top of page
Search

খ্রীষ্টান ধর্মে যুবক ও যুবতীদের পোশাক সম্পর্কে পবিত্র বাইবেল কি শিক্ষা দিয়েছেন?


প্রিয়পাঠক, আজ আমরা খ্রীষ্টান ধর্মের যুবক ও যুবতিদের পোশাক পড়ার শালিনতা সম্পর্কে জানবো। এই বিষয়ে অনেক খ্রীষ্টান বিশ্বাসী ভাই ও বোন দিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে অবস্থান করছেন। আজকের এই পবিত্র বাইবেলের শিক্ষা আপনাকে সেই দিধা -দ্বন্দ্বের মধো থেকে ঈশ্বরের বাক্যর ও  সুসমাচারের শুদ্ধতার দিকে প্রবাহিত করবে। যেন খ্রীষ্টান যুবক ও যুবতিগন তাদের পোশাকের দ্বারা ঈশ্বরের গৌরব প্রকাশ করতে উৎসাহিত হয়। তাই আসুন আমরা পবিত্র বাইবেল থেকে যাত্রাপুস্তক ২০:১৪ পদ পাঠ করি -


"ব্যভিচার করিও না।" (যাত্রাপুস্তক ২০:১৪)


প্রিয়পাঠক, আসুন এই সকালে আমরা আমাদের দৃষ্টি ঈশ্বরের সেই সপ্তম আজ্ঞার প্রতি দেই, যেন আমরা আমাদের জীবনে ঈশ্বরের ইচ্ছা খুব ভাল ভাবে উপলব্ধি করতে পারি। এই সপ্তম আজ্ঞা পালনের জন্য আমাদের যা দরকার তা হচ্ছে, আমাদের অন্তরের চিন্তার শুদ্ধতা, আমাদের কথা বলার ধরনের শুদ্ধতা, আমাদের পোশাক ও আচারণের শুদ্ধতা, আমাদের প্রতিবেশিদের সাথে চারিত্রিক সততা রক্ষা করার জন্য যত্নশীল হওয়ার শুদ্ধতা চর্চা করা, যেন এই আজ্ঞা পালনের দ্বারা ঈশ্বর মহিমান্বিত হতে পারেন।


রেফারেন্সঃ ১ থিষ ৪:৩-৪, ১ করি ৭:২, ৩,৫,৩৪,৩৬ ইফি ৫:১১ -১২, ২তীম ২:২২, কল ৪:৬ ১পিতর ৩:২


ঈশ্বর সপ্তম আজ্ঞায় যা নিষিদ্ধ করেছেন তা হচ্ছে এই, মনের মধ্যে সকল প্রকার যৌন চিন্তা, অপবিত্রতা, বাক্য, কাজ ও পোশাকে যৌনতার সুরসুরি সৃষ্টি হয় এমন সকল কিছু নিষিদ্ধ।


রেফারেন্সঃ আদিপুস্ত ৬:৫, মথি ১৫:১৯, মথি ৫:২৮, ইফি ৫:৩-৪, যাত্রা ২০:১৪, ইফি ৫:৩-৭।


পবিত্র ঈশ্বর মানুষকে যৌনচারী সত্তা হিসাবে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তা ঈশ্বরের নিয়মের বৈধতা অনুযায়ী হতে হবে। ঈশ্বর নারী ও পুরুষের যৌনতার অনুমোদন দিয়েছেন বিবাহের মাধ্যমে, বিবাহ বহির্ভূত সকল প্রকার যৌনতা পাপ পাপ ও পাপ। কেননা বিবাহ বহির্ভূত সকল প্রকার যৌনমিলনের যুক্তি ঈশ্বরের অগৌরবজনক অনৈতিক কাজ, ইহার কোন অনুমোদন পবিত্র বাইবেলে নেই। বৈবাহিকতার ভিতরে যৌন ক্রিয়াদিতে কোন লজ্জা নেই। যৌনতা হচ্ছে একটি উপায় যার দ্বারা স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরের কাছে তাদের প্রেম ও অঙ্গিকার প্রকাশ করে।


রেফারেন্সঃ আদিপুস্তক ১:২৭-২৮,৩১, ২:১৮-২২

আদিপুস্তক ২:২৫, ইয়োব ১৩:১৪


অবশ্যই ব্যভিচার বিয়ের পবিত্রতা নষ্ট করে। আপনার নিজের জীবনের শুদ্ধতার শক্তিকে ধ্বংস করে, ঈশ্বরের ক্রোধের সৃষ্টি করে, মানুষিকভাবে আপনাকে দূর্বল করে। বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাকেই ব্যভিচার বলে, এই ব্যভিচার আপনার বিবাহিত জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। ব্যভিচার স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যেকার বিশ্বস্ততা ভেংগে দেয়। ব্যভিচার ঈশ্বরের উপস্থিতিতে বিবাহের সম্পর্কেও লঙ্ঘন করে যা কারোরই করার অধিকার নেই। ব্যভিচার মানুষ ও পরিবারের ক্ষতিসাধন করে।


