সত্য অন্বেষী

Mar 20, 20205 min

নোহের দিনের মতই ঈশ্বরের ক্রোধের দিন এগিয়ে আসছে!

"কিন্তু সেই দিনের ও সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না, স্বর্গের দূতগণও জানেন না, পুত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।বাস্তবিক নোহের সময়ে যেরূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্রের আগমনও তদ্রূপ হইবে। কারণ জলপ্লাবনের সেই পূর্ব্ববর্ত্তী কালে, জাহাজে নোহের প্রবেশ দিন পর্য্যন্ত, লোকে যেমন ভোজন ও পান করিত, বিবাহ করিত ও বিবাহিতা হইত, এবং বুঝিতে পারিল না, যাবৎ না বন্যা আসিয়া সকলকে ভাসাইয়া লইয়া গেল; তদ্রূপ মনুষ্যপুত্রের আগমন হইবে"।

#মথি ২৪:৩৬-৩৭

নোহের সময়

এখন যদি আমরা সে নোহের সময়ের কথা চিন্তা করি তবে দেখতে পারি যে, সে সময় ছিল অনেক ভিন্ন কারণ অনেক সময় ধরে ভারী বর্ষন হয়নি অর্থাৎ প্রচন্ড ঝড় প্লাবন। আর নোহ প্রচার করছিলেন যে, ভারী বর্ষন হবে ভয়ানক ভাবে। কিন্তু লোকেরা সে দিকে মনোযোগ না দিয়ে উল্টো নোহকে প্রশ্ন করল, তাহলে তুমি কি করছো- উত্তরে নোহ বললেন আমি একটা জাহাজ বানাচ্ছি। লোকেরা তখন জানতে চাইলো কেন কিসের জন্য- নোহ বললেন “ভারী বর্ষন হবে ভয়ানক ভাবে প্লাবন হবে” কারণ সদাপ্রভু পরমেশ্বর বলেছেন, “সদাপ্রভু দেখিলেন- পৃথিবীতে মনুষ্যের দুষ্টতা বড় এবং তাহার অন্তঃকরণের চিন্তার সমস্ত কল্পনা নিরন্তর কেবল মন্দ”। তাই, সদাপ্রভু পৃথিবীতে মনুষ্যের নির্ম্মাণ প্রযুক্ত অনুশোচনা করিলেন, ও মনঃপীড়া পাইলেন। আর সদাপ্রভু কহিলেন, আমি যে মনুষ্যকে সৃষ্টি করিয়াছি, তাহাকে ভূমণ্ডল হইতে উচ্ছিন্ন করিব; মনুষ্যের সহিত পশু, সরীসৃপ জীব ও আকাশের পক্ষীদিগকেও উচ্ছিন্ন করিব; কেননা তাহাদের নির্ম্মাণ প্রযুক্ত আমার অনুশোচনা হইতেছে।

আর এখন সদাপ্রভু আকাশ থেকে ভারী বর্ষন করবেন যেন, লোকদের পরিবার, আত্নীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের সহ পুরো জগৎসংসার কে শেষ করতে পারে। আর এসব কথা শোনার পর লোকেরা নোহর সাথে হাসি ঠাট্টা তামাশা করতে লাগলেন। যা আজকের দিনেও স্বাভাবিক কেননা বর্তমান সময়েও পাপী মানুষেরা বাক্যের কথা শুনে বাক্যকে তুচ্ছ করে।

এখন যদি আমরা নোহর দিনের সাথে আমাদের বর্তমান দিনের কথা বিবেচনা করি তাহলে আমাদের আজকের দিনের সাথে নোহর দিনের কোন পার্থক্য নেই। একদম নোহর সেই দিনের মতই আজকের দিন অতিবাহিত হচ্ছে।

আসুন তাহলে দেখি আমাদের আজকের দিনের সাথে নোহের সময় কালের বিষয় গুলো সমান কিভাবে হয়!

নোহের সময়ঃ “আর সদাপ্রভু দেখিলেন, পৃথিবীতে মনুষ্যের দুষ্টতা বড় এবং তাহার অন্তঃকরণের চিন্তার সমস্ত কল্পনা নিরন্তর কেবল মন্দ”। #আদি ৬:৫

বর্তমান সময়ঃ আজ আমাদের দিনে মন্দতা প্রতিনিয়ত আমরা দেখছি- টিভিতে, পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে, ইন্টারনেটে, ফেসবুকে, what’s app এ, ইউটিউবে মোট কথা সবখানেই দেখতে পাই। এমনকি আমাদের মন্ডলীতেও। আজকের দিনে মন্দতাকে তারীফ/সুনাম করা হয় আর যা দেখি প্রায় সবই পাপে ভরা, এগুলো দেখে আমাদের মনে খারাপ চিন্তা, মন্দ বিষয় গুলোই জন্ম নেয়। আজকের দিনে মিডিয়া এক পাপের বিশাল ভয়ানক রুপে তৈরি হয়েছে।

