প্রিয়পাঠক, আমি বৃহত্তম জনগোষ্ঠী থেকে আসা একজন খ্রীষ্টান, যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচারের জন্য আহত। আমি সর্বদিক দিয়ে অযোগ্য একজন ব্যক্তি, তবে ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা আমাকে প্রতিদিন সুসমাচার প্রচারের জন্য ব্যবহার করছেন।কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলেও এটি সত্য যে, এই গ্রুপের দুই একজন ট্রেডিসন্যাল খ্রীষ্টান আমাকে মুসলিমদের দালাল বলছেন। ঈশ্বরের বাক্যের সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে যদি আমাকে গালি খেতে হয়, তা হলে আমি বলবো, এটি আমার প্রাপ্য আর তা আমি পেয়েছি। আমি আরো অধিক পরিমানে সুসমাচার প্রচার করতে উৎসাহিত হচ্ছি। তাই আসুন এই চিন্তা মাথায় নিয়ে আমরা পবিত্র বাইবেল থেকে প্রেরিত ২:৪৬-৪৭ পদ পাঠ করি -
'‘আর তাহারা প্রতিদিন একচিত্তে ধর্ম্মধামে নিবিষ্ট থাকিয়া এবং বাটীতে রুটি ভাঙ্গিয়া উল্লাসে ও হৃদয়ের সরলতায় খাদ্য গ্রহণ করিত; তাহারা ঈশ্বরের প্রশংসা করিত, এবং সমস্ত লোকের প্রীতির পাত্র হইল| আর যাহারা পরিত্রাণ পাইতেছিল, প্রভু দিন দিন তাহাদিগকে তাহাদের সহিত সংযুক্ত করিতেন’’ (প্রেরিত ২:৪৬-৪৭)।
আমাদের বাংলাদেশের মন্ডলীগুলির ঐক্যহানি ঘটছে এবং মৃত্যু হচ্ছে। মন্ডলী তাদের ১৪ থেকে ২৮ বছর বয়সী যুবকদের 75% এরও বেশি সদস্যদের হারিয়েছেন। ১৯৭১ সাল হইতে আজ ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০ খ্রীষ্টিয় মন্ডলীর ইতিহাস বহু বছর ধরে এটাই আমাদের বলে আসছে।পারিবারিক জীবনের উপরে রক্ষণশীল প্রটেষ্টান্ট মন্ডলীগুলো বলেছে, ‘‘সুসমাচার-সংক্রান্ত গৃহে প্রতিপালিত শিশুদের মধ্যে [প্রায়] ৭৫% শিশু তাদের বয়স ১৮ হওয়ার পূর্বেই মন্ডলী ত্যাগ করে চলে যায়, আর মন্ডলীতে ফিরে আসে না"। কেননা এটি খুব ভাল করেই আমাদের জানা আছে যে আমাদের মন্ডলীগুলি জগৎ থেকে খুব কমই যুবকদের জয় করতে পারে। মন্ডলীর বৃদ্ধির ৯০% হয়ে থাকে সদস্যপদের স্থানান্তর হইতে, এটি মন্ডলীর সদস্য পরিবর্তন মাত্র প্রকৃত পরিবর্তন নয়। আমরা যে কেবলমাত্র নতুন আকর্ষণ করিতে পারি না [মন্ডলীর প্রতি] তাহাই নহে, আমাদের যারা আছেন তাহাদেরও ধরে রাখতে পারি না। গত পাঁচ বৎসর বাংলাদেশের মন্ডলীগুলির প্রায় অর্ধেক মন্ডলী মন পরিবর্তন বৃদ্ধির মাধ্যমে খুব সামান্য নতুন সদস্য যোগ করিতে পারে নাই...মন্ডলীগুলির ৯৮% বৃদ্ধি পায় নাই অথবা [লোক] হারাইয়াছে সেই সমাজে যেইস্থানে তাহারা পরিষেবা দান করেন...প্রবণতাটি স্পষ্টতই নিম্নগামী, এবং এই গতিতে, [খ্রীষ্টধর্মের এই ‘বিদ্যমানতা’ বিপন্ন]।