পবিত্র ঈশ্বর আমাদের ভালোর জন্যই এই ব্যভিচার নিষিদ্ধ করেছেন। যীশু এই বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন যে, স্বামী ও স্ত্রী আমৃত্যু এক সংগে বসবাস করবে।সেখানে কোন তালাক, বহুবিবাহ ও সমকামিতা থাকবে না। কেননা এই গুলি আসে পাপাসক্তি ও অন্তরের কঠিনতা থেকে এবং এই গুলি বিবাহিক পবিত্র চুক্তির লঙ্ঘন।


রেফারেন্সঃ মথি ১৯:৪-৬, হিতোপদেশ ৬:৩২, আদিপুস্তক ২:২১-২৪, মথি ১৯: ৩-৯।


খ্রীষ্টান যুবক ও যুবতিদের অবশ্যই অন্তরে, কথায়, কাজ ও পোশাকে অনৈতিকতা থেকে শতর্ক থাকতে হবে। ব্যভিচার শুধু কাজের মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ নয়। যীশু বলেছেন, একজন লোক যখন


" কামনার দৃষ্টিতে একজন নারীর দিকে তাকায় তখনই সে ঈশ্বরের সপ্তম আজ্ঞা লঙ্ঘন করেন" (মথি ৫:২৮)


"ব্যভিচারের খারাপ চিন্তা অন্তর থেকে আসে" (মথি ১৫:১৯)


তাই অবশ্যই আমাদের অন্তরকে সাবধানে রাখতে হবে। যেমন আইয়ুব কামনার দৃষ্টিতে কোন যুবতি মেয়ের দিকে তাকাবে না বলে তার চোখের সাথে একটি চুক্তি করেছিলেন (আইয়ুব ৩১:১)। আমাদের অবশ্যই যৌন প্রলোভনের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে, নানা ধরনের পোশাক যেগুলো যৌন সুরসুরি তৈরী করে, গোপন দৈহিক সুন্দর্য প্রকাশ করে, যুবক ও যুবতিদের কামনাকে জাগিয়ে তোলে এমন পোশাক পড়া থেকে নিজেদের শতর্ক করতে  হবে। কেননা কোন নায়ক ও নায়িকা আমাদের আদর্শ নয়। আমাদের আদর্শ ঈশ্বরের বাক্যের সুসমাচার। তাই নানা ধনের যৌন উত্তেজক পত্রিকা, বই, চলচিত্রের উলঙ্গ ছবি, পর্ণগ্রাফি, যে গুলো যৌন আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করে তা বর্জন করতে হবে। আমাদের অবশ্যই নোংরা কথাবার্তা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে হবে এবং বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধকে উৎসাহিত করতে হবে।


বর্তমান বাংলাদেশের খ্রীষ্টান যুবক ও যুবতীগন ঈশ্বরের বাক্যের বিরুদ্ধে জীবন ভাসিয়ে দিচ্ছেন। তা তাদের ফেসবুকের প্রোফাইলের ছবির সংযোজনে প্রকাশিত হচ্ছে, যুবক ও যুবতিরা এত মডার্ণ যে তাদের পোশাকে ভিতরের দৈহিক সুন্দর্য খুব সহজেই অনুমান করা যায় এবং কমেন্ট বক্সের কমেন্ট এতই মনোমুগ্ধকর যা নিঃসন্দেহে ঈশ্বরের ক্রোধের সুচনা করে। ঈশ্বরের সন্তান খ্রীষ্টান যুবক ও যুবতিগন এভাবে চলতে পারে না। ঈশ্বরের মন্ডলীর সেবক হিসাবে আমাদের সুসমাচারের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।


ব্যভিচারের বিরুদ্ধে পবিত্র ঈশ্বরের আইন হচ্ছে প্রতিটি বিবাহিত ও অবিবাহিত খ্রীষ্টান ব্যক্তির জন্য একটি শতর্কতা। ঈশ্বর চান স্বামী ও স্ত্রী তাদের বৈবাহিক চুক্তির অংশ হিসাবে তাদের মন ও দেহের মাধ্যমে একে অপরকে উপভোগ করবে। তিনি চান না যেন আমাদের মনোভাব কোন নোংরা হাসি - ঠাট্টা, সর্ট পোশাক, গল্প, অশ্লীল পত্রিকা ও পর্ণগ্রাফির দ্বারা কলুষিত হোক। বাইবেলের পবিত্র ঈশ্বর চান আমরা যেন বিয়ের মাধ্যমে যৌনতা উপভোগ করি, এবং এর অপব্যবহার না করি।


"তুমি কি জান না যে, তোমরা ঈশ্বরের মন্দির, এবং ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের অন্তরে বাস করেন? যদি কেহ ঈশ্বরের মন্দির নষ্ট করে, তবে ঈশ্বর তাহাকে নষ্ট করিবেন, কেননা ঈশ্বরের মন্দির পবিত্র, আর সেই মন্দির তোমরাই।" (১ করি ৩:১৬-১৭)



439 views0 comments

Comments


bottom of page