
প্রিয়পাঠক, আসুন আমরা এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে, পবিত্র বাইবেল থেকে প্রকাশিত বাক্য ২:৯ পদ পাঠ করি।
‘‘আমি জানি তোমার কার্য্যসকল, ক্লেশ ও দীনতা, তথাপি, তুমি ধনবান ...।"
চায়নার খ্রীষ্ট বিশ্বাসী পিতৃতান্ত্রিক পালক ওয়াং মিংডাও এর একজন জীবনীকার বলেছিলেন,
চীন সরকারের অনুসৃত নীতি নির্বিশেষে চীনের মন্ডলী, আগত প্রজন্মের জন্য খ্রীষ্ট ধর্ম্মের আকারকে গোটা বিশ্বে গভীরভাবে প্রভাবিত করিবে| [প্রায়] সত্তর মিলিয়ন [বর্তমানে ১৬০ মিলিয়ন] আত্মা এবং বছরে ৭ শতাংশ বৃদ্ধির হার-এর সহিত, চীনে এখন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর সংখ্যা পৃথিবীর বেশির ভাগ রাষ্ট্রের খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর সংখ্যাকে খর্ব করিয়াছে। একবিংশ শতাব্দীতে বিকাশশীল জগতের সর্বত্র খ্রীষ্ট বিশ্বাসীগণের ন্যায়, চীনা খ্রীষ্ট বিশ্বাসীগণ মন্ডলীর অগ্রদূতের [সামনের সারির] প্রতিনিধিত্ব করছে। (Thomas Alan Harvey, Acquainted With Grief, Brazos Press, 2002, p. 159)|
প্রকাশিত বাক্য পুস্তকে প্রভু যীশু খ্রীষ্ট স্মুর্ণা শহরের মন্ডলীর বিবরণ চিত্রিত করছে যে বর্তমানে চীনের "গৃহস্থ মন্ডলী" আন্দোলনে কি ঘটছে।
‘‘আমি জানি তোমার কার্য্যসকল, ক্লেশ ও দীনতা, তথাপি, তুমি ধনবান...’’ (প্রকাশিত বাক্য ২:৯)।
স্মুর্ণাতে স্থিত মন্ডলীর মতন, চীনের গৃহস্থ মন্ডলীর বিশ্বস্ত খ্রীষ্ট বিশ্বাসীগণ অতীব তাড়না এবং কঠোর "যন্ত্রণা" সহ্য করেছিলেন তা সত্ত্বেও তারা আত্মিকভাবে এত "ধনবান" যে তাদের সুসমাচার সংক্রান্ত প্রচার "বাৎসরিক ৭ শতাংশ" হারে বৃদ্ধি উৎপন্ন করেছে। আন্তর্জাতিক খ্রীষ্টান রিপোর্ট অনুযায়ী চীনে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর সংখ্যা ইতিমধ্যেই "পৃথিবীর বেশির ভাগ রাষ্ট্রের খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর সংখ্যাকে খর্ব করিয়াছে।" আমি মনে করি যে চীনে ১৬০ মিলিয়নেরও বেশি খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের বেশির ভাগই প্রকৃত মন পরিবর্তনকারী, এবং ইউনাইটেড স্টেট্সে যত খ্রীষ্ট বিশ্বাসী রয়েছেন তার তুলনায় চীনে ইতিমধ্যেই অনেক বেশি সংখ্যায় প্রকৃত খ্রীষ্ট বিশ্বাসী আছেন। সেটা বিচলিত করছে! আমাদের উচিৎ নিজেদের প্রশ্ন করা, ‘‘তাদের সাফল্যের কারণ কি? তাদের সুসমাচার সংক্রান্ত প্রচারের রহস্যটি কি?’’ কেন তাদের সম্পর্কে এইকথা বলা যেতে পারে,
‘‘আমি জানি তোমার কার্য্যসকল, ক্লেশ ও দীনতা, তথাপি, তুমি ধনবান ...’’ (প্রকাশিত বাক্য ২:৯)।
যখন আমরা সেই সত্য ঘটনা বিবেচনা করি যে সুসমাচার প্রচার সংক্রান্ত খ্রীষ্টধর্ম্ম আমেরিকাতে বৃদ্ধি পাচ্ছে না, এবং সেই সত্য যে এমনকী অনেকেই বলছেন এইখানে সুসমাচার প্রচার সংক্রান্ত খ্রীষ্টধর্ম্ম মৃতপ্রায়, তখন এই বাংলাদেশে বসে আমাদের গভীরভাবে এই বিষয়ে চিন্তা করা উচিৎ যে তাদের কাছে কি নেই যা আমাদের কাছে আছে, এবং তাদের কাছে কি আছে যা আমাদের কাছে নেই।
প্রথম, তাদের কাছে কি নেই যা আমাদের কাছে আছে!
