একজন পাপি ব্যক্তি যখন যীশুকে ত্রাণকর্তা ও জীবনের প্রভু হিসাবে গ্রহন করেন তখন তিনি ঈশ্বরের নিকট ধার্মিক হিসাবে গৃহীত হন। এর অর্থ হল তিনি পাপি কিন্তু যীশুতে বিশ্বাসের কারণে ঈশ্বর এমনভাবে গ্রহন করেছেন যে তার আর কোন পাপের অভিযোগ নেই। তিনি ঈশ্বরের নিকট ন্যায্যতা হিসাবে গৃহীত। এই পবিত্র হিসাবে গৃহীত হওয়ার পরে পবিত্রকৃতকরণের মধ্যে জীবনযাপন শুরু হয়। এটি পবিত্র আত্মার কাজ যা ন্যায্যতা পবিত্রকৃতকরণের জীবন, যার দ্বারা একজন খ্রীষ্টান ঈশ্বরের গৌরবের জন্য ব্যবহারিত হন।
“কেননা যাহারা মাংসের বশে আছে তাহারা মাংসিক বিষয়ে ভাবে; কিন্তু যাহারা আত্মার বশে আছে তাহারা আত্মিক বিষয় ভাবে। কারণ মাংসের ভাবে মৃত্যু; কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি। কেননা মাংসের ভাব ঈশ্বরের প্রতি শত্রুতাঃ কেননা তাহা ঈশ্বরের ব্যাবস্থায় বশীভূত হয় না, বাস্তবিক হইতে পারেও না। আর যাহারা মাংসের অধীনে থাকে তাহারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। কিন্তু তোমরা মাংসের অধীনে নও, আত্মার অধীনে রহিয়াছ, যদি বাস্তবিক ঈশ্বরের আত্মা তোমাদিগতে বাস করেন। কিন্তু খ্রীষ্টের আত্মা যাহার নাই সে খ্রীষ্টের নয়” (#রোমিয় ৮:৫-৯)
এই পদটি তুলনা করে যারা মাংসিক মনোভাবাপন্ন এবং সেই সঙ্গে যারা আত্মিক মনোভাবাপন্ন। ছয় নম্বর পদটির দিকে দৃষ্টিপাত করুন। "মাংসের ভাব মৃত্যু; কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি” (#রোমিয় ৮:৬)
এখানে আমাদের থেমে গিয়ে অনুভব করা দরকার “মাংসিক মনোভাবাপন্ন” ব্যাক্তিরা খ্রীষ্টিয়ান নয়। “মাংসিক” শব্দটা গ্রীক ভাষাতে অনুবাদ করা হয়েছে “সারক্স।” ইহার অর্থ হল “মাংস।” “মাংসিক মনোভাবাপন্ন” কথার অর্থ হল মাংসের নিয়ন্ত্রণে থাকা। এখানে পল যা বলেছেন, তা লক্ষ্য করুন “মাংসের ভাব হল মৃত্যু।” সুতরাং আধুনিক সময়ের যে চিন্তাধারা তা হল “মাংসিক খ্রীষ্টিয়ানেরা” সম্পূর্ণ ভাবেই মাংসিক। এখানে পল যা বলেছেন তা হল যারা খ্রীষ্টিয়ান ও যারা খ্রীষ্টিয়ান নয় তাদের মধ্যে পার্থক্য।
আর সেটা হল, তিনি এখানে তিন ধরনের লোকের কথা বলছেন না কিন্তু কেবল দু ধরনের লোকের কথা বলছেন। নির্দিষ্ট ভাবে এখানে তিনি বলছেন যে কিভাবে ‘মাংসিক খ্রীষ্টিয়ান’ প্রভুর জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ শিষ্য হয়ে উঠবার জন্য তার নিম্নতর অঙ্গীকারের থেকে আরো কতোটা উর্দ্ধেই না তাকে উঠতে হবে। এখানে পৌল এই পদগুলিতে দুই ধরনের খ্রীষ্টিয়ানের কথা বলছেন না। তিনি বলেন, “তারা যারা মাংসিক” তাদের “মাংসিক” খ্রীষ্টিয়ান বলে অভিহিত করা হয়, আর তাই ইহা হল এক প্রকার ভুল অনুবাদ বা ব্যাখ্যা... আর [তারা] যে খ্রীষ্টিয়ান এই বিষয়ে জেনে নেওয়াটা একেবারেই অসম্ভব” এই বিষয়ে আমি দৃঢ় প্রত্যয় কেননা এই দুই ধরনের খ্রীষ্টানের চিন্তাধারা (যাদের একজন মাংসিক ও অন্যজন আত্মিক) তা সরাসরি ভাবেই “সিদ্ধান্তবাদ” নামক মতবাদ থেকে এসেছে।