নোহের সময়ঃ “তাই, সদাপ্রভু পৃথিবীতে মনুষ্যের নির্ম্মাণ প্রযুক্ত অনুশোচনা করিলেন, ও মনঃপীড়া পাইলেন”। #আদি ৬:৬

বর্তমান সময়ঃ আজকের দিনে ঈশ্বর মানুষের পাপে ও মন্দতায় সম্পৃক্ততায় দেখে মনে কষ্ট পাচ্ছে, এছাড়া মানুষের মনের কঠোরতার জন্যও তিনি মনে কষ্ট পাচ্ছেন। কারণ মানুষ সমস্ত প্রকার প্রচার পাবার পর, সাবধানবানী চেতনা পাবার পর, বিচারের কথা জেনেও তারা তাদের জীবন পরিবর্তন করতে রাজি নয়। এর জন্য ঈশ্বর দুঃখিত ও রাগান্বিত যা আমাদের তার ক্রোধের দিনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

নোহের সময়ঃ “তখন ঈশ্বর নোহকে কহিলেন, আমার গোচরে সকল প্রাণীর অন্তিমকাল উপস্থিত, কেননা তাহাদের দ্বারা পৃথিবী দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ হইয়াছে; আর দেখ, আমি পৃথিবীর সহিত তাহাদিগকে বিনষ্ট করিব”। #আদি ৬:১৩

বর্তমান সময়ঃ আজ আমরা আমাদের আসেপাশের খবর/বিশ্বের খবর দেখলে দেখতে পারি যে, সকল প্রকার হিংসা ও হিংস্রতা। একটা দিনও বাদ যায় না এসব থেকে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও এসব দেখে আমাদের জীবন অতিবাহিত করতে হয়। হিংস্রতা, যৌন নিপীড়ন, হানাহানী, বিদ্বেষ এগুলো আজ মিডিয়ার বিজনেসে তৈরি হয়েছে।

নোহের সময়ঃ “কারণ জলপ্লাবনের সেই পূর্ব্ববর্ত্তী কালে, জাহাজে নোহের প্রবেশ দিন পর্য্যন্ত, লোকে যেমন ভোজন ও পান করিত, বিবাহ করিত ও বিবাহিতা হইত”। #মথি ২৪:৩৮

বর্তমান সময়ঃ আজকের দিনে মানুষ অঢেল টাকা কামাতে, খাওয়া দাওয়া ও মদে, আর বিয়ে করে লাইফ সেটেলে এতই ব্যস্ত যে, তাদের সেই ভয়ঙ্কর দিন ধ্বংসের এবং ঈশ্বরের ন্যায় বিচারের দিন সম্পর্কে কোন খেয়ালই নেই। আর এই বিষয় গুলো সেই সময় পর্যন্ত চলতে থাকবে যতক্ষণ না প্রভুপরমেশ্বর তার ক্রোধ নিয়ে পুররায় পৃথিবীতে না আসা পর্যন্ত। তখন মানুষ হায় হায় করবে আর অনুতাপ করবে কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যাবে।

নোহের সময়ঃ সেই সময়ে লোকেরা এটা মানতে তৈরি ছিলো না বা মানতে চাচ্ছিলো না যে, তারা কত ভয়ানক বিপদের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। ঐ লোক গুলো পুরো দমে পাপ করে যাচ্ছিলো বিনাবিচার বিনাচেতনায় যে, তাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।

বর্তমান সময়ঃ আজকের দিনেও ঐ লোকদের সাথে আমাদের কোন পার্থক্য নেই, এমন কি যারা বাইবেল জানে এবং যাদের বার বার প্রচার আর চেতনা দেওয়া হচ্ছে তারাও মনে করছে এখোনো অনেক দিন, অনেক সময় বাকি আছে। আর কতক লোক তো এটা বিশ্বাস করতেি রাজি না যে প্রভু পরমেশ্বর তার ক্রোধ নিয়ে এই পৃথিবীতে আসবে এবং এই পৃথিবী বিনাশ করবে। সেই দিক থেকে আমরা নোহের দিনের থেকে কোন আলাদা জীবন যাপন করছিনা একদম একই জীবন যাপন করছি।

নোহের সময়ঃ নোহের প্রচার শুনে তাকে মূর্খ মনে করতে লাগলো সবাই, কারণ সে এতো বড় জাহাজ বানাচ্ছে আর বলে বেড়াচ্ছে যে, “ভারী ভয়ানক ঝড় আসছে ভারী ভয়ানক প্লাবন আসছে”।

