্খা থাকা উচিত। পরিশেষে আমরা পাপ থেকে মুক্ত হব। আমরা চিরকালের জন্য ঈশ্বরের উপস্থিতিতে থাকব। র্যাপচারের অর্থ এবং কার্য়পরিধি নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। ঈশ্বর এমনটি প্রত্যাশা করেন না। বরঞ্চ, আকাশে তুলে নেওয়া (র্যাপচার) বিষয়টি হওয়া উচিত একটি আশাপূর্ণ এবং সান্ত্বনা দানকারী মতবাদ।
ঈশ্বর চান যেন
“আমরা এই সব কথা বলে একে অন্যকে সান্ত্বনা দিই” (#১থিষলনীকীয় ৪:১৮ পদ)।
Comments