“সিদ্ধান্তবাদ” এক প্রকার ভ্রান্ত মতবাদ থেকে উঠে এসেছে এই বিষয়ের প্রতি ব্যাখ্যা করার জন্য কেননা এই সমস্ত লোকেরা যারা “এক সিদ্ধান্ত” নিয়েছে কিন্তু তারা নারকীয় ভাবেই পাপপূর্ণ জীবন যাপনে লিপ্ত আছেন। “সিদ্ধান্তবাদী” এই বিষয়কে এই ভাবে বলার দ্বারা ব্যাখ্যা করেন সেই সমস্ত “মাংসিক খ্রীষ্টিয়ান”-আর তাদের মধ্যে প্রয়োজন রয়েছে যেন আরো বেশি করে “অনুবর্তনমূলক” কাজ আমরা করি, আর তাদের “শিক্ষা” দিতে হবে যেন তারা আত্মিক খ্রীষ্টিয়ান হয়ে উঠতে পারে। সেই সমস্ত কিছুই আসলে এক ভ্রান্ত শিক্ষা আর আমাদের মন্ডলীগুলোকে ক্ষতি করার জন্য ইহা ভীষণ ভাবে কার্য্য করে চলেছে। যাদের আমরা “মাংসিক খ্রীষ্টিয়ান” বলে থাকি তারা বাস্তবে কোন খ্রীষ্টিয়ানই নয়- আরা তা অন্তত প্রকৃত বাক্যের দিক থেকে। আমাদের মধ্যে ড্রাগে আসক্ত ব্যাক্তিরা রয়েছে যাদের আমরা “মাংসিক খ্রীষ্টিয়ান” বলে অভিহিত করি। আমাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা মণ্ডলীতে যোগদান করেনা তাদেরও “মাংসিক খ্রীষ্টিয়ান” বলে দাবী করতে পারি।
লয়েড-জোনসের কমেন্ট্রি বা ব্যাখ্যামূলক বইটি পড়েন! আর তখনি ইহা এই যে “দু ধরনের খ্রীষ্টিয়ান” রয়েছে সেই ভ্রান্ত মতবাদকে পরিষ্কার করে দেবে। সেই সঙ্গে, যখন এই প্রকার নামধারী “মাংসিক খ্রীষ্টিয়ান” তাদের জীবনকে পুণরায় উৎসর্গ করে তখন ইহার বিচারকে মুদ্রাঙ্কিত করে তোলে- কেননা পরিত্রাণ কেবল মাত্র “পুণরায় সমর্পিত বা উৎসর্গীকৃত” হওয়ার দ্বারা আসে না। “কেননা তোমাকে অবশ্যই নূতন জন্ম লাভ করতে হবে” (#যোহান ৩:৭)।
সেখানে বহু লক্ষাধিক বহু খ্রীষ্টান অন্যান্যরা এক জঘন্য পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তাদের প্রায় সময়েই হারানো পুত্রের দলে ফেলা হয়, যাদের এই ভাবে বলা হয় যে তারা “মাংসিক খ্রীষ্টিয়ান” যে বা যারা তার ও তাদের জীবনকে “পুণরায় উৎসর্গীকৃত” করেছে। কিন্তু হারানো পুত্রের যে নিজ পিতা তিনি বলেন যে তার পুত্র হারিয়ে গিয়েছিল। পিতা বললেন, “এই পুত্র হারাইয়া গিয়াছিল”(#লুক ১৫:২৪)। হারানো পুত্র হল “হারিয়ে যাওয়া” লোকেরা যেভাবে পরিত্রাণ লাভ করেছে তার একটা চিত্র, সে তার জীবনকে পক্ষান্তরে পুণরায় উৎসর্গ করছে না! এখন ছয় পদের প্রতি আলোকপাত করুন।
“কারণ মাংসের ভাব মৃত্যু; কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি” (#রোমিয় ৮:৬)
আমাদের অতি অবশ্যই সেই চিন্তাধারা থেকে যুক্তি থাকতে হবে যা হল “মাংসিক” খ্রীষ্টিয়ান। এখানে প্রেরিত প্রকৃত খ্রীষ্টিয়ানের সঙ্গে যিনি খ্রীষ্টিয়ান নন সেই বিষয়ে তুলনা করছেন। আর এই বিষয়টাই পল এই পদে বলছেন। “কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি” (#রোমিয় ৮:৬ খ ভাগ)। এর পরে পল বলেছেন, “কিন্তু তোমরা মাংসের অধীনে নও, আত্মার অধীনে রহিয়াছ, যদি বাস্তবিক ঈশ্বরের আত্মা তোমাদিগতে বাস করেন। কিন্তু খ্রীষ্টের আত্মা যাহার নাই সে খ্রীষ্টের নয়” (#রোমিয় ৮:৯)।
