“কিন্তু তাঁহা হইতে তোমরা সেই খ্রীষ্ট যীশুতে আছ, যিনি হইয়াছেন আমাদের জন্য ঈশ্বর হইতে জ্ঞান, আর ধার্মিকতা, আর পবিত্রতা, এবং মুক্তি: যেমন, লেখা আছে, যে ব্যক্তি শ্লাঘা করে, সে প্রভুতেই শ্লাঘা করুক” (১ করি ১:৩০-৩১)
আমাদের এই শাস্ত্রাংশটি ১ করি ১: ৩০-৩১ পদ থেকে আমরা পাঠ করেছি। প্রেরিতেরা করিন্থিয় মন্ডলীর খ্রীষ্টানদের বলেছিলেন যে জগতের খুব বেশি জ্ঞানী ব্যক্তি নয়, বেশি একটা পরাক্রমী (প্রভাবশালী) ব্যক্তিরাও নয়, আর খুব বেশি সম্ভ্রান্ত (মহান) ব্যক্তিরাও উদ্ধার লাভ করবে না। ঈশ্বরের যে প্রয়োজন রয়েছে এই কথা তারা মনেই করেনা। তারা কেবলমাত্র এই জগতে যে সমস্ত বস্তু রয়েছে তার প্রতিই উদ্বেগশীল। কোন কিছু হারিয়ে ফেলে দুঃখভোগ করার ইচ্ছা তাদের নেই, আর নিজেদেরও তারা অস্বীকার করার ইচ্ছা রাখে না যেন ক্রুশ উঠিয়ে নিয়ে খ্রীষ্টের অনুসরনকারী হয়ে ওঠে।
প্রেরিতেরা করিন্থীয়দের স্মরণ করিয়ে দেন যে তাদের মধ্যে হয়তো অনেক ধনী ব্যক্তি নেই বা বিখ্যাত কোন লোক তাদের মন্ডলীতে নেই। কিন্তু তাদের মন্ডলী গঠিত হয়েছে সেই লোকেদের নিয়েই যাদের ঈশ্বর মনোনীত করেছেন তাদেরই, যাদের অবিশ্বাসী জগৎ বলে থাকে যে তারা না কি মূর্খ ও বোকা, দূর্বল, অবজ্ঞাত, এমনকি তাদের প্রতি যে আলোকপাত করা হবে এমন যোগ্য ব্যক্তিও তারা নয়। ঈশ্বর তাদের মত লোকেদেরই মনোনীত করেছেন “যেন কিছুর মধ্যেই গণ্য নয়” এবং জগতের দিক দিয়ে মহান ও জ্ঞানী নয়। আর সেটাই বিশেষতঃ তাই হয়েছে।
জগত এই সব খ্রীষ্টীয়ানদের সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় গণ্য করেছে। কিন্তু তারা ভুল করেছিল। সেই সমস্ত তাৎপর্যহীন সামান্যতম খ্রীষ্টীয়ানেরা সমুদয় রোম সাম্রাজ্যে ছড়িয়ে পড়বে, আর পরবর্তী সময়ে সমুদয় জগতে ছড়িয়ে যাবে। ঈশ্বর সব থেকে নম্র নিচুতলার খ্রীষ্টীয়ানদেরই মনোনীত করলেন রোম সাম্রাজ্যকে কিছুর মধ্যে গণ্য না করে।
এটা আমার কাছে এইভাবে মনে হচ্ছে যেন ঈশ্বর এই কাজ পুনরায় করছেন সাম্যবাদী দেশ চিনের মধ্যে। এবং বাংলাদেশে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মাঝে এবং বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর অযোগ্য লোকদের মাঝে। যেমন ভাবে আমাদের একটি গান এইভাবে উল্লেখিত হয়েছে, “বিশ্বাস হল সেই বিজয়, যা জগতকে জয় করতে সাহায্য করে।” আমরা যেমনভাবে জানি ও যাকে আমরা পরাক্রমশালী বলে জানি, তখনও পর্যন্ত এখানে খ্রীষ্টীয়ানেরা থাকবে।
বিশ্বাসেই বিজয়, বিশ্বাসেই বিজয়!
