ড.জাকির নায়েক বলেন পবিত্র বাইবেলের যিশাইয় পুস্তকের ২৯:১২ পদের ভবিষ্যতদ্বানীটি হযরত মোহাম্মাদ স: সম্পর্কে করা হয়েছে।
নবী যিশাইয় ৭৪০-৬৮১ খ্রীষ্টপূর্বে অর্থাৎ যীশুর মাংশে মূর্তিমান হওয়ার প্রায় ৮০০ বছর পূর্বে ঈস্রায়েলের দক্ষিণ রাজ্য এহুদায় নবী হিসাবে ঈশ্বরের পরিকল্পনা, উদ্দেশ্য ও কাজের পরিধি ঘোষণা করেন।
ঈস্রায়েল সমাজ তখন এক বিরাট অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল। বাদশাহ আহাব এবং বাদশাহ মানশার অধীনে তারা, ঈশ্বরকে বাদ দিয়ে পূর্বের মূর্তিপূজার দিকে ফিরে গিয়েছিল, এমন কি সেখানে শিশু কুরবানিও ছিল। তাই ঈশ্বরের মনোনিত ঈস্রায়েলের উপর অন্য জাতির মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের বিচারদন্ড নেমে আসা ছিল অনিবার্য, তার পরেও যদি ঈস্রায়েলরা ঈশ্বরের সাথে বিশেষ সম্পর্ক রাখতে পারে। মাঝে মাঝে ঈশ্বরের দিকে ফিরে আসার আগে আমাদের অবশ্যই পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করা উচিৎ। তাই আসুন যিশাইয় পুস্তকের ২৯:১২ পদটি খুলি ও ঈশ্বর যা বলেছেন, সেই সত্য অনুসন্ধান করি, যেন আমরা অনুমানের উপর নির্ভরশীল না হই বরং ঈশ্বরের সত্য শিক্ষা পর্যন্ত পৌছে সত্য জানতে পারি -
"আবার যে লেখা পড়া জানে না, তাহাকে যদি সে তাহা দিয়া বলে, অনুগ্রহ করিয়া ইহা পাঠ কর, তবে সে উত্তর করিবে আমি লেখা পড়া জানি না।" (#যিশাইয় ২৯ :১২)
যদি আপনি যিশাইয় ২৯ অধ্যায় পুরোটি পড়েন তা হলে পরিস্কার বুঝতে পারবেন, ঈশ্বর নবী যিশাইয়ের মাধ্যমে ইহুদীদের তৎকালীন অবাধ্যতা ও ভবিষ্যৎ অনুতাপের বিষয়ে কথা বলছেন। যদি আমরা যিশাইয় ২৯:৩-৪ পদ পড়ি, তা বুঝতে পারবো। যদি আমরা যিশাইয় ১,২,৭ পদ পড়ি, ওখানে অরীয়েল নামের হিব্রু অর্থ ঈশ্বরের নগরী বা ঈশ্বরের সিংহ। যিরুশালেম অগরী যুদ্ধ ও রক্তপাতের কারণে পরিবেশ আমুল পরিবর্তন হয়েছেন।
"আমি তোমার চারিদিকে শিবির স্থাপন করিব, ও গড় দ্বারা তোমাকে বেষ্টন করিব, এবং তোমার বিরুদ্ধে অবরোধ-জাঙ্গাল নির্ম্মাণ করিব; তাহাতে তুমি অবনত হইবে, মৃত্তিকা হইতে কথা কহিবে, ও ধূলা হইতে মৃদুস্বরে তোমার কথা বলিবে; ভূতুড়িয়ার ন্যায় তোমার রব মৃত্তিকা হইতে নির্গত হইবে, ও ধূলা হইতে তোমার কথার ফুস্ফুস্ শব্দ উঠিবে।" (#যিশাইয় ২৯ :৩)