এবার দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ অঞ্চলের মন্ডলীগুলোর দিকে দেখুন। প্রটেষ্টান্ট মন্ডলীগুলি প্রায় শত শত সদস্য হারিয়েছেন [গত বৎসরে], যাহা বিগত বছরগুলোর চেয়ে অধিক। বিগত ৫ বৎসরে ব্যাপ্তিস্ম দান ৬ জনে নেমে এসেছে, যাহা ২০১৭সালের পরে গত বৎসরে সর্বনিম্ন হয়েছে। মন্ডলীর এই অবস্থা আমার হৃদয় ভগ্ন করে যে আমাদের সম্প্রদায়ের মূল বিষয় হচ্ছে পতনসমূহের মধ্যে একটি ‘সত্য এই যে, আমাদের মন্ডলীতে আমরা কম লোক যারা কম অর্থ দিচ্ছে কারণ আমরা খ্রীষ্টের প্রতি লোকদের জয় করতেছি না এবং আমাদের প্রভুর আধ্যাত্মিক নিয়ম শৃঙ্খলায় আমরা তাহাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারছি না। ঈশ্বর আমাদের ক্ষমা করুন...প্রথম-শতাব্দীর মন্ডলীতে শিষ্যত্ব যেরূপ ছিল...সেই বিষয়ে গুরুত্ব দান করিতে ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করুন।
এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশে মন্ডলীগুলির একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন, হতাশাব্যঞ্জক চিত্র প্রদর্শন করছে। তারা নিজেদের সদস্যদের হারাচ্ছে, এবং দিশাহারা জগৎ থেকে খুব কম কাউকে জয় করছে। এমনকী প্রাচুর্য্যপূর্ণ মন্ডলীগুলিও দিশাহারা জগৎ থেকে খুবই সামান্য পরিমানে মন পরিবর্তনকারীকে যুক্ত করছে। এই হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশ এবং প্রটেষ্টান্ট জগতের মন্ডলীগুলির দুঃখজনক চিত্র। এবার আমাদের মন্ডলীগুলির সঙ্গে প্রেরিত পুস্তকে বর্ণিত প্রাচীন মন্ডলীগুলির তুলনা করুন। আমি পাঠ্যাংশটি আবার পড়ব,
‘‘আর তাহারা প্রতিদিন একচিত্তে ধর্ম্মধামে নিবিষ্ট থাকিয়া এবং বাটীতে রুটি ভাঙ্গিয়া উল্লাসে ও হৃদয়ের সরলতায় খাদ্য গ্রহণ করিত; তাহারা ঈশ্বরের প্রশংসা করিত, এবং সমস্ত লোকের প্রীতির পাত্র হইল| আর যাহারা পরিত্রাণ পাইতেছিল, প্রভু দিন দিন তাহাদিগকে তাহাদের সহিত সংযুক্ত করিতেন’’ (প্রেরিত ২:৪৬-৪৭)।
কি বৈসাদৃশ্য! তারা আনন্দে পূর্ণ ছিলেন! তারা প্রতিদিন পরস্পর মিলিত হতেন! তারা ক্রমাগত ঈশ্বরের গৌরব করেই চলতেন! ‘‘আর যাহারা পরিত্রাণ পাইতেছিল, প্রভু দিন দিন তাহাদিগকে তাহাদের সহিত সংযুক্ত করিতেন’’ (প্রেরিত ২:৪৭)।
প্রেরিতদের কার্য্য বিবরণী পুস্তক হচ্ছে সেই স্থান যেখানে আমাদের যেতেই হবে। এটি হচ্ছে টনিক [সেই স্বাস্থ্যবর্দ্ধক ঔষধ], এটি হচ্ছে নবশক্তি লাভের স্থান, যেস্থানে আমরা প্রাচীন মন্ডলীর মধ্যে ঈশ্বরের প্রাণ স্পন্দিত হচ্ছে এটির উপলব্ধি করবো প্রথম শতাব্দীর মন্ডলীর আনন্দ, প্রবল আগ্রহ এবং শক্তির বিষয়ে পাঠ করে আমাদের হৃদয় রোমাঞ্চিত হয়! তাই নয় কি?
Comments