আহা, কি গৌরবময় বিজয় যা জগতকে জয় করে।
ঈশ্বর আমাদের মত নীচ লোকেদের মনোনীত করলেন যাতে কোন ব্যক্তি শ্লাঘা না করে, “যেন কোন মাংসই তাঁর উপস্থিতিতে গৌরব লাভ না করে” (১ করি ১:২৯)। এই পৃথিবীতে বহু সুসমাচার প্রচারকারী রয়েছেন “যারা সুনির্দিষ্ট মেষেদের বিষয়ে জোর দিয়ে থাকেন যারা [ বিশ্বাসের স্বীকারোক্তি করছে ] – যারা চিত্তবিনোদন করে থাকে, শিল্পজগতে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে, এবং সরকারী ক্ষেত্রে দক্ষ পরিচালক। কিন্তু ঈশ্বর বৃহত্তরভাবে অযোগ্য লোকেদেরই পরিমাপ করেন। তিনি আপনার বা আমার মত অতিসাধারন ও সরল মেষেদেরই আহ্বান করছেন।
আপনি কি লক্ষ্য করেছেন যে আমরা বিখ্যাত ব্যক্তি ও ধনী লোকেদের মধ্যে সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে জোর দিইনি? আপনি কি কোন সময়ে বিস্মিত হয়েছেন যে কেন? ভালো বিষয়, বাইবেলের এই অংশ আমাদের বলে যে কেন?
“কারন, হে ভ্রাতৃগন, তোমাদের আহ্বান দেখ, যেহেতু মাংস অনুসারে জ্ঞানবান অনেক নাই, পরাক্রমী অনেক নাই, উচ্চপদস্থ অনেক নাই: কিন্তু ঈশ্বর জগতস্থ মূর্খ বিষয় সকল মনোনীত করিলেন যেন জ্ঞানবান সকলকে লজ্জা দেন; যেন শক্তিমন্ত বিষয়ে সকলকে লজ্জা দেন; এবং জগতের যাহা যাহা নীচ, ও যাহা যাহা তুচ্ছ, যাহা যাহা কিছু নয়, সেই সকলই ঈশ্বর মনোনীত করিলেন, যেন, যাহা যাহা আছে সে সকল আকিঞ্চন করেন: যেন কোন মর্ত্ত্য ঈশ্বরের সাক্ষাতে শ্লাঘা না করে” (১ করিন্থীয় ২:২৬-২৯)।
আপনি দেখুন, বহু বৎসরের অভিজ্ঞতায় আমরা শিখেছি যে সুসমাচার শোনার প্রতি উদ্ধারলাভ করার জন্য, আমরা বিখ্যাত ও ধনী লোকেদের মন্ডলীর মধ্যে পাইনা। আমাদের মন্ডলী বৃদ্ধি পায় যেহেতু আমরা কলেজ ও উচ্চ বিদ্যালয়ের যুবক যুবতীদের মধ্যে সুসমাচার প্রচার করি। এই জগৎ মনে করে যে যুবক যুবতীরা দুর্বল ও বোকা। কিন্তু ঈশ্বর আপনাদের কাউকে কাউকে আহ্বান করেছেন, যেখানে তিনি আপনাদের কাউকে কাউকে আর বিখ্যাত ও ধনী লোকেদের অতিক্রমন বা ছাড়িয়ে আসতে সাহায্য করেছে! তিনি জানেন যে তাদের মধ্যে কেবল কয়েকজনই শুনবে আর খ্রীষ্টের শিষ্য হয়ে উঠবে! তারা অত্যন্তভাবেই আত্ম পরিতুষ্ট, এবং প্রকৃত খ্রীষ্টীয়ান হয়ে ওঠার প্রতি অত্যন্ত জাগতিক পরায়্ণ। সুতরাং ঈশ্বর সরাসরিভাবেই তাদের ছাড়িয়ে বা অতিক্রম করে এসেছেন। এক প্রভাবশালী আহ্বানে তিনি তাদের আহ্বান করেন নি।
তিনি প্রায় নির্দিষ্টভাবে যুবক যুবতীদেরই আহ্বান করেছেন। আর আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ খ্রীষ্টের প্রতি এগিয়ে এসে পরিত্রাণ লাভ করেছেন। আমাদের পাঠ্যাংশ ব্যাখ্যা করে যে ঈশ্বরের দ্বারা আহ্বান লাভ করা, আর তাঁর পুত্র যীশুর মধ্যে দিয়ে উদ্ধার লাভ করা কতটাই না এক সুযোগের বিষয়!
ঈশ্বর স্বর্গ থেকে এই ঘোষণা দিচ্ছেন
Commenti