তাদের কাছে মন্ডলীর গৃহ নাই! একমাত্র "Three-Self" (থ্রী-সেল্ফ) মন্ডলীর গৃহ রয়েছে। কিন্তু "গৃহস্থ মন্ডলী" হল একমাত্র যেগুলি বৃদ্ধি পাচ্ছে; এবং তাদের কাছে খুব অল্প সংখ্যক মন্ডলী গৃহ রয়েছে। তাদের অধিকাংশের কাছেই মন্ডলী গৃহ নেই যেমন আমাদের রয়েছে! তাদের কাছে সরকারী অনুমোদন নেই। চীন সরকার দ্বারা তারা ক্রমাগতভাবে তাড়িত হয়ে নির্যাতিত হচ্ছেন। তাদের ধর্ম্মের স্বাধীনতা নেই যেমন আমাদের রয়েছে!
যেমন আমরা করি সেরকমভাবে পালকদের প্রতি শিক্ষাদান করতে তাদের কোন সেমিনারি নেই। চীনে থাকা পালকদের তারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন একমাত্র কারও বাড়িতে বসে - আর এটা সংক্ষিপ্ত এবং খুব একটা বিস্তারিত নয়। তারা সেই সামান্য প্রশিক্ষণ পান যতটুকু তারা "পলায়নরত অবস্থায়" দিতে পারেন।
তাদের কাছে সানডে স্কুলের গৃহ নেই। মিনিস্ট্রি"-র জন্য তাদের কাছে বিল্ডিং নেই। তাদের কাছে "খ্রীষ্ট ধর্ম্মীয় দূরদর্শন" নেই। তাদের "খ্রীষ্ট ধর্ম্মীয় রেডিও" নেই। খ্রীষ্ট ধর্ম্মীয় প্রকাশনা সংস্থা তাদের কাছে নেই। "পাওয়ার পয়েন্টস" এর জন্য কোন যন্ত্র তাদের নেই। প্রচারকদের একটা বড় মাপের পর্দায় দেখানোর জন্য তাদের কাছে টিভি প্রোজেক্টর নেই। তাদের কাছে "খ্রীষ্ট ধর্মীয় রক ব্যান্ড" নেই। তাদের কাছে অর্গ্যান নেই এবং সাধারণত তাদের কাছে এমনকী পিয়ানোও নেই। তাদের কাছে প্রিন্ট করা সানডে স্কুলের উপকরণ নেই। এমনকী তাদের প্রত্যেকের জন্য একটা করে বাইবেল, বা গানের বইও থাকে না। না, তাদের এসব নেই যা আমাদের আছে!
দ্বিতীয়ত, তাদের কাছে কি আছে যা আমাদের কাছে নেই!
তাদের রয়েছে সরকারের থেকে পাওয়া বিক্ষিপ্ত তাড়না এবং চরম নির্যাতন ও দুর্দশা। শুধুমাত্র খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হওয়ার কারণে কোন কোন সময়ে তাদের কারাগারে যেতে হয়। সেখানে সর্বদা সেই হুমকি থাকে যে কারও প্রতি যিনি আন্তরিক খ্রীষ্ট বিশ্বাসীতে পরিণত হন! চীনের খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের তাড়নার বিষয়ে পড়তে হলে www.persecution.com ওয়েবসাইট দেখুন। এবং তবুও চীনে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা হারানো আত্মা জয় করতে ব্যাপকভাবে সফল হচ্ছেন। আধুনিক ইতিহাসের বৃহত্তম উদ্দীপনায়, চীনের সর্বত্র খ্রীষ্ট বিশ্বাসীর সংখ্যায় বিস্ফোরন ঘটছে!
‘‘আমি জানি তোমার কার্য্যসকল, ক্লেশ ও দীনতা, তথাপি, তুমি ধনবান...’’ (প্রকাশিত বাক্য ২:৯)।
আমি এই আশঙ্কা করি যে লাদিয়াস্থ অবস্থিত মন্ডলীর প্রতি যীশু যা বলেছিলেন তার দ্বারা বাংলাদেশের অবস্থিত আমাদের মন্ডলীর অনেকগুলি আরও ভালভাবে বর্ণিত হয়,
‘‘তুমি কহিতেছ, আমি ধনবান্, ধন সঞ্চয় করিয়াছি, আমার কিছুরই অভাব নাই; কিন্তু জান না যে, তুমিই দুর্ভাগ্য, কৃপাপাত্র, দরিদ্র, অন্ধ ও উলঙ্গ’’ (প্রকাশিত বাক্য ৩:১৭)।
Comments