ঈস্রায়েল তার পাপের জন্য, অন্য জাতির দ্বারা ধ্বংস প্রাপ্ত,সে মৃত প্রায়, শক্তিহীন এমন ভাবে কথা বলছে, যা তাদের মৃত্যুর সাথে সম্পাদিত চুক্তির ব্যর্থতা নির্দেশ করে। এটি ঈশ্বরের পাপের শাস্তি যা ঈশ্বর তাদের দিচ্ছেন, এটি তাদের প্রাপ্য। কিন্তু ঈশ্বর তাঁর নিরুপিত সময়ে যিরুশালেমের উপর ধ্বংস সাধনকারী জাতিগুলোকে ধ্বংস করে দিবেন। এটি এমনভাবে ঘটবে যা স্বপ্নের মত মনে হবে।
"যীরুশালেমে আক্রমণকারী সর্বজাতি পরাজিত হবে" (#যিশাইয় ৫-৮)
যিশাইয় ২৯:৯-১০ পদে ঈস্রায়েল জাতির আত্নিক অসারতার কথা বলা হয়েছে। ঈশ্বর তাদের উপর গভীর ঘুমের আত্না ঢেলে দিয়েছেন, তারা অন্ধের মত ঈশ্বরকে চোখে দেখতে পায় না।
যিশাইয় ২৯:১১-১২ নবী যিশাইয়ের কাছে ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ হচ্ছে একটি সীলমোহরকৃত, "সীলমোহর করা" বই যা সমস্ত মানুষের জন্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঈশ্বর ঈস্রায়েল জাতির নিকট হইতে পড়ার ক্ষমতা নিয়ে নিবেন - যিশাইয় ২৯:১৩ পদ।
যদি মুসলিম ভাই ও বোন যিশাইয় পুস্তকের ২৯:১২ পদকে মোহাম্মাদের ভাববানী বলে গ্রহণ করেন, তা হলে তারা মহাবিপদের মুখোমুখি হবেন। কেননা এখানে বলা হচ্ছে যিনি ঈশ্বরের ইচ্ছাঅনুযায়ী বাধ্য ছিলেন না, বরং বরাবর ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অবাধ্য - যিশাইয় ২৯:১৩। এই কারণে ঈশ্বরের শাস্তি ছিল তারা যেন পড়তে না পারে। ঈশ্বর তাদের গভীর ঘুমে আত্নিক বিষয়ে আচ্ছন্ন করে রেখেছেন। তারা সেই সীলমোহরকৃত বই পড়তেও পারবে না আবার পড়লেও বুঝতে পারবেন না। ঈশ্বর যিশাইয় নবীকে যে প্রত্যাদেশ দিয়েছেন ঈস্রায়েলরা তা বুঝতে পারলেও তা অস্বীকার করবে। প্রত্যাদেশ ছিল মুদ্রাঙ্কিত করা, যারা পড়তে পারে, তারা বলছেন সীলমোহর করার জন্য আমরা বইটি পড়তে পারি না, যেহেতু এটি সীলমোহর করা। অন্যদিকে যারা পড়তে পারে না মূর্খ তাড়া বলবে আমরা তো লেখাপড়া জানি না কিভাবে পড়বো।
যীশুর শিক্ষা
যীশু মথি ১৫:১-৯ পদে ইহুদীদের উচ্চ শিক্ষিত ফরীশীরা ও অধ্যাপকরা যীশুর নিকট শিষ্যদের বিশ্রামবার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন, তখন যীশু যিশাইয় ২৯:১৩ পদের ভাববানী এই ইহুদী উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিদের উপর প্রয়োগ করেন এবং বলেন তোমাদের বিষয়ে যিশাইয় ভাববানী করেছেন -
"কপটীরা, যিশাইয় তোমাদের বিষয়ে বিলক্ষণ ভাববাণী বলিয়াছেন, এই লোকেরা ওষ্ঠাধরে আমার সমাদর করে,কিন্তু ইহাদের অন্তঃকরণ আমা হইতে দূরে থাকে; এবং ইহারা অনর্থক আমার আরাধনা করে, মনুষ্যদের আদেশ ধর্ম্মসূত্র বলিয়া শিক্ষা দেয়।”(#মথি ১৫ :৭-৯)