যদি কোন ব্যাক্তির মধ্যে পবিত্র আত্মা না থাকে তবে সেই ব্যাক্তি খ্রীষ্টিয়ান নয়। এখানে যে বিষয়ে তুলনা করা হচ্ছে যারা “মাংসে আছে” এবং যারা “আত্মায়” আছেন, এদের মধ্যে যারা উদ্ধারলাভ করেছে ও যারা হারিয়ে গিয়েছে। আপনি যখন কনভার্ট বা পরিবর্তিত হলেন, তখন আপনি আর “মাংসের মধ্যে” নয়। পরিবর্তন লাভের মধ্য দিয়ে আপনি হঠাৎ করেই “আত্মায় জাত” হলেন। ঠিক সেই মুহুর্তে, আপনি নুতন জন্ম লাভ করলেন। আর #রোমিয় ৮:৯ এই ভাবে শেষঃ “খ্রীষ্টের আত্মা যার নাই সে খ্রীষ্টের নয়।” যদি কারোর মধ্যে খ্রীষ্টের আত্মা বিরাজমান নেই, তবে সেই ব্যাক্তি কোন মতেই খ্রীষ্টের নয়।
এখন, ইহা কেমনভাবে ঘটে সেই বিষয়ে আপনার উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই। যে মুহুর্তে আপনি অনুতাপ করে যীশুতে নির্ভর করেন তখন “খ্রীষ্টের আত্মা” (সেই পবিত্র আত্মা) আপনার হৃদয়ে প্রবেশ করে আর আপনাকে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রতি একত্রিত করেন। আর এই কারণেই ইহা বলা মূর্খতা যে, “কি ভাবে আমি খ্রীষ্টের কাছে আসতে পারি?” ইহা এমন কিছু নয় যেটা আপনাকে করতে হয়। ইহা হল সেই পবিত্র আত্মা যিনি আপনাকে পাপের বিষয়ে চেতনা প্রদান করেন।
এই বিষয়টা যখন ঘটে তখন আপনি আপনার “মাংসিক মনে” আপনার পুরাতন সত্বায় পীড়িত হয়ে পড়েন। মাংসিক ভাবে চিন্তা করার ও জীবন যাপন করার বিষয়টা আপনার কাছে প্রভেদ স্থাপন করতে শুরু করে। এরপরে আপনি যখন খ্রীষ্টের ওপরে নির্ভর করেন তখন পবিত্র আত্মা আপনাকে তাঁর প্রতি একত্রিত করে। লোকেদের আমি এই ভাবে বলতে শুণেছি, “আমার কি হয়েছিল, তা আমি জানতাম না কিন্তু এখন সেই বিষয়টা আমার কাছে খুবই পরিষ্কার। এখন আমি যীশুতে নির্ভর করি।” পবিত্র আত্মা আপনাকে যখন যীশুতে এক করেন তখনই তা হয়। ইহা হল পুণরুত্থিত খ্রীষ্টের সঙ্গে ঐশ্বরিক মানুষের সম্পর্ক! কেবলমাত্র পবিত্র আত্মাই সেটা আপনার জন্য করতে পারেন।
“এই বাণী আমরা তাঁর কাছ থেকে শুনে তোমাদের কাছে ঘোষণা করছি: ঈশ্বর জ্যোতি, তাঁর মধ্যে অন্ধকারের লেশমাত্র নেই। তাঁর সঙ্গে আমাদের সহভাগিতা আছে, এমন দাবি করেও যদি অন্ধকারে চলি, তবে আমরা মিথ্যা কথা বলি, সত্যে জীবনযাপন করি না। কিন্তু তিনি যেমন জ্যোতিতে বিদ্যমান, আমরা যদি তেমনই জ্যোতিতে বিচরণ করি, তাহলে পরস্পরের সঙ্গে আমাদের সহভাগিতা আছে এবং তাঁর পুত্র যীশুর রক্ত সব পাপ থেকে আমাদের শুচিশুদ্ধ করে। আমরা যদি নিজেদের নিষ্পাপ বলে দাবি করি, তাহলে আমরা আত্ম-প্রতারণা করি এবং আমাদের মধ্যে সত্য বিরাজ করে না। আমরা যদি আমাদের পাপগুলি স্বীকার করি, তিনি বিশ্বস্ত ও ন্যায়পরায়ণ, তাই তিনি আমাদের সব পাপ ক্ষমা করে সমস্ত অধার্মিকতা থেকে শুচিশুদ্ধ করবেন। আমরা যদি বলি “পাপ করিনি,” আমরা তাঁকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করি এবং আমাদের জীবনে তাঁর বাক্যের কোনও স্থান নেই।”(#1যোহন ১:৫-১০)।
পবিত্রকৃতকরণ স্বভাবতই সৎকর্মের জীবনে পরিচালনা দেয়। এগুলোকে পবিত্রকৃতকরণের ফল বলা যায়। সৎকর্ম শুদ্ধির কাজ নয়, কিন্তু এমন কাজ যা ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের নীতি বা তাতে বিশ্বাস থেকে উৎসারিত হয়, #মথি ৭:১৭-১৮, ১২:৩৩-৩৫ #ইব্রীয় ১১:৬; যা ঈশ্বরের প্রত্যাদিষ্ট ইচ্ছার বর্শবর্তী হয়ে মানুষ তার চেতনাপ্রসূত সিদ্ধান্তে করে থাকে, #দ্বিবি ৬:২১ ঈশ্বরের গৌরব তাদের শেষে লক্ষ্যরুপে কাজ করে #১করি ১০:৩১।
Comments