প্রিয়পাঠক, পবিত্র আত্মার সেই স্বর্গীয় নিঃস্বার্থ প্রেম ছাড়া মন্ডলী কখনোই এই পৃথিবীকে জয় করতে পারে না। তাই আসুন আমরা পবিত্র বাইবেল থেকে ১ করি ১৩:১-৩ পদ পাঠ করি -
"যদি আমি মনুষ্যদের, এবং দূতগণেরও ভাষা বলি, কিন্তু আমার প্রেম না থাকে, তবে আমি শব্দকারক পিত্তল ও ঝম্ঝম্কারী করতাল হইয়া পড়িয়াছি।আর যদি ভাববাণী প্রাপ্ত হই, ও সমস্ত নিগূঢ়তত্ত্বে ও সমস্ত জ্ঞানে পারদর্শী হই, এবং যদি আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস থাকে যাহাতে আমি পর্বত স্থানান্তর করিতে পারি, কিন্তু আমার প্রেম না থাকে, তবে আমি কিছুই নহি। আর যথাসর্বস্ব যদি দরিদ্রদিগকে খাওয়াইয়া দিই, এবং পোড়াইবার জন্য আপন দেহ দান করি, কিন্তু আমার মধ্যে প্রেম না থাকে, তবে আমার কিছুই লাভ নাই।"
বিখ্যাত ধর্মতত্ত্ববিদ ডব্লিউ. ই. ভাইন বলেছিলেন যে নিঃস্বার্থ প্রেম হচ্ছে ‘‘খ্রীষ্টধর্মের চারিত্রিক শব্দ।’’ এর অর্থ আত্ম-দানমূলক প্রেম। যীশু সেই সময়ে এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন যখন তিনি তাঁর প্রথম শিষ্যের প্রতি বলেছিলেন। যীশু বলেছিলেন,
‘‘এক নূতন আজ্ঞা আমি তোমাদিগকে দিতেছি, তোমরা পরস্পর প্রেম কর; আমি যেমন তোমাদিগকে প্রেম করিয়াছি, তোমরাও তেমনি পরস্পর প্রেম কর। তোমরা যদি আপনাদের মধ্যে পরস্পর প্রেম রাখ, তবে তাহাতেই সকলে জানিবে যে, তোমরা আমার শিষ্য’’ (যোহন ১৩:৩৪-৩৫)।
প্রেরিতগণ প্রেমের এই আদেশ সরাসরি আমাদের প্রভুর নিকট হইতে গ্রহণ করেছিলেন, এবং পরবর্তীতে তাহারা এই প্রেমের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন সমগ্র জগতে সুসমাচারের ফলস্বরূপ, ‘‘দেখ খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা কেমন একে অপরকে প্রেম করেন!’’ বাক্যটি [খ্রীষ্ট-অবিশ্বাসীগণ] হইতে প্রশংসার বৈশিষ্ট্যে পরিণত হইয়াছিল। কিন্তু বর্তমানে মন্ডলীতে ‘‘একে অপরকে প্রেম করেন’’ এই কথাটি একটি শ্লোগান মাত্র যাহা মন্ডলীগুলি যান্ত্রিকভাবে উচ্চারণ করিয়া থাকে, তাই নয় কি?
আমরা মন্ডলীর ইতিহাস থেকে এটি খুব ভালভাবে জানি যে প্রেরিতদের মধ্যে পরস্পরকে প্রেম করার সেই ক্ষমতা সেই সকল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের ছিল তার কারণে খ্রীষ্টধর্ম পরজাতীয় রোমীয়দের প্রতি আবেদন জানিয়েছিল। আজ মন্ডলী পরস্পরকে প্রেম করা ছাড়া এই জগতের অবিশ্বাসীদের জয় করতে পারে না। যীশু প্রেমহীন মন্ডলীকে অভিযোগ করছেন,
"তথাপি তোমার বিরুদ্ধে আমার কথা আছে, তুমি আপন প্রথম প্রেম পরিত্যাগ করিয়াছ। অতএব স্মরণ কর, কোথা হইতে পতিত হইয়াছ, এবং মন ফিরাও ও প্রথম কর্ম সকল কর; কিন্তু যদি মন না ফিরাও, আমি তোমার নিকটে আসিব ও তোমার দীপবৃক্ষ স্বস্থান হইতে দূর করিব।" (প্রকাশিত বাক্য ২:৪-৫)
আজ দুঃখজনক হলেও এটিই সত্য যে, বাংলাদেশের মন্ডলীগুলো যীশুর প্রতি সেই প্রথম প্রেম প্রকাশ করতে ভুলে গেছেন। তারা এখন জগতের প্রতি প্রেমে আসক্ত, মন্ডলীর এই অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন।
Comentarios