ইহুদীরা ঈশ্বরের শরিয়তে, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাতে, নিজের আত্নধার্মিক করে তুলেছিল, তাই ঈশ্বরের সীলমোহর করা সেই বই অর্থাৎ ঈশ্বরের জীবন্ত প্রত্যাদেশ যীশুকে উচ্চ শিক্ষিত ইহুদীরা মসীহ বলে স্বীকার করতে পারে নি বরং অস্বীকার করেছেন।
#যোহন ৫:৩৯ পদে যীশু বলছেন সমুদয় পুরাতন নিয়ম তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়।
#লুক ২৪:২৭ পদে, যীশু মোশি হইতে ও সমুদয় ভাববাদী হইতে আরম্ভ করিয়া সমুদয় শাস্ত্রে তাঁহার নিজের বিষয়ে যে সকল কথা আছে, তাহা তাহাদিগকে বোঝাইয়া দিলেন।
#যোহনঃ ১:১-৩ পদে - ঈশ্বর হলেন, সমুদয় প্রত্যাদেশের উৎস, সেই প্রত্যাদেশ বাক্য, যিনি ঈশ্বর, তিনিই যীশু, যিনি মাংশে মূর্তিমান মনুষ্যপুত্র, জীবন্ত ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ, পাপিদের পরিত্রাণের জন্য মসীহ হিসাবে মুদ্রাঙ্কিত।
কিন্তু শিক্ষিত ও অশিক্ষিত উভয়ী সেই বই পড়তে পারছেন না - বিশ্বাস না থাকার জন্য।
#রোমীয় ১:১৭ কারণ ঈশ্বর-দেয় এক ধার্ম্মিকতা সুসমাচারে প্রকাশিত হইতেছে, তাহা বিশ্বাসমূলক ও বিশ্বাসজনক, যেমন লেখা আছে, “কিন্তু ধার্ম্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে”।
#যিশাইয়ঃ ২৯:১১-১২ পদের ভাববানী সেই সীলমোহরকৃত বই, যীশু, তিনিই জীবন্ত প্রত্যাদেশ।
কেন এই ভাববানী হযরত মোহাম্মদ স. নন। কারণ সমূহ নিম্নরূপঃ
১. মোহাম্মদ বই নন - যে "সীলমোহর বই এর কথা নবী যিশাইয় বলেছেন।
২. এই ভাববানী, নবী যিশাইয় ইহুদী, ঈস্রায়েল জাতি ইহুদী, এর শিক্ষিত ও অশিক্ষিত পাঠক ইহুদী কিন্তু মোহাম্মাদ ইহুদী নন, তিনি কুরাইশ জাতির লোক।
৩. যিশাইয় ২৯: ১১-১২ পদে এখানে নবী র বিষয়ে কোন ভাববানী নেই, যা আছে তা হল একটি বই।
৪. গীতসংহিতা ১১৯:৮৯ অনন্তকালের নিমিত্ত, হে সদাপ্রভু, তোমার বাক্য স্বর্গে সংস্থাপিত। যীশু স্বর্গ হতে এসেছেন, আবার স্বর্গে চলে গিয়েছেন, তিনিই স্বর্গে অনন্তকালের জন্য আসিন। মোহাম্মদ তো এমন নন।
৫. যদি তিনি উম্মি পাঠক হন, সেই পাঠক তো ঈশ্বরের অবাধ্য ও দূষী তা হলে, মুসলিম ভাইয়েররা কি এটি মেনে নিবেন, হযরত মোহাম্মাদ অবাধ্য?
অতএব মুসলিম ভাইদের বলব, সব গ্রন্থে ও সব খানে হযরত মোহাম্মাদকে খোঁজার চেষ্টা করা একেবারেই মূর্খতার পরিচয়।সমস্ত ওহী ও প্রত্যাদেশের উৎস যীশু, সমস্ত ওহীর কেন্দ্রীয় বিষয় যীশু, সমস্ত ইতিহাসের নিয়ন্ত্রণকর্তা যীশু, সমস্ত ভাববানীর পূর্ণতাদান কারী মনুষ্যপুত্র হলেন যীশু, শয়তান পাপ ও মৃত্যুকে।
Commenti