বর্তমান সময়ঃ আজকের দিনে যে লোক গুলো বাইবেল হতে সত্য প্রচার করে, লোকদের চেতনা দেয় আর সেই ভয়ানক দিন হতে যেন বাঁচতে পারে এই সুসমাচার প্রচার করে; লোকেরা তাদেরকেই মূর্খ বলে। তাদের নিয়ে মজা করে হাসি ঠাট্টা করে আর ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অস্বীকার করে।

“কারণ সেই ক্রুশের কথা, যাহারা বিনাশ পাইতেছে, তাহাদের কাছে মূর্খতা, কিন্তু পরিত্রাণ পাইতেছি যে আমরা, আমাদের কাছে তাহা ঈশ্বরের পরাক্রমস্বরূপ”। #১করিন্থীয় ১:১৮

প্রিয় ভাই-বোনেরা পাপের দন্ড খুবই ভয়াবহ আর কঠিন। নোহের সময়ে কোন জল প্লাবনের সম্ভাবনা ছিল না কিন্তু যখন প্লাবন হলো তখন সবাইকে নাশ করে দিলো। সেভাবে আমাদের জীবনে ভয়াবহ ঈশ্বরের ক্রোধের দিন আসতেছে কারণ আমাদের পাপের পাত্র পুরোপুরি ভরে গেছে যা প্রমাণ করে যে, এখনি সেই প্রলয় চলে আসবে আমাদের উপর। আজকের দিনে আমরা যে সময় পার করছি এখোনো প্রভু পরমেশ্বরের অনুগ্রহে আর দয়ার আমরা তার কাছে আসতে পারি কারণ তিনি আজও আমাদের অনুগ্রহের হাত বাড়িয়ে আছেন।

তবে সেই দিন আর বাকী নেই, যখন প্রভু পরমেশ্বর তার অনুগ্রহ বন্ধ করে দিবে আর জগত সংসার তার ন্যায় বিচারের সামনে দাঁড়াবে। আর সেই সময়ে মানুষের উপর আর কোন দয়া মায়া করা হবে না, আসবে তাদের উপর প্রভু পরমেশ্বরের ক্রোধ আর অনন্ত বিনাশ। ঐ দিন এমন এক ভয়ানক দিনের মত হবে আর দয়া অনুগ্রহ স্বপ্নের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে এবং কেউ প্রভু পরমেশ্বরে অনুগ্রহ পাবে না। একবার চিন্তা করে দেখুন সেই ভয়ানক দিনের কথা-

“আর পৃথিবীর রাজারা ও মহতেরা ও সহস্রপতিগণ ও ধনবানেরা ও বিক্রমিবর্গ এবং সমস্ত দাস ও স্বাধীন লোক গুহাতে ও পর্ব্বতীয় শৈলে আপনাদিগকে লুকাইল, আর পর্ব্বত ও শৈল সকলকে কহিতে লাগিল, আমাদের উপরে পতিত হও, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার সম্মুখ হইতে এবং মেষশাবকের ক্রোধ হইতে আমাদিগকে লুকাইয়া রাখ; কেননা তাঁহাদের ক্রোধের মহাদিন আসিয়া পড়িল, আর কে দাঁড়াইতে পারে?” #প্রকাশিতবাক্য ৬:১৫-১৭

হতে পারে অনেক প্রচারক- আপনার কাছে সেসব মিথ্যা প্রচার করছে যা আপনাকে/আপনাদের মনকে আনন্দিত করবে অথবা আপনাকে চেতনা দান করে সত্যের পথে পরিচালিত করবে। এমনো হতে পারে ঘরবাড়ি, গাড়ী সম্পদের লোভ দিয়ে তাদের চার্চে অন্তভুক্ত করতে পারে অথবা বাইবেলের জ্ঞান দিয়ে যা হতে পারে আপনার ভাল লাগে বা খারাপ লাগে তা দিয়ে আপনাকে স্বর্গ রাজ্যের জন্য তৈরি করতে পারে। এই কথাটি সব সময় মনে রাখবেন, যে মিথ্যা আপনার মনকে মিথ্যা আনন্দ দেয় তার থেকেও যে সত্য, আপনার মনকে সঠিক চেতনা দেয় তা উত্তম।

“মন ফিরাও, কেননা স্বর্গ-রাজ্য সন্নিকট হইল” #মথি ৪:১৭

#বিঃদ্রঃ প্রভু যীশুই নূহের নৌকা অর্থাৎ মহামারি হতে উদ্ধারকর্তা।

